দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ- মা আসছে, কাশফুল আর আকাশে
পেজা তুলো যেন সেই কথাই জানান দিচ্ছে। মা দুর্গা ছেলেমেয়েদের নিয়ে বাপের বাড়ি ঘুরতে
এলেই খুশিতে মেতে ওঠে মর্তলোক। তাই মাকে আবাহন জানাতে বনেদি থেকে বারোয়ারি, সবেতেই
যেন চূড়ান্ত কর্মব্যস্ততা। তেমনি এক বনেদি বাড়িতে রয়েছে বাসি ফুলে পুজোর রীতি।
১৫২০ খিস্টাব্ধ চৌতন্য চরণ ঘোষ তিনি হুগলি জেলার আকনা থেকে এই খানে আসেন ব্রম্ভডাঙ্গা যা পরে রানাঘাট নাম হয় সেখানে মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন এবং দুর্গা পুজোর সূচনা করেন।চৌতন্য চরণ ঘোষ নিঃসন্তান ছিলেন। তিনি মারা যাবার পর থেকে তার ছোট ভাই মকারন্ধ ঘোষের বংশধররা দুর্গা পুজো করে আসছেন। বর্তমানে ২৯তম বংশ পরম্পরায় এই পুজো হচ্ছে।
এই বংশের ২৯তম পুরুষ রণজিৎ ঘোষ বলেন, দুর্গা পুজো প্রথম শুরুর
যে মাটি দিয়ে পাটা তৈরি হয়েছিল সেই মাটি দিয়ে আজও পাটা তৈরি হয়ে আসছে। ওই মাটি
তুলে রাখা হয় কিছুটা। সেই মাটি দিয়ে নতুন মাটি দিয়ে পাটা তৈরি হয় বছরের পর বছর।
এই ভাবে হয়ে আসছে দেবী মূর্তি। প্রায় ৫০৪ বছর ধরে হয়ে আসছে এই পূজো। একটা সময় ৫১টি
পাঠা ও মোষ বলি হতো ১৯৩৪সালে পাঠা বলি বন্ধ হয়ে যায় স্বপ্নাদেশে এবং ঘোষ বংশের রামগোপাল
ঘোষ মারা যান। ক্ষয় ক্ষতি হয়, তার পর থেকে আর বলি হয়নি বন্ধ হয়ে যায়। পঞ্চমীতে
বোধন শুরু হয় ষষ্ঠীতে নয়। তারপর অধিবাসের সময় রক্ষা প্রদীপ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
প্রদীপ জ্বালান এই বংশের পুরুষরা। সেই প্রদীপ নেবে না। বিসর্জন হয়ে গেলে পাঠ ভেঙে
সেই রক্ষা প্রদীপের থেকে প্রদীপ জ্বালিয়ে বাড়ির বিভিন্ন ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় । সেই
প্রদীপের আলোতে ১০৮বার দুর্গা নাম লেখা হয়। কলাপাতার ওপর লেখা হয়। তারপর চূর্ণী নদীতে
বিসর্জন দেওয়া হয় নয় তো তুলসী তলায় দেওয়া হয়।
এরপর মুড়ি মুড়কি দেওয়া হয়। নবমীর দিন থোর ও মোচার ভোগ দেওয়া হয়। পাশাপাশি কাদা খেলা হয়। রান্না করা ভোগ অষ্টমী দিন দেওয়া হয়। আর অন্য দিন গুলি কাঁচা ভোগ দেওয়া হয়। মশলা, চাল, দেওয়া হয়। দশমীর দিন সুক্তো, মাছ, ভাত খাইয়ে বরণ করা হয়। ওই দিন টাটকা ফুলে পুজো হয় না। বাসি ফুলে পুজো করাই এই বাড়ির রীতি।