দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ একদিকে যাচ্ছেন স্কুলে, দিনভর পড়াচ্ছেন ও অন্যান্য কাজ সামলাচ্ছেন। অন্যদিকে সামলাচ্ছেন ভোটের কাজ। তিনি ব্যারাকপুর গভর্নমেন্ট হাইস্কুলের শিক্ষক স্বরূপরঞ্জন দে। আরও একজন একদিকে সামলাচ্ছেন খড়দহ পুরসভার সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের কাজ। সঙ্গে ভোটের ডিউটি। তিনি সামন্ত কিস্কু।
লোকসভা ভোটে ব্যারাকপুর লোকসভায় সেক্টর অফিসারের ডিউটি পড়েছে ওঁদের। ১৮ জানুয়ারি তাঁদের ভোটের কাজ শুরু হয়েছে। তবে এই দু'জন ব্যতিক্রম নন। রাজ্যে এমন মানুষের সংখ্যা কয়েক হাজার। যাঁরা নিজেদের চাকরি সামলেই করে চলেছেন নির্বাচনের কাজ। কারণ নির্বাচন কমিশনের যেমন নিজস্ব লোকবল নেই, তেমনই স্কুল থেকে পুরসভা - সর্বত্রই কর্মীর অভাব।
একই দিনে দু'দিকের কাজ চালাতে গিয়ে হিমশিম অবস্থা এঁদের। সেক্টর অফিসারের পাশাপাশি তাঁরা মাস্টার ট্রেনারও। অর্থাৎ, বুথে বুথে প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারদের প্রশিক্ষণের কাজ দেখছেন। সব মিলিয়ে সপ্তাহে চারদিন ভোটের কাজে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে মহকুমাশাসকের অফিসে।
এই পরিস্থিতিতে স্বরূপরঞ্জন বলেন, 'সেক্টর অফিসার হিসেবে সকাল আটটা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রুট মার্চ ছাড়াও বুথে বুথে ঘুরে রিপোর্ট তৈরি করতে হচ্ছে। ১৪টি বুথের কোথায় জঙ্গল আছে, কোথায় পাখা নেই, কেউ কাউকে ভয় দেখাচ্ছে কি না, সবাই নিরাপদে ভোট দিতে পারবেন কি না, এমন সবকিছুই দেখতে হচ্ছে। দিতে হচ্ছে ভোটের প্রশিক্ষণও। আবার স্কুলে ডে সেকশনে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশে ৮০০ জন পড়ুয়া। কিন্তু শিক্ষকের অভাব। তাই দুপুরে স্কুলে এসে আবার সামেটিভ পরীক্ষা নিতে হচ্ছে।'
যে দিন দুপুর তিনটে থেকে সন্ধ্যা ছ'টা পর্যন্ত সেক্টর অফিসারের ডিউটি দেন, সে দিন স্কুলে প্রথমার্ধে ফার্স্ট সামেটিভ মূল্যায়নের ডিউটি করেন স্বরূপরঞ্জন। অনেকটা একই বক্তব্য সামন্তর। তিনি বলেন, 'দেড় লক্ষ খড়দহবাসীর জন্য পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পূর্ণ সময়ের অফিসার দু'জন। দু'মাস পুরসভায় না গেলে ২২টি ওয়ার্ডের অনেক কাজই থমকে যাবে। তাই সেক্টর অফিসারের ডিউটি সামলে রুট মার্চ করানোর পর অন্য অর্ধটা পুরসভায় যেতেই হয়।'
স্বরূপরঞ্জনের পর্যবেক্ষণ, 'আমার বাবাও সেক্টর অফিসার ছিলেন। তবে ওঁর অভিজ্ঞতার কথা শুনে বুঝি, তখনকার সঙ্গে এখনকার সেক্টর অফিসারদের দায়িত্বে অনেক ফারাক।'