দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ- মসলিন ও নীলচাষ ছিল বাংলার বস্ত্রশিল্পের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র। জগৎজোড়া নাম ছিল বাংলার এই ধরনের বস্ত্রসম্ভারের। কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী হয়নি কোনওটাই। ব্রিটিশদের অত্যাচারে এই দুই শিল্পই মুছে যায় বাংলার মাটি থেকে। নিজেদের বস্ত্রশিল্পকে জোরদার করে তুলতে বাংলা থেকে অল্প দামে কাঁচামাল আমদানি করত ইংরেজরা। এভাবে কম দামে কাঁচামাল আমদানির কারণেই তীব্র শোষণের মুখে পড়ে কৃষকরা। নীল চাষ বন্ধ হয়ে যায় ধীরে ধীরে। তাঁতির বাড়ি মসলিনের জগৎবিখ্যাত কাপড় তৈরিও বন্ধ হয়ে যায় ধীরে ধীরে। ওদিকে এমন অসাধারণ ঐশ্বর্যের মৃতদেহে ভর করে ইংল্যান্ডে শুরু হল শিল্পবিপ্লব। এই শিল্প বিপ্লবের পর বাংলায় কেটে গিয়েছে প্রায় আড়াইশো বছর। আড়াইশো বছর পর ২০২৪ সালে মসলিন ও নীল চাষ ফিরে আসছে শহরের বুকে। থিমের রূপে। দমদম তরুণ দলের পুজোয় (Dum Dum Tarun Dal Puja)।
পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ প্রতীক্ষণ ঘোষ জানান, ‘বাংলার এক সময় লাভজনক শিল্প ছিল মসলিন ও নীল চাষ। ব্রিটিশরা আমাদের এই শিল্পকে ধ্বংস করেছে। এবার পুজোয় থিম ‘সাদা-নীল’-এর মাধ্যমে এই শিল্পকে তুলে ধরা হচ্ছে।’ মসলিনের বুনন শেখানো হবে মণ্ডপে। সেজন্য বর্ধমানের কাটোয়া থেকে তিন তন্তুজ শিল্পীকে নিয়ে আসা হচ্ছে, যাঁরা পুজোর কদিন মণ্ডপে বসে মসলিন বুননশৈলী দেখাবেন। মণ্ডপে মসলিনের কাজের প্রদর্শনীও দেখতে পাবেন দর্শকরা।জোর কদমে মণ্ডপসজ্জার কাজ চলছে। এখানে গোটা মণ্ডপটা সেজে উঠছে নীল-সাদায়। মণ্ডপসজ্জায় থাকছে মসলিন। প্রতিমায়ও থাকছে নীল-সাদার ছোঁয়া। পুজো আয়োজকদের কথায়, আর জি কর কাণ্ডের পর অনেকেই উৎসব বন্ধ রাখার কথা বলছেন। অথচ এই উৎসবের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে বহু মানুষের রুজি রুটি। তিনমাস ধরে মণ্ডপ তৈরির কাজ করে থাকেন কর্মীরা। এখান থেকে উপার্জিত অর্থ নিয়ে গেলে তাঁদের পরিবারের পুজো হয়।