দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ গীতা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মগ্রন্থ। যা মানুষকে বাঁচার সঠিক পথের সন্ধান দেয়। গীতার জীবন দর্শন আমাদের ধর্ম, কর্ম ও প্রেমের পাঠ শেখায়। গীতা থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান যেমন আমাদের জীবনের জন্য কার্যকরী, তেমনই মৃত্যু পরবর্তী অবস্থাতেও পাশে থাকে শ্রীমদ ভগবত্ গীতার উপদেশ। বিশেষজ্ঞদের মতে গীতা হল জীবনের শ্রেষ্ঠ ও সম্পূর্ণ দর্শন।
মহাভারতে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ শুরুর ঠিক আগে নিজের আত্মীয়দের উপর অস্ত্র চালনা করা নিয়ে সংশয় প্রকাশ পায় তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুনের মনে। সেই সময় প্রিয় সখা অর্জুনকে মনের সকল সংশয় দূর করতে জীবন দর্শনের শিক্ষা দেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। গীতায় কৃষ্ণ সেই সব মানুষদের কথা বলেছেন, যাদের নানা বিপদ থেকে রক্ষা করতে ঈশ্বর স্বয়ং এগিয়ে আসেন।
গীতার শিক্ষা
গীতায় বলা হয়েছে, যে মানুষ সব সময় ভালো চিন্তা করেন এবং মনের মধ্যে ভালো উদ্দেশ্য বজায় রাখেন, ভগবান নিশ্চয় কোনও না কোনও রূপ ধরে তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন।
গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন যিনি নৈশ্বব্দের গুরুত্ব বোঝেন, তিনি শ্রদ্ধা ও পুজো পাওয়ার যোগ্য। মা হোক, বা স্ত্রী, প্রেমিক হোক বা ঈশ্বর - নৈশ্বব্দ হল মহান।
গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, 'কর্ম করে যাও, ফলের আশা কোরো না। তোমার কাজের ফলে জিত হোক বা হার, লাভ হোক বা ক্ষতি, খুশি আসুক বা দুঃখ,তা নিয়ে চিন্তিত না হয়ে নিজের কাজ মন দিয়ে করে যাও।'
গীতায় বলা হয়েছে, যে ব্যক্তির জীবনে কখনও খারাপ সময় আসেনি, সেই ব্যক্তি নিজের আসল শক্তিকেই চেনে না। কারণ দুর্ভাগ্যই একজন মানুষকে ভেতর থেকে শক্তিশালী করে তোলে।
আপনি যতই কারোর প্রশংসা করুন না কেন, কারোর অপমান করলে তা ভেবেচিন্তে করবেন। কারণ অপমান হল এমন একটা ঋণ, যা মানুষ সুযোগ পেলেই সুদ সমেত ফেরত দেন।
শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন যে অহংকার একা যে কোনও মানুষকে ধ্বংস করে দিতে পারে। অহংকারের কারণেই মানুষ ভুল পদক্ষেপ করে এবং তার প্রতিফল ভোগ করতে হয়।
গীতার বাণী অনুসারে প্রত্যেক মানুষের নিজের মনের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখা জরুরি। কারণ আমরা যদি নিজেদের মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি, তখন আমাদের মনেই আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হয়ে ওঠে।