দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ জলই জীবন। এই সত্যি বদল হয়নি এখনও পর্যন্ত। তবে তাই বলে সবাই যে সচেতন, এমনটাও নয়। বুধবার বিশ্ব জল দিবস। ১৯৯৩ সালে থেকে প্রতি বছর ২২ মার্চ জল নিয়ে গণসচেতনতা তৈরি করার লক্ষ্য নিয়ে বিভিন্ন উদ্যোগ দেশ বিদেশে।
এই বছর বিশ্ব জল দিবসের বিষয় হল ভূগর্ভস্থ জল। শুধু ভারত নয়, সারা বিশ্বেই ভূগর্ভস্থ জলস্তর নামছে তো নামছেই। সারা পৃথিবীর প্রায় ২৫ শতাংশ ভূগর্ভস্থ জল উত্তোলন করে ভারত। ভারত আর কিছুতে না হোক, এই ক্ষেত্রে আমেরিকা ও চিনের থেকে এগিয়ে রয়েছে। ভারতের ক্ষেত্রে ২০০২ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ভূগর্ভস্থ জলস্তরের উচ্চতা কমেছে ভয়াবহ ভাবে, প্রতি বছরে ১০-২৫ মিমি। গড়ে ভারতের ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমেছে ৫৪ শতাংশ। চিন্তার বিষয় হল, চাষ আবাদের ক্ষেত্রে ভারতে যে জল ব্যবহৃত হয়, তার ৭০ শতাংশের এর উৎস হল ভূগর্ভস্থ জল। তথ্য অনুসারে, যদি এই ভাবে ভূগর্ভস্থ জলস্তরের উচ্চতা কমতে থাকে, তাহলে ভারতের জনসংখ্যার ৪০ শতাংশের বেশি মানুষের জন্য পানীয় জলের গুরুতর সমস্যা হবে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি মোটেই আশাপ্রদ নয়। ইতিমধ্যেই প্রচুর মানুষ আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়েছেন। অনেক জায়গায়, যার মধ্যে কলকাতাও রয়েছে, যেখানে টিউবওয়েলের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ জলের উত্তোলন এক প্রকার নিষিদ্ধ।
অনেকগুলি কারণ দায়ী এই পরিস্থিতির জন্য। যার মধ্যে অন্যতম হল মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে ভূগর্ভস্থ জল উত্তোলন করা। এর ফলে কুয়ো, পাতকুয়ো শুকিয়ে যাচ্ছে খুব দ্রুত। পুকুর, খাল বিল, নদীর অবস্থাও খারাপ। গুণগত মানের দিক থেকেও দেখা গিয়েছে, ভূগর্ভস্থ জলের অবস্থা ভালো নয়। পানীয় জলের সংকট ইতিমধ্যেই গ্রীষ্মের প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১) প্রচুর গাছ লাগাতে হবে। এর সত্যি কোনও বিকল্প নেই। তবে এই ক্ষেত্রে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হবে। ইউক্যালিপটাসের মতো গাছ, যেগুলি ভীষণ পরিমাণে ভূগর্ভস্থ জল শুষে নেয়, এরকম গাছ এড়িয়ে যাওয়া উচিত ।
২) জমিতে ক্যামিক্যাল ব্যবহার করা চলবে না।
৩)কাপড় কাচা বা ধোয়ার ক্ষেত্রে যত্নবান হতে হবে। কাণ্ডজ্ঞানহীনের মতো ভূগর্ভস্থ জল পাম্প করে তোলা চলবে না।
অনেকেই ভাবতে পারেন যে পৃথিবীর প্রায় ৭১ শতংশ তো জল দিয়ে তৈরি, তাহলে জল নিয়ে চিন্তার কী আছে? বাস্তব হল, এর মধ্যে ব্যবহারযোগ্য জলের শতাংশের হিসেব বেশ কম। তার পাশাপাশি পানীয় জলের পরিমাণ আরোও কম। ইতিমধ্যেই প্রথম বিশ্বের অনেক দেশেই দেখা গিয়েছে, সাধারণ মানুষকে জল কিনতে হচ্ছে প্যাকেটে। ভারতের মতো দেশে মাথা পিছু জল ব্যবহার নিয়ে কোনও ধারণা নেই। কিন্তু শেষের সেদিন কিন্তু বেশ ভয়ঙ্কর হতে পারে। তাই আর গাফিলতি বা পিছিয়ে থাকা নয়, জল নিয়ে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে এগোতে হবে সবাইকে।