দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক:-
শ্বেতবর্ণা মা দুর্গা মূর্তি পূজিতা হন সর্বত্রই। মায়ের মহিষাসুর মর্দিনী রূপেই মোহিত গোটা জগতে। কিন্তু ক্যানিংয়ের ভট্টাচার্য
বাড়ির দুর্গা মায়ের মুখ পোড়া।
দেবীর সারা শরীরও ঝলসানো তাম্রবর্ণের। এছাড়াও এখানে দেবী
দুর্গার ডানদিকের পরিবর্তে বাঁদিকে থাকেন গণেশ। পূর্ববঙ্গের ঢাকার বিক্রমপুর বাইনখাঁড়া
গ্রামে ৪৩৮ বছর আগে শুরু হয়েছিল এই পুজো। এ বছর পুজো ৪৪০ তম বর্ষে পদার্পণ করেছে ভট্টাচার্য
বাড়ির দুর্গাপুজো। পুজোর জৌলুস কমলেও, এখনো তার বনেদিয়ানাতে এতটুকু ঘাটতি পড়েনি।
প্রায় ৪৪০ বছর আগে বাংলাদেশে এই ভট্টাচার্যদের বংশধররা শুরু
করেছিলেন মা দুর্গার পূজা। মূলত জমিদার বাড়ির শোভা ও আভিজাত্য প্রদর্শনের জন্য শুরু
হয়েছিল দেবী দুর্গার আরাধনা। আর পাঁচটা জমিদার বাড়ির মতই সাবেকি মতে পুজো শুরু হয়েছিল
সেখানে। কিন্তু পূজা শুরুর প্রায় শতাধিক বছর পর এই ভট্টাচার্য বাড়িতে ঘটে দুর্ঘটনা।
আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায় দুর্গা দালান। পুড়ে যায় মাতৃ মূর্তি। সেই থেকেই এই পোড়া মুখেই
মা দুর্গা পূজিত হন ভট্টাচার্য পরিবারে।
পরিবারের সদস্যদের কথায়, বাড়িতে দেবী দুর্গার মন্দিরের পাশে
ছিল দেবী মনসার মন্দির। পুরোহিত মহাশয় মনসা পূজো করে দুর্গা পুজো করতে এলে একটি কাক
মনসা মন্দিরের ঘিয়ের প্রদীপের পলতে নিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় দুর্গা মন্দিরের শনের চালে
সেটি পড়ে যায়। আর তাতেই পুড়ে যায় দুর্গা মন্দির ও প্রতিমা। এরপর এই বাড়ির মানুষজন
ভাবেন দেবী দুর্গা বোধহয় তাঁদের পুজো আর চাইছেন না। সেই মোতাবেক পুজো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত
নেন তাঁরা।
এমন অবস্থায় একদিন রাতে স্বপ্নাদেশ পান এই পরিবারের তৎকালীন
গৃহকর্তা রামকান্ত ভট্টাচার্য। দেবী দুর্গা স্বপ্নাদেশ দেন যে তাঁর পুজো যেন কোন ভাবেই
বন্ধ না হয়, তাঁর ঐ পোড়া রূপেই যেন তাঁকে পুজো করা হয়। এমন স্বপ্ন পাওয়ার পর থেকেই
আজও দেবীর সেই পোড়া মুখ ও ঝলসানো শরীর এর মূর্তিতেই বছরের পর বছর চলে আসছে দুর্গাপুজো।