আগরতলা, ৯ জুলাই : দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেও ত্রিপুরায় ধর্মঘটের তেমন কোন প্রভাব নেই। অফিস কাছারি, স্কুল কলেজ খোলা। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক। দোকানপাট সহ সমস্ত শপিংমল খোলা। তবে লাগাতার বৃষ্টিতে জনজীবনে ছন্দপতন ঘটেছে। রাজ্যের প্রতিটি মহকুমা থেকে প্রাপ্ত সংবাদে জানা গিয়েছে বামপন্থী সহ একাধিক ট্রেড ইউনিয়নের ডাকা বুধবারের ধর্মঘটের কোন প্রভাব দেখা যায়নি।
কর্মনাশা ধর্মঘট প্রত্যাখ্যান করেছেন জনগণ। দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের বিরুদ্ধে পিকেটিংয়ে নেমে জিবি বাজার এলাকায় এমনটাই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য সহ সভানেত্রী পাপিয়া দত্ত। তথাকথিত ধর্মঘটের দিন আর দশটা দিনের মতই কর্মব্যস্ত ছিল রাজধানীর জিবি বাজার, নাগেরজলা ইত্যাদি এলাকা। হাট বাজার স্কুল কলেজ অফিস আদালত সর্বত্রই জনমনে কর্মব্যস্ততা পরিলক্ষিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রমিক কোড প্রত্যাহারের দাবিতে বুধবার দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে দশটি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন। এর মধ্যে রয়েছে সিআইটিইউ, আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি প্রভৃতি সংগঠনগুলিও। এই ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে গত কদিন ধরে রাজ্যেও ধর্মঘটের পক্ষে এবং বিপক্ষে তুমুল প্রচার চলছিল।
সিআইটিইউ'র পক্ষ থেকে ধর্মঘটের সমর্থনে ব্যাপক প্রচার চালানো হয়েছিল। কিন্তু ধর্মঘটের দিন দেখা গেল রাজ্যে কোন প্রভাব পড়েনি। রাজ্যের সর্বত্রই ছিল স্বাভাবিক এবং কর্মব্যস্ততা।এদিন ধর্মঘটের সমর্থনে মাঠে নামতে দেখা গেল না সিআইটিইউকে।
অপরদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করেই ধর্মঘটের বিরোধীতায় মাঠে নামল বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। এদিন জিবি বাজার এলাকায় ধর্মঘটের বিরোধীতা করে পিকেটিং করতে দেখা গেল বিজেপি রাজ্য সহ-সভানেত্রী পাপিয়া দত্তকে। তাঁর সাথে ছিলেন বিজেপির ছয় আগরতলা মন্ডল কমিটি, যুব মোর্চা এবং মহিলা মোর্চার কর্মী সমর্থকরা।
জিবি বাজার এলাকায় প্রদেশ বিজেপি সহ-সভানেত্রী পাপিয়া দত্ত জানান, রাজ্যে ধর্মঘটের কোন প্রভাব নেই। মানুষ কর্মনাশা ধর্মঘটকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। সর্বত্রই স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে। তিনি জানান, বাম দলগুলি সব সময়ই উন্নয়ন বিমুখ।মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহার নেতৃত্বাধীন সরকার যখন রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন গতিময় করে তুলেছে তখন এর থেকে মানুষের মন ঘুরিয়ে দিতেই এই ধরনের কর্মনাশা ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মানুষ এই ডাকে সাড়া দেননি। এর মানে মানুষ বামেদের সঙ্গে নেই। বিষয়টি নিয়ে বামেদের চিন্তন বৈঠক করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।।
বুধবার রাজ্যের হাট বাজারগুলি ছিল আর দশটা দিনের মতই স্বাভাবিক। এদিন রাজধানীর লেক চৌমুহনী বাজার থেকে বাজার সেরে বাড়ি ফেরার পথে এক নাগরিক জানান, দোকানপাট সব খোলা ছিল। বাজারে ক্রেতাদের ভিড় পরিলক্ষিত হয়েছে। তিনি জানান, ধর্মঘট ডাকলেই হয় না এটা সকলের বোঝা উচিত।
বুধবার বৃষ্টিস্নাত দিনেও রাজধানীর নাগেরজলা এলাকা ছিল প্রাণচঞ্চল। পাশের বটতলা বাজারেও মানুষের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। নাগেরজলা বাসস্ট্যান্ডের এক মোটর শ্রমিক জানান, অন্যান্য দিনের মতই নাগেরজলা থেকে বাসগুলি যাত্রী বোঝাই হয়ে গন্তব্যস্থলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। মানুষ কর্মনাশা ধর্মঘট প্রত্যাখ্যান করেছেন। এই ধরনের ধর্মঘট মোটর শ্রমিকরা চান না বলে জানান তিনি।
বুধবার রাজধানীতে স্কুল কলেজ অফিস আদালতেও উপস্থিতির হার ছিল স্বাভাবিক। রাস্তাঘাটে যানবাহনগুলির উপস্থিতিও ছিল অন্যান্য দিনের মতই স্বাভাবিক। ধর্মঘটের বিন্দুমাত্র প্রভাব এদিন পরিলক্ষিত হল না রাজধানী আগরতলা সহ রাজ্যের কোথাও।