kolkata

2 hours ago

Mamata BAnerjee: মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বাংলাভাষীদের উপর অত্যাচার নিয়ে আলোচনা!

WB CM Mamata Banerjee
WB CM Mamata Banerjee

 

দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের নানা প্রান্তে বাংলাভাষীদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ সামনে এনে বিধানসভায় প্রস্তাব পেশ করেছেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় প্রস্তাবটি ইতিমধ্যেই গ্রহণ করেছেন। আগামীকাল এবং বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে বিধানসভায় দু’দিন ধরে প্রতিদিন দু’ঘণ্টা করে আলোচনা চলবে। ওই দু’দিন প্রশ্নোত্তর পর্ব থাকলেও ‘কলিং অ্যাটেনশন’ ও ‘মেনশন পর্ব’ স্থগিত থাকবে। বৃহস্পতিবার আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে, সেদিনই রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকও নির্ধারিত।

সোমবার বিধানসভায় কার্যবিবরণী কমিটির বৈঠক ছিল। ওই বৈঠক শেষে স্পিকার জানান, পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষীদের উপর রাজ্যের বাইরে নির্যাতন হচ্ছে। তা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে বসবাসকারী বাংলাভাষীরা অত্যন্ত উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তা নিয়ে আলোচনার জন্যই বিধানসভায় এই বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে। স্পিকার বিমান বলেন, “আমরা প্রত্যাশা করি, সব রাজনৈতিক দলের পরিষদীয় দল শান্তিপূর্ণ ভাবে এই আলোচনায় অংশগ্রহণ করবে। পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষীদের স্বার্থ জড়িত। এখানে রাজনীতির থেকে ভাষাসংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে তাঁরা কথা বলবেন, এটাই আমরা বিশ্বাস করি।”

বস্তুত, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাংলাভাষীদের উপর অত্যাচার এবং হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে। গত জুন মাসে বিধানসভার অধিবেশনের সময়েও এ নিয়ে বিজেপিকে দুষেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। ওই সময়ের মহারাষ্ট্রের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি অভিযোগ তুলেছিলেন, বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি তকমা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তার পর থেকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষীদের ভিন্‌রাজ্যে হেনস্থার অভিযোগ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি হয়েছে। কখনও মহারাষ্ট্রে, কখনও হরিয়ানায়, কখনও বা অন্য কোনও বিজেপিশাসিত রাজ্য থেকে এই ধরনের অভিযোগ উঠে এসেছে। পর পর এই ঘটনাগুলির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে সুর চড়িয়ে গিয়েছে তৃণমূলও।

সোমবার বিধানসভায় পেশ করা প্রস্তাবে শোভনদেব স্পষ্ট করে দিয়েছেন, বাংলা একটি সংবিধানস্বীকৃত ভাষা। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, দেশের মোট জনসংখ্যার ৮.০৩ শতাংশ মানুষই কথা বলেন বাংলায়। তাঁর বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা এবং অসমের বরাক উপত্যকার সরকারি ভাষা বাংলা। এ ছাড়া আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ, ঝাড়খণ্ড, বিহার, মেঘালয়, মিজ়োরাম, ওড়িশা, হরিয়ানা, রাজস্থান, দিল্লি, মহারাষ্ট্রেও প্রচুর বাংলাভাষী মানুষ বাস করেন। শোভনদেবের অভিযোগ, “বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষী মানুষদের উপর শারীরিক ভাবে আক্রমণ এবং মানসিক ভাবে নির্যাতন চালানো হচ্ছে এবং তাঁদের বিভিন্ন ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে।”বিধানসভায় পেশ করা প্রস্তাবে তিনি আরও লিখেছেন, “ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এই রাজ্য (পশ্চিমবঙ্গ) থেকে আগত পরিযায়ী শ্রমিকদের জোরপূর্বক আটকে রেখে তাদের পরিবারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ জরিমানা করা হচ্ছে অথবা ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে বলপূর্বক বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে।” নাম না-করে বিজেপিকেও নিশানা করেছেন শোভনদেব। তাঁর অভিযোগ, বাংলাভাষীদের উপর এই অমানবিক আচরণে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে মদত দিচ্ছে দেশের বৃত্তহম শাসকদল। বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে অভিহিত করা এবং সকল বাংলাভাষী মানুষকে বহিরাগত বলে চিহ্নিত করার চক্রান্ত চলছে বলেও অভিযোগ পরিষদীয় মন্ত্রীর।

এ প্রসঙ্গে স্পিকার বিমান বলেন, “শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। কী ভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে, তা তিনি বিস্তারিত ভাবে বলেছেন। তার প্রেক্ষিতে আলোচনা হবে। বাংলার বাইরে বাংলাভাষীদের উপর যে অত্যাচার ও আক্রমণ হচ্ছে, বাংলাতেও দু-একটা ঘটনা ঘটেছে। আমি দেখে অবাক হয়ে গেলাম! গতকালই আমি দেখছিলাম, এক জন হিন্দিভাষী লোক ব্যবসা করছেন। সেখানে তাঁর কর্মচারীরা বাংলায় বলেছেন, তাদের উপর তিনি নাকি অনেক বিদ্বেষপূর্ণ কথা বলেছেন। এটা বাঞ্ছনীয় নয়।”


You might also like!