৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যা-সহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। গত বছর জানা যায়, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়া। গত বছর ২৭ অক্টোবর তাঁর রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়। ফের গুরুতর অসুস্থ হওয়ার পরে শুক্রবার গভীর রাতে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এবার, তাঁর শরীরে ‘স্থায়ী পেসমেকার’ বসিয়ে সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেন।
তিনি জানান, আগে থেকেই খালেদা জিয়ার হৃদরোগের সমস্যা ছিল। তিনি বলেন, ‘তাঁর হার্টে ব্লকও ধরা পড়েছিল। সেখানে একটা স্টেন্টও লাগানো ছিল। সবকিছু পর্যালোচনা করে মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার তাঁর শরীরে স্থায়ী পেসমেকার বসানো হয়েছে।’ শনিবার রাতে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের বৈঠকে তাঁর শরীরে পেসমেকার বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জাহিদ হোসেন বলেন, ‘পেসমেকার বসানোর পর এখন ৭২ ঘণ্টার জন্য খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে রাখা হয়েছে। সম্পূর্ণ আলাদাভাবে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে তাঁকে।’ তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল হলেও সংকট কাটেনি বলেও জানানো হয়েছে।
রাজনৈতিক প্রতিহিংসা
এদিকে, খালেদা জিয়ার এই অবস্থার জন্য বাংলাদেশের সরকারকেই দায়ী করছে বিএনপি। দলের নেতাদের দাবি, রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখতেই মিথ্যা মামলা দিয়ে খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রাখা হয়। সেখানে তিনি অসুস্থ হলেও সুচিকিৎসা করা হয়নি। এখন তাঁকে বিদেশে নিয়ে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
মির্জা ফখরুলের অভিযোগ, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ব্যক্তিগত রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ইচ্ছাকৃতভাবে খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের দুর্ভাগ্য যে, খালেদা জিয়া বিদেশে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না নিতে পেরে মৃত্যুশয্যায় সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছেন। বর্তমান সরকারের প্রতিহিংসার কারণে তিনিই দীর্ঘদিন বন্দী রয়েছেন। সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলা দিয়ে এইভাবে বন্দি করে রাখার উদ্দেশ্য হল খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া।’