
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক:অভিনেত্রী সেলিনা জেটলি তাঁর স্বামী পিটার হগের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। যদিও গত এক বছর ধরে তিনি সিনেপর্দা এবং লাইমলাইটের বাইরে ছিলেন, তবুও একসময়কার এই ‘বোল্ড’ বলিউড নায়িকাকে নিয়ে অনুরাগীদের উৎসাহ এতটুকুও কমেনি। প্রেমের টানে অস্ট্রেলিয়া নিবাসী হোটেল ব্যবসায়ী পিটারের সঙ্গে ২০১১ সালে সেলিনা বৈবাহিক জীবন শুরু করেছিলেন। তাঁদের তিনটি সন্তানও রয়েছে। তবে সেলিনার অভিযোগ হলো, “স্বামী হাতে তিনি লাগাতার মারধরের শিকার।” এর পাশাপাশি, মঙ্গলবার তিনি সামাজিক মাধ্যমে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদের ঘোষণাও করে দেন।
বলিউড অভিনেত্রীর অভিযোগ, পিটার অত্যন্ত নিষ্ঠুর। সবসময়ে তাঁকে নিয়ন্ত্রণ করেন। এমনকী স্বামীর হাতে গার্হস্থ্য হিংসার শিকারও হতে হচ্ছে তাঁকে। শুধু তাই নয়। অভিযোগনামায় সেলিনার দাবি, “তিন সন্তান বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছে বাবার কাছে। সন্তানদের সঙ্গে সমস্তরকম যোগাযোগ ছিন্ন করতে বাধ্য করেছেন পিটার।” মৌখিকভাবে যাতে সন্তানদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, সেই আবেদনও জানিয়েছেন অভিনেত্রী। বলিউড মাধ্যম সূত্রে খবর, সেলিনা জেটলির আবেদনের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই মুম্বই আদালতের তরফে পিটার হগকে আইনি নোটিস পাঠানো হয়োছে। সংশ্লিষ্ট মামলার আগামী শুনানি ১২ ডিসেম্বর।
সেলিনা এও অভিযোগ করেছেন যে, পিটার হগ পুরোপুরি তাঁর কেরিয়ার এবং অর্থনৈতিক স্বাধীনতাকে ‘পঙ্গু’ করে দিয়েছেন। স্বামীকে ‘নার্সিসিস্টিক’ আখ্যা দিয়ে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, “স্ত্রী এবং তিন সন্তানের প্রতি পিটার একেবারেই সহানুভূতিশীল নয়।” প্রসঙ্গত ২০১১ সালে অস্ট্রেলিয়ায় পিটার হগকে বিয়ে করেন সেলিনা জেটলি। ২০১২ সালের মার্চ মাসে যমজ পুত্র সন্তানের জন্ম দেন সেলিনা। পরবর্তীতে ২০১৭ সালেও আরও দুটি যমজ পুত্রসন্তান হয় তাঁর। যদিও বিরল হৃদরোগের জন্য তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়। সেই শোক যে আজও কুড়ে কুড়ে খায় অভিনেত্রীকে, সেকথা একাধিকবার জানিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি আরবে আটকে থাকা ভাইয়ের জন্যেও দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সেলিনা। এবার স্বামীর বিরুদ্ধে গার্হ্যস্থ হিংসার অভিযোগে মুম্বই আদালতের মামলা দায়ের করলেন অভিনেত্রী। নিজেকে ‘জওয়ান কন্যা’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিবাহ বিচ্ছেদের কথা ঘোষণা করে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, জীবনে যাবতীয় ঝড়ঝাপটা এলেও এত সহজে দমে যাওয়ার পাত্রী নন তিনি।
সেলিনার অভিযোগ প্রসঙ্গে অভিনেত্রীর আইনজীবী জানান, সেলিনা খুব কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। শারীরিক নির্যাতন চলছে তাঁর উপর। তাঁর আইনজীবী বলেন, ‘মিস্টার হাগ মেজাজ হারিয়ে ফেলতেন, জিনিসপত্র ছুঁড়ে মারতেন, জিনিসপত্র ভাঙতেন। এবং মাঝে মাঝে সেলিনাকে মারধরও করতেন।’
অভিনেত্রীর আইনজীবী আরও বলেন, ‘২০১৭ সালে সেলিনা তাঁর সন্তান এবং বাবা-মাকে হারান। তখন পিটার তাঁকে মানসিক ভাবে নির্যাতন করতে শুরু করেন এবং তাঁকে তাঁর সন্তানের থেকে আলাদা করার চেষ্টা করেন। তা ছাড়া, তিনি সেলিনাকে অস্ট্রিয়ার একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিয়ে যান। যেখানে তিনি কাউকে চিনতেন না এবং কারও সঙ্গে যোগাযোগ করাও সম্ভব ছিল না। এই বিষয়গুলো দীর্ঘ দিন ধরে চলার পরে সেলিনা সিদ্ধান্ত নেন ডিভোর্সের।’
একইসঙ্গে সেলিনার আইনজীবী উল্লেখ করেছেন, গোটা বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। তাই এর থেকে বেশি কিছু বলতে পারবেন না এই মুহূর্তে। সেলিনা তাঁর নিজের সঞ্চয় থেকে সব খরচ চালান। আইনজীবী আরও জানিয়েছেন, পিটার সেলিনার সন্তানদের সঙ্গেও বিনা অনুমতিতে যোগাযোগ করতে পারবেন না। তবে সেলিনার আগে ২০২৫ সালের অগস্টে পিটার অস্ট্রিয়ায় ডিভোর্সের আবেদন করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
