দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: ভূত চতুর্দশীর দিনে ১৪টি প্রদীপ জ্বালানোর একটি বিশেষ প্রথা প্রচলিত, যা শাস্ত্র ও লোকবিশ্বাস অনুযায়ী চতুর্দশ পুরুষ—অর্থাৎ ১৪ প্রজন্মের পূর্বপুরুষদের পথ প্রদর্শন ও অশুভ শক্তি দূর করার প্রতীক। এই প্রদীপগুলো বাড়ির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপন করার নিয়ম রয়েছে।
শাস্ত্রীয় ও ঐতিহ্যগত নিয়ম অনুযায়ী ১৪টি প্রদীপ রাখার স্থানগুলি হল—
১. ঠাকুর ঘর (পূজা স্থান): একটি প্রদীপ ঠাকুর বা দেবতার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করে রাখা উচিত। এটি দেব-দেবীর আশীর্বাদ ও শুভ শক্তিকে আকর্ষণ করে।
২. তুলসী মঞ্চ বা তুলসী গাছ: একটি প্রদীপ তুলসী মঞ্চে দেওয়া আবশ্যক। তুলসী দেবী লক্ষ্মীর প্রতীক, তাই এখানে প্রদীপ দিলে সংসারে সমৃদ্ধি আসে।
৩. সদর দরজা বা প্রবেশ পথ: বাড়ির মূল দরজার দু'পাশে দুটি প্রদীপ রাখতে হয়। এই প্রদীপগুলি অশুভ শক্তিকে ঘরে প্রবেশ করতে বাধা দেয় এবং পূর্বপুরুষদের আত্মাদের পথ দেখায়। অনেকেই এই প্রদীপে একটি করে লবঙ্গ দিয়ে দেন।
৪. জলের স্থান (কলতলা/জলের পাত্রের কাছে): যেখানে জলের ব্যবস্থা থাকে, যেমন কলতলা বা বাড়ির অভ্যন্তরে জলের পাত্রের কাছে একটি প্রদীপ রাখা উচিত।
৫. রান্নাঘর/উনুনের কাছে: ঘরের রান্নাঘরে বা মাটির উনুন থাকলে সেখানে একটি প্রদীপ দেওয়া হয়। এটি অন্নপূর্ণা দেবীর আশীর্বাদ লাভের জন্য এবং গৃহে খাদ্যের অভাব দূর করার প্রতীক।
৬. ছাদ/বারান্দা/উঠোন: বাড়ির সবচেয়ে উঁচু স্থান যেমন ছাদ বা বারান্দায় কমপক্ষে একটি প্রদীপ দেওয়া হয়। এই প্রদীপ দূর থেকে পথ প্রদর্শক হিসেবে কাজ করে।
৭. দক্ষিণ দিক (যমের উদ্দেশ্যে): একটি বিশেষ প্রদীপ দক্ষিণ দিকে রাখা অত্যন্ত জরুরি। এটি যমরাজের উদ্দেশ্যে নিবেদন করা হয়। বিশ্বাস করা হয়, এই প্রদীপ জ্বালানোর ফলে পরিবার অকালমৃত্যু বা অমঙ্গল থেকে সুরক্ষিত থাকে। এটি দীর্ঘায়ু এবং মঙ্গলের জন্য দেওয়া হয়।
৮. শস্যের ভান্ডার বা ভাঁড়ার ঘর: ধন-সম্পদ ও শস্যের ভান্ডার সুরক্ষিত রাখার জন্য সেখানে একটি প্রদীপ রাখা যেতে পারে।
৯. বাড়ির চারকোণ: বাকি প্রদীপগুলি সাধারণত ঘরের এবং উঠোনের বাকি কোণগুলিতে রাখা হয়, যাতে বাড়ির কোনও অংশ অন্ধকারে না থাকে এবং সমস্ত নেতিবাচক শক্তি দূর হয়।