দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ পাহাড়ে ঘুরতে গিয়ে নানা সমস্যায় জেরবার পর্যটকেরা। কারও অভিযোগ, তিন মাস আগে বুকিং করেও হোটেলে ঢোকার সময়ে জানতে পেরেছেন, তাঁর নামে কোনও ঘর বুক করাই হয়নি। কেউ আবার অভিযোগ করেছেন, বুক করার পরেও সময়মতো আসেননি গাড়িচালক। কারও অভিযোগ, বুকিংয়ের সময়ে যে টাকার কথা বলা হয়েছিল, ফেরার সময়ে তার চেয়ে বেশি দাবি করা হয়েছে।
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে সকালে গেলেই চোখে পড়ছে, মাথায় হাত দিয়ে বসে রয়েছেন কোনও না কোনও পর্যটক পরিবার। বুকিং করার পরেও গাড়ি আসেনি। খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন, সংস্থাটিই ভুয়ো। অথচ তাঁদের সব টাকা মিটিয়ে দিয়েছেন পর্যটক পরিবার। সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়ে গিয়েছে এমন নানা অভিযোগে।
গরমের মরসুমে পাহাড়ে পর্যটকদের ভিড় বেড়েই চলেছে। দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং কিংবা মিরিকে কোনও হোটেল ফাঁকা নেই। আগাম বুকিং করে না-আসায় রাতে দার্জিলিং রেল স্টেশনে রাত কাটানোর অভিজ্ঞতাও হয়েছে অনেকের। সিকিমের পরিস্থিতিও একই। প্রতারণা ঠেকাতে এ বার হস্তক্ষেপ করল সিকিম রাজ্য সরকার।
সোমবার সিকিমের পর্যটন ও সিভিল অ্যাভিয়েশন দপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়েছে, কেবলমাত্র তাঁদের অনুমোদিত সংস্থার মাধ্যমেই যেন হোটেল কিংবা গাড়ি বুক করা হয়। www.sikkimtourism.gov.in ক্লিক করে সংশ্লিষ্ট পর্যটন সংস্থা নথিভুক্ত কি না, তা যাচাই করে নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
সিকিম পর্যটন দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব বন্দনা রাই বলেন, ‘এ বার বহু অভিযোগ আসছে। বেশির ভাগই বুকিং সংক্রান্ত প্রতারণার অভিযোগ। সেই কারণেই নথিভুক্ত সংস্থার মাধ্যমে বুকিংয়ের পরামর্শ দিচ্ছি আমরা। এর ফলে পর্যটকেরাই হেনস্থা থেকে রেহাই পাবেন।’
উত্তরবঙ্গের অন্যতম পর্যটন সংস্থা হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সদস্যরা অবশ্য মনে করেন, শুধু বিজ্ঞপ্তি জারি করলেই পর্যটকদের হেনস্থা হওয়ার ঘটনা কমবে না। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘ভারতের যে কোনও সংস্থা সিকিমের কোনও পর্যটন সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে বুকিং নিতে পারে। সমস্যা অন্য জায়গায়। সিকিমে গাড়ি ভাড়ায় সরকার কোনও নীতি নির্ধারণ করছে না। গত অক্টোবরের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরে পরিকাঠামোর উন্নতি হচ্ছে না।’
সিকিম সরকারের এই সিদ্ধান্তে প্রতারণা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও বাইরের রাজ্যের পর্যটন ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়বেন বলে মনে করেন ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্র্যাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিসেয়শনের সম্পাদক দেবাশিস চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘সিকিম রাজ্য সরকারের উচিত, কেন্দ্রীয় পর্যটন দপ্তরের স্বীকৃত সংস্থা এবং বিভিন্ন রাজ্যের স্বীকৃত পর্যটন সংস্থাগুলিকেও এই তালিকায় যুক্ত করা। না-হলে এই সমস্যা মিটবে না।’