Festival and celebrations

1 month ago

Durga Puja 2024: নীলকণ্ঠ পাখি উড়ে গিয়ে কৈলাসে মায়ের বিদায়ের খবর দেয়! জানেন কোন বাড়িতে এই রীতিতে হয় মা দুর্গার বিদায়?

Shobhabazar Rajbari's Durga Puja
Shobhabazar Rajbari's Durga Puja

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ- মা আসার অপেক্ষায় পথ চেয়ে থাকে আপামর বঙ্গবাসী। আর মাত্র ১১ দিন পরেই হবে সেই অপেক্ষার অবসান। ছেলেমেয়েদের নিয়ে কৈলাস থেকে মর্তে আসবেন মা দুর্গা। তার জন্য সাজ-সাজ রব মর্তজুড়ে। সাথে আছে নানা রকমের রীতি। আর সেই নানা রীতির ও ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে বনেদি বাড়িগুলি।

তেমনি বহু বছরের নানা ঘটনার সাক্ষী নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক বাড়ি হল শোভাবাজার রাজবাড়ি। প্রায় ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধের পর ইংরেজদের জয় ঘোষিত হলে লর্ড ক্লাইভকে খুশি করতে রাজা নবকৃষ্ণ দেব এই দুর্গাপুজোর প্রচলন করেন। তবে এই বাড়িটির প্রথম মালিক ছিলেন শোভারাম বসাক। পরবর্তীতে তার কাছ থেকে রাজা এই বাড়িতে কিনে নিজের মতো করে নাচঘর, দেওয়ানখানা, নৈশভোজখানা সাজিয়ে তোলেন।

এই রাজাবাড়ির ইতিহাস বহু পুরনো। শোনা যায়, লর্ড ক্লাইভ হাতির পিঠে চেপে এই বাড়ির পুজো দেখতে আসতেন। শুধু ইংরেজরাই নন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে শ্রীরামকৃষ্ণ, বিদ্যাসাগর, গান্ধীজীর মত মানুষজনের যাতায়াত ছিল এই বাড়িতে।

রাজা নবকৃষ্ণ দেবের ছিলেন সাত রানি। তবে ছয় রানি ছিল নিঃসন্তান। তাই তিনি তাঁর দাদার ছেলে গোপীমোহনকে দত্তক নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ১৭৮২ সালে রাজার সপ্তম স্ত্রীর গর্ভে জন্ম নেয় রাজকৃষ্ণ দেব। যদিও এরপরেই রাজবাড়ি দুটি অংশে ভাগ হয়ে গিয়েচিল।

এই রাজবাড়িতে সাবেকি একচালা মূর্তিতে দেবীর আরাধনা করা হয়। বহু পুরনো প্রথা মেনে আজও পুজো করা হয়। দেবীর বোধন হয় কৃষ্ণপক্ষের নবমী তিথিতে। রথের দিন হয় কাঠামো পুজো। পৌরাণিক ঘোটক আকৃতির সিংহ দেখতে পাওয়া যায়। রাজবাড়ির পুজোয় অন্নভোগ হয় না। শুধু মিষ্টি ভোগ উৎসর্গ করা হয়। নারকেল ও ক্ষীর দিয়ে এক রকমের মিষ্টি এই বাড়িতে তৈরি করা হয়, যার নাম ‘আদা’।

তবে প্রাচীনকাল থেকে ব্রিটিশদের মনোরঞ্জনের জন্য পুজোর ৩ দিন গভীর রাত পর্যন্ত খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা চলত, যা আজও বর্তমানেও রয়েছে। শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজোর অন্যতম আকর্ষণ হল ভোরের মঙ্গল আরতি এবং সন্ধ্যায় মাখন মিষ্টি ভোগ এবং দশমীতে কনকাঞ্জলি। আর এই বিদায়বেলাতেও রয়েছে এক আলাদা রীতি। কথিত আছে, নীলকন্ঠ পাখি নাকি কৈলাসে মহাদেবকে মায়ের রওনা বার্তা পৌঁছে দেয়। তাই এই পাখি ওড়ানোর প্রচলন রয়েছে রাজাবড়িতে। অতীতে প্রত্যেক বছর বিসর্জনের দিন আরামবাগ থেকে নিয়ে আসা হত নীলকণ্ঠ পাখি। এরপরই শোভাবাজার রাজবাড়িতে বিসর্জন হত। তবে বর্তমানে এই রীতি আজও রয়েছে। কিন্তু সোলার নীলকণ্ঠ পাখি তৈরি করে তারপর ওড়ানো হয়। এরপরই প্রতিমা বিসর্জন হয়।

You might also like!