দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: এই রোদ, তো সেই বৃষ্টি—বঙ্গের আকাশে যেন লেগেই রয়েছে মেঘ-রোদ্দুরের লুকোচুরি খেলা। আর ঠিক এই আবহেই বাড়তে থাকে বিভিন্ন পোকামাকড় ও সরীসৃপের উপদ্রব। বিশেষত বর্ষার সময় গ্রামাঞ্চলে সাপের উপদ্রব অনেকটাই বেড়ে যায়। এমনকি, সাপের কামড়ে প্রাণহানির খবরও মেলে প্রায়শই। তবে চিকিৎসক ও সর্প বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক সময়ে চিকিৎসা ও সচেতনতা থাকলে সাপে কাটা মানুষকে বাঁচানো সম্ভব। সর্প বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতে দেখা পাওয়া সাপের মধ্যে ৭০ শতাংশের বেশি সাপ নির্বিষ। তবুও, মানুষ আতঙ্কে পড়ে যান এবং সেই মানসিক চাপ থেকে হৃদরোগ বা শ্বাসকষ্টে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই সাপে কাটার পর ভয় নয়, প্রয়োজন দ্রুত ও সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া।
∆ সাপে কাটার পরে কিছু নির্দিষ্ট উপসর্গ দেখা দিলে তা উপেক্ষা না করে অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। উপসর্গগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
* অতিরিক্ত উদ্বেগ বা আতঙ্ক;
* জ্ঞান হারানো;
* শরীর শক্ত হয়ে যাওয়া;
* চোখ স্থির হয়ে যাওয়া;
* হাত-পা অসাড় বা অবশ হয়ে পড়া;
* বমি বমি ভাব বা বমি;
* অতিরিক্ত ঘাম;
* কাঁপুনি দেওয়া।
∆ উপরোক্ত উপসর্গগুলি দেখলে অবশ্যই বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। নইলে বড়সড় কোনও ক্ষতি হতে পারে। ঠিক কোন কোন সতর্কতা নেওয়া প্রয়োজন?
* ক্ষতস্থানের আশেপাশে যাতে কোনও গয়নাগাটি না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। থাকলে অবিলম্বে খুলে ফেলতে হবে।
* যাতে দেহের তাপমাত্রা আচমকা কমে না যায় তাই কম্বল জড়িয়ে রাখতে হবে।
* চিকিৎসকের কাছে পৌঁছতে দেরি করবেন না।
* ওঝার কাছে গিয়ে মন্ত্রের মাধ্যমে সাপে কামড়ানো রোগীকে সুস্থ করার চেষ্টা করবেন না।
* সাপ কামড় দিলে তার ক্ষতি করার চেষ্টা করবেন না। মনে রাখতে হবে, বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষায় সকলেরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
∆ কী করবেন না?
* কখনওই সাপে কাটা জায়গা চুষে বিষ বের করার চেষ্টা করবেন না।
* পাতা বা ওষুধ ঘরোয়া ভাবে ব্যবহার করবেন না।
* কেটে বা জ্বালিয়ে বিষ বার করার চেষ্টা করবেন না।
* ঝাড়ফুঁক বা টোটকায় সময় নষ্ট করবেন না।
* আক্রান্ত অঙ্গ টাইট করে বাঁধবেন না – এতে রক্তসঞ্চালন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
সাপে কাটা মানেই মৃত্যু নয়। সচেতনতা, সতর্কতা এবং সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগীকে সম্পূর্ণ সুস্থ করা সম্ভব। বর্ষাকালে বিশেষ করে গ্রাম ও আধা-গ্রামীণ এলাকায় সাপের উপদ্রব বেড়ে যায়। তাই এই সময় সতর্ক থাকা ও স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা অত্যন্ত জরুরি।