দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: পরিচালক অনীক দত্তর পুজোর ছবি ‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’-এর প্রচারকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক। ছবির প্রচারে অভিনেতা আবির চট্টোপাধ্যায় অনুপস্থিত থাকায় সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে পরিচালক অনীক দত্ত ও প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসান তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দ্বিতীয় ছবির পরিচালকের অভিযোগ, আবীরেরই ছবি! অথচ তিনি সহযোগিতা করছেন না। অভিমানী অনীকের আরও অনুযোগ, তিনি অসুস্থ। তাঁর ছবির নায়ক কিন্তু একবারের জন্যও খোঁজ নেননি!
পরিচালক-প্রযোজকের অভিযোগের আঙুল আবীরের দিকে ওঠায় প্রশ্নের মুখে তাঁর অবস্থান। নায়কের কি সত্যিই তাঁর পুজোর দ্বিতীয় ছবি নিয়ে মাথাব্যথা নেই?
মুম্বই থেকে সরাসরি আবীর তারই জবাব দিয়েছেন আনন্দবাজার ডট কম-কে। প্রথমেই তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন পরিচালক অনীককে। “শুনলাম, অনীকদা একদিনে তারকা নায়কের একাধিক ছবিমুক্তির উদাহরণ দিতে গিয়ে নাকি অমিতাভ বচ্চনের নাম নিয়েছেন? আমি যে কী বলে ওঁকে ধন্যবাদ জানাব! ওঁর জন্য বচ্চন স্যরের সঙ্গে আমার নাম জড়িয়ে গেল”, হাসতে হাসতে বলেছেন তিনি। পাল্টা যুক্তির জাল বিছিয়েছেন বড়পর্দার ‘ব্যোমকেশ’ও।
তাঁর কথায়, “আমার যদি ছবিমুক্তিতে আপত্তিই থাকত তা হলে শনিবার কেন ছবির টুকরো ডাবিং (প্যাচ ডাবিং) করলাম? আমার তো এটা করা উচিত ছিল না।” অভিনেতার দাবি, ওই দিন ডাবিং করতে গিয়ে তিনি প্রথম জেনেছেন, অনীকের অসুস্থতার কথা। “জানামাত্র ওঁকে বললাম, দাদা তোমার অসুস্থতার কথা জানা ছিল না। বলতে না বলতেই দেখি, দাদা ধূমপান করছেন। ফুসফুসের কথা মনে করিয়ে দিয়ে ওঁকে ধূমপান ছেড়ে দেওয়ারও অনুরোধ জানাই।” এ কথা বলে আবীরের পাল্টা প্রশ্ন, তিনি যদি পরিচালকের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সজাগ-ই না হবেন তা হলে এত প্রশ্ন করলেন কেন?
আবীরের কথা কিন্তু এখানেই শেষ নয়। শনিবার এত কথার পরে অভিনেতাকে না জানিয়ে রবিবার ঘোষণা করা হল, অনীক-হাসান সাংবাদিক বৈঠক ডাকছেন। তাঁর জিজ্ঞাসা, “এটা কোন দেশি ভদ্রতা?” অনীকের অভিযোগের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি তিনি জবাব দিয়েছেন প্রযোজকের বক্তব্য নিয়েও। আবীরের শাণিত জবাব, “হাসানদা জানতে চেয়েছেন, ছবি বড় না অভিনেতা? নিজেই তার উত্তরও দিয়েছেন। জানিয়েছেন, ছবি। সেই জন্যই বোধহয় একদম শুরু থেকে পুজোয় ‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’-এর মুক্তি নিয়ে আমার কোনও আপত্তিই কানে তোলেননি।”রইল বাকি এক অভিনেতার একাধিক ছবিমুক্তির বাণিজ্যিক ফলাফল। এর আগে তিন বার একই দিনে মুক্তি পেয়েও আবীরের একাধিক ছবি সুপারহিট। যেমন, ২০১৪-র ডিসেম্বরে মুক্তি পেয়েছিল তাঁর ‘বেণী সংহার’, ‘বাদশাহী আংটি’। দুটোই ব্লকবাস্টার। ২০১৫-র পুজোয় মুক্তি পেয়েছিল ‘কাটমুণ্ডু’ আর ‘রাজকাহিনী’। দুটোই সুপারহিট। ২০১৮ সালে ‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’ আর ‘ব্যোমকেশ গোত্র’ মুক্তি পেয়েছিল। দুরন্ত ফলাফল সেই দুটোরও। ফলে, একদিনে একাধিক ছবিমুক্তির ভবিষ্যত নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তিত নন তিনি। তার পরেও তাঁর প্রশ্ন, “কেন আমি আমার দর্শককে দ্বিধাবিভক্ত করব? একটি ছবি পুজোয়, একটি ছবি অন্য সময় মুক্তি পেলে দুটো ছবিই বেশি ভাল ফল করত।”
আবীর কথা শেষ করেছেন পাল্টা ব্যঙ্গ ছু়ড়ে। হাসতে হাসতে বলেছেন, “ছবির প্রচার হচ্ছে না, বলে লাফাচ্ছেন অনীকদা-হাসানদা! আজ আমায় কাঠগড়ায় তুলে ওঁরা দু’জনে মিলে কত ভাল প্রচার সেরে ফেললেন!”ছবিমুক্তির আগে বিতর্ক তৈরি করে দেওয়ার মতো ‘ভাল প্রচার’ আর কি হয়?