International

10 months ago

US is arming Taiwan:তাইওয়ানকে তলেতলে অস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

US is arming Taiwan
US is arming Taiwan

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্র থেকে সামরিক সরঞ্জাম কিনতে তাইওয়ানকে ৮ কোটি ডলার অনুদান দেবে ওয়াশিংটন। সম্প্রতি এর অনুমোদনও দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপ নিয়ে আপত্তি তুলেছে চীন। এ নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছে দেশটি।

সাধারণভাবে দেখলে যুক্তরাষ্ট্রের এই অনুদানের পরিমাণ খুব বেশি নয়। আধুনিক একটি যুদ্ধবিমানের দামও এর চেয়ে বেশি। আর এর আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের অস্ত্র কিনতে ফরমাশ দিয়েছে তাইওয়ান। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, তাহলে ৮ কোটি ডলারের এই অনুদানের গুরুত্ব কতটুকু?তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দেখে। তাদের নিজস্ব সংবিধান ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা রয়েছে। তবে দ্বীপটিকে নিজেদের ভূখণ্ডের অংশ বলে দাবি করে আসছে চীন। এই ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ নিতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। এমনকি চীনের সঙ্গে তাইওয়ানের ‘একত্রীকরণে’ সামরিক শক্তি খাটানোর হুমকিও দিয়েছে বেইজিং।

এমন পরিস্থিতিতে বরাবরই তাইওয়ানকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার বিরোধিতা করে আসছে চীন। তবে এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এই ৮ কোটি ডলার ঋণ নয়, মার্কিন নাগরিকদের করের অর্থ থেকে তা দেওয়া হচ্ছে। আরও বড় কথা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দিলেও, সেখানে পকেটের অর্থ খরচ করে অস্ত্র পাঠাচ্ছে। ৪০ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের এই সহায়তা প্রকল্পের নাম ফরেন মিলিটারি ফিন্যান্স (এফএমএফ) বা বিদেশি সামরিক বাহিনীর জন্য অর্থায়ন। এই প্রকল্পের আওতায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে ইউক্রেনে ৪০০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা পাঠিয়েছে ওয়াশিংটন। আফগানিস্তান, ইরাক, ইসরায়েল, মিসরসহ বিভিন্ন দেশেও এমন সহায়তা গেছে।

১৯৭৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে চীনকে স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে তাইওয়ানের কূটনৈতিক স্বীকৃতি তুলে নেয় তারা। এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল তাইওয়ান রিলেশন অ্যাক্ট নামের একটি চুক্তির আওতায়। ওই চুক্তি অনুযায়ী তাইওয়ানে অস্ত্র বিক্রি শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। শর্ত ছিল, তাইপের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে সেই পরিমাণ অস্ত্র বিক্রি করবে, যাতে তারা চীনের সম্ভাব্য হামলা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে। তবে ওয়াশিংটন-বেইজিং সম্পর্ক অস্থিতিশীল হয়—এমন পরিমাণ অস্ত্র বিক্রি করা যাবে না।

এরই মধ্যে গত কয়েক দশকে তাইওয়ান প্রণালি ঘিরে সামরিক ভারসাম্য নাটকীয়ভাবে চীনের পক্ষে গেছে। তাই এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের আগের কৌশল কাজ করছে না। ওয়াশিংটন যদিও জোর গলায় বলছে, তাইওয়ান ঘিরে তাদের নীতি বদলায়নি। তবে সত্যটা হলো, নীতিতে বদল এসেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর তড়িঘড়ি করে এটাও বলেছে যে, ৮ কোটি ডলার অনুদান দেওয়ার মানে এই নয় যে তাইওয়ানকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।

তাইওয়ানের অভ্যন্তরে মনে করা হচ্ছে, তাইপের সঙ্গে সম্পর্ক নতুনভাবে গোছাচ্ছে ওয়াশিংটন। তাইওয়ানের ক্ষমতাসীন দলের আইনজীবী ওয়াং তিং-ইউ বলেন, ‘আমাদের সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর যে প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, তার ওপর জোর দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তাইপে ও ওয়াশিংটন যে পাশাপাশি আছে, অনুদানের মাধ্যমে তা চীনকে স্পষ্টভাবে বুঝিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।’চীনের আচরণের কারণে পরিস্থিতি সেদিকেই এগোচ্ছে বলে মনে করেন চাং। তিনি বলেন, দক্ষিণ ও পূর্ব চীন সাগরে সম্প্রসারণবাদী মনোভাব দেখাচ্ছে বেইজিং। ফলে জাপান তাদের সামরিক বাজেট এখন দ্বিগুণ করেছে। কোয়াড, এইউকেইউএসের মতো সামরিক জোট গড়ে উঠছে। যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্য ঐতিহাসিক সম্মেলন হচ্ছে। আর যুক্তরাষ্ট্র ও ফিলিপাইনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে সম্পর্ক।  

এখন একটা বড় প্রশ্ন হলো তাইওয়ানের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র কত দূর এগোবে? দীর্ঘদিন ধরে চীনের ওপর নজর রাখছেন এমন অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, তাইওয়ানকে সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রের বড় কোনো প্রতিশ্রুতি চীনকে ঠেকাতে কাজে আসবে না; বরং বেইজিংকে আরও উসকে দেবে। তবে ওয়াশিংটন এটাও জানে, একাকী নিজেদের রক্ষা করার সক্ষমতা নেই তাইওয়ানের।


You might also like!