International

3 months ago

Andal Biman city under water in rain:মরশুমের রেকর্ড বৃষ্টিতে জলের তলায় অন্ডাল বিমান নগরী, বাতিল উড়ান

Andal Biman city under water in rain
Andal Biman city under water in rain

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ অনাবৃষ্টিতে ঘুম উড়েছিল চাষীদের। এবার একনাগাড়ে বৃষ্টিতে ঘুম কাড়ল জেলাবাসীর। রাতভর বৃষ্টি। আর তাতেই বিপর্যস্ত খনি ও শিল্পাঞ্চল। রেকর্ড বৃষ্টিতে ভাঙল অন্ডালের উখড়ার ঐতিহ্যবাহি সুখো বাঁধ। আর তাতেই জলমগ্ন হল অন্ডাল বিমান নগরী। জলে থৈ থৈ বিমান বন্দর। বাতিল করা হল উড়ান। জলে ভাসল ইসিএলের কাজোড়া এরিয়া হাসপাতাল। ফুলে ওঠা তামলার জলে প্লাবিত হল দুর্গাপুর মেনগেট এলাকায়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নামল বিপর্যয় মোকাবিলা দল।

সপ্তাহখানেক আগেও তাবত বর্ধমান, বাঁকুড়া, হুগলি কৃষি অঞ্চলে জলের অভাবে থামকে ছিল আমন ধানের চাষ। ডিভিসির জল দেওয়ায় শুরু হয়েছিল চাষ। বৃহস্পতিবার রাতভর একনাগাড়ে বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত গোটা রাজ্য। সারা রাজ্যের সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হল অন্ডাল, পানাগড় ও দুর্গাপুরের বেশ কিছু এলাকায়। জানাগেছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত মাইথন জলাধারে ১১৩ মিলিমিটার, পাঞ্চেতে ১০৯ মিলিমিটার, বার্ণপুরে ১৪০ মিলিমিটার, দুর্গাপুরে ১৯১.৬ মিলিমিটার ও মরশুমের সর্ব্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে অন্ডালের কাজোড়া লছিপুরে ২১৫ মিলিমিটার। আর এই একনাগড়ে বৃষ্টির জেরে ফুলে উঠেছে, গাড়ুই, খুদিয়া, সিঙ্গারন, কুনুর, খড়ি, টুমনির মতো ছোটো নদীগুলি। ওই জলেই প্লাবিত হয়ে পড়েছে নদী তীরবর্তী জনপদ। অন্ডালের উখড়া সুখো বাঁধ। প্রায় ১০০ বিঘার ওই বাঁধ সেখানের জমিদারদের বলে পরিচিত এবং ওই বাঁধের জলেই চাষাবাদ থেকে আশপাশের গ্রামে একসময় নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে জলের ব্যাবহার হত। শুক্রবার জলের তোড়ে বাঁধের একটা অংশ ভেঙে পড়ে। ফলে প্লাবিত হয় গোটা এলাকা। বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বেরিয়ে পড়ে বহু মাছ। কয়েক লক্ষ টাকার মাছ বেরিয়ে পড়ে বলে অভিযোগ বাঁধের বরাত নেওয়া মাছ চাষীদের। আর ওই মাছ ধরতে হিড়িক পড়ে যায় আশপাশের বাসিন্দাদের। এদিকে সুখো বাঁধের প্রায় পাঁচশ মিটার নীচে অন্ডাল বিমানবন্দর। সেখানে হু হু করে জল ঢুকে পড়ে। জলমগ্ন হয়ে পড়ে বিমান বন্দর ও রানওয়ে। জলে থৈ থৈ করতে থাকে বিমানবন্দরের অফিস বিশ্রামাগার। বন্যা পরিস্থিতির জেরে বাতিল সমস্ত উড়ান। প্রবল বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে ইসিএলের কাজোড়া এরিয়া হাসপাতাল। জলমগ্ন হয়ে পড়ে, কাজোড়া, রাজবাঁধ, কাদারোড এলাকায় জাতীয় সড়কের সার্ভিস লেন। মুশলধারায় বৃষ্টিতে ফুলে ওঠে তামলা নালা। তার জেরে দুর্গাপুরের ১৩ নং ওয়ার্ডের মেনগেট সংলগ্ন তমলাবস্তি এলাকা জলমগ্ন। বহু ঘরবাড়ি জলের তলায় ডুবে যায়। ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। বহু মানুষ আশ্রয় নেয় অন্যত্র। একসঙ্গে দুর্গাপুর বেনাচিতি শ্রীনগরপল্লী, স্টিল পার্ক, বিদ্যাসাগর পল্লী জলমগ্ন হয়ে পড়ে।

প্রবল বর্ষণে দুর্গাপুর রাতুড়িয়া অঙ্গদপুরে দেওয়াল ভেঙে গুরুতর আহত হয় দুজন। তাদের ভর্তি করা হলো হাসপাতালে। শুক্রবার সকালে দুর্গাপুরের ৩৮ নং ওয়ার্ডের রাতুরিয়া এলাকার টাইম কলে জল নিচ্ছিলেন বিশু বাউড়ি ও রঞ্জন ঘোষ নামের দুই বাসিন্দা। তখনই পাশেই থাকা একটি পরিতক্ত মাটির বাড়ি হড়মুড়িয়া ভেঙে পড়ে ওই দুজনের ওপর। মাথায় চোট লাগে রঞ্জনের এবং পায়ে চোট লাগে বিশুর। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। এছাড়াও দুর্গাপুর মহকুমাজুড়ে প্রচুর ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুর্গতদের উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী ত্রান শিবিরে রাখার ব্যাবস্থা করেছে জেলা প্রশাসন। নিকাশি মজে যাওয়ায় জলমগ্ন হয়ে পড়ে পানাগড় বাজার হিন্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুলে থাকা কম্পিউটার, বই সহ, মিড-ডে মিলের নানান সামগ্রীও জলের তলাায়।  সকালে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা এসে দেখেন থৈ থৈ করছে জলে গোটা স্কুল। ঝাঁট দিয়ে জল বের করার কাজ শুরু করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষকই। স্কুলের প্রধান শিক্ষক অরুণ কুমার বলেন,"পাশের নিকাশি নালা বেহালের জেরে কয়েক বছর ধরে এই ঘটনা ঘটছে। জল নিকাশি না হওয়ায় জল জমে স্কুলের ভেতর ঢুকে গিয়েছে। আজও এসে দেখি জলমগ্ন স্কুল। নিকাশি নালা সংস্কার করুক প্রশাসন।" একই সঙ্গে অপরিকল্পিত ঘরবাড়ি হওয়ায় জলমগ্ন হয়ে পড়ে পানাগড় রেলপার সারদাপল্লী।

দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে এদিন বিকাল পর্যন্ত জল ছাড়া হচ্ছে ২০ হাজার ৬২৫ কিউসেক। দুর্গাপুর মহকুমাশাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায় বলেন," কন্ট্রোলরুম সর্বক্ষনের জন্য চালু রাখা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দল দুর্গতদের উদ্ধার কাজ করছে। পর্যাপ্ত ত্রান দেওয়া হচ্ছে।"

You might also like!