দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ ত্রিপুরায় ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট আজ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ৮ আগস্ট ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি ১১ জুলাই জারি হবে। সচিবালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য নির্বাচনী আধিকারিক শরদিন্দু চৌধুরী এ কথা জানান।
গোটা নির্বাচন নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে তিনি জানান, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ১৮ জুলাই। মনোনয়নপত্রগুলি পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হবে ১৯ জুলাই। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ২২ জুলাই। আগামী ৮ আগস্ট সকাল ৭-টা থেকে বিকাল ৪-টা পর্যন্ত ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। ভোটগণনা হবে আগামী ১২ আগস্ট। সকাল ৮-টা থেকে ভোট গণনা শুরু হবে। ১৭ আগস্ট-এর মধ্যে সমস্ত নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানান, সরকারি ছুটির দিন ছাড়া ১১ জুলাই থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৩-টা পর্যন্ত রিটার্নিং অফিসারদের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। ভোট নেওয়া হবে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে। একজন ভোটার তিনটি ভোট প্রদান করবেন। এর জন্য তিনটি আলাদা রঙের ব্যালট পেপার থাকবে।
গ্রাম পঞ্চায়েতের জন্য সাদা রঙের, পঞ্চায়েত সমিতির জন্য গোলাপী রঙের এবং জেলা পরিষদের জন্য সবুজ রঙের ব্যালট পেপার থাকবে। ৮ জেলার জেলাশাসক ও সমাহর্তা জেলা নির্বাচন আধিকারিক (ডিইও)-এর দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি জেলা পরিষদের আসনগুলির রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন। ৩৫টি ব্লকের বিডিও গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির আসনগুলির রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন।
রাজ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরও জানান, রাজ্যে ৬০৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩,৫১৭টি কেন্দ্রের ৬,৩৭০টি আসন, ৩৫টি পঞ্চায়েত সমিতির ৪২৩টি কেন্দ্রের ৪২৩টি আসন এবং আটটি জেলা পরিষদের ১১৬টি কেন্দ্রের ১১৬টি আসনের জন্য ভোট নেওয়া হবে।
এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুসারে ১২,৯৪,১৫৩ জন তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬,৫৮,৪৪৫, মহিলা ভোটার ৬,৩৫,৬৯৭ জন এবং অন্যান্য ১১ জন। সচিত্র পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভোটাররা তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। তবে কোনও ভোটার যাতে ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত না হন সেই লক্ষ্যে ভোটার তালিকায় নাম থাকা কোনও ব্যক্তি বিকল্প নথি দেখিয়েও ভোট দিতে পারবেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানান, এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে মোট ভোটগ্রহণ কেন্দ্র খোলা হচ্ছে ২,৬৫০টি। এর মধ্যে উত্তর ত্রিপুরায় ৩৪৭টি, উনকোটি জেলায় ২৩৪টি, ধলাই জেলায় ১৬৮টি, খোয়াই জেলায় ২৪২টি, পশ্চিম জেলায় ৪৫১টি, সিপাহিজলা জেলায় ৫৩৭টি, গোমতি জেলায় ২৭৯টি এবং দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় ৩৯২টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র খোলা হবে।
রাজ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানান, পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যে সব জায়গায় পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে সেখানে আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর হয়েছে। নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য জেলা নির্বাচন আধিকারিক, রিটার্নিং অফিসারগণ সহ সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলির সাথে বৈঠক করা হয়েছে। তিনি সমস্ত নির্বাচনী প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য পুলিশের আইজি এল ডার্লং জানান, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্স (সিএপিএফ) সহ ত্রিপুরা পুলিশ ও টিএসআর বাহিনী মোতায়েনের ব্যবস্থা করা হবে। সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সচিব অসিতকুমার দাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।