Editorial

10 months ago

World Environment Day 2023 : পরিবেশের শুচিকে গিলে খাচ্ছে প্লাস্টিক! বাড়ছে উষ্ণায়নের তীব্রতা

World Environment Day 2023 (Symbolic Picture)
World Environment Day 2023 (Symbolic Picture)

 

গ্রীষ্মের সময় গরম পড়বে, তাপমাত্রার পারদ ও  বাড়বে,এটাই স্বাভাবিক। ছোট বেলায় মা ঠাকুমার কাছে শুনেছি গরম কালে গরম না পড়লে আম কাঁঠাল পাঁকবে কেমন করে। তবে সে গরমের দাপট এমন ছিল না। উষ্ণতার পারদ ৩০-৩৫ ডিগ্রির মধ্যেই ঘোরাফেরা করত, কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি এমন যে গরমের মরসুমে উষ্ণতার পারদ ছুঁয়ে ফেলছে ৪০-৪৫ ডিগ্রি,তাপের দাপটের জেরে তাপপ্রবাহের মত ঘটনার পুনরাবৃতি হচ্ছে বারংবার। ঘরে বাইরে তাপের দাবদাহে বিষম অবস্থা সাধারন মানুষের। গরমের দাপটে নিমেশে উর্যা বিনষ্ট হচ্ছে প্রানী জগতের। বিগত ৫ বছরে আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের কারন কী? 

এর কারন আমাদের অনেকেরই জানা বিশ্ব উষ্ণায়ন। এবং তার জেরে জলবায়ুর এই বিরাট পরিবর্তন। এর কুফল ভোগ করে চলেছি আমরা প্রতিনিয়ত।  ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং’, ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ’ এই ধরনের ভারী ভাষার সঙ্গে আমরা বর্তমান সময়ে দাড়িয়ে প্রতিদিন পরিচিত হচ্ছে, এ সম্পর্কে না না তথ্য, আলোচনা, সমস্যা, সমাধান শুনছি জানছি। কিন্তু তা কতটা কার্যকারী হচ্ছে তা নিয়ে বারবারই প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু  ।  ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং’, ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ’-র মতো বিষয় গুলির জন্য যে কারনটি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ তা হল প্লাস্টিক দূষণ।

 

উল্লেখ্য, চলতি বছরের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের থিম। ‘বিট প্লাস্টিক পলিউশন’।বিশেষজ্ঞদের দাবি, প্লাস্টিক দূষণের জেরেই বাড়ছে উষ্ণায়ন। প্রতি বছর ৫ জুন পৃথিবীজুড়ে পালিত হয় বিশ্ব পরিবেশ দিবস। ভারতও তার ব‌্যতিক্রম নয়। এ বছর তো এই উপলক্ষে‌ মে মাস থেকেই চালু হয়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের পরিবেশ মন্ত্রকের তরফে নানাবিধ উদ্যোগ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রবর্তিত ‘দ‌্য কনসেপ্ট অফ লাইফ’-কে পাথেয় করে ‘মিশন লাইফ’-এর আওতায় গোটা দেশে আয়োজিত হয়েছে নানা ধরনের অনুষ্ঠান। 

কেন্দ্রের সাথে পায়ে পা মিলিয়ে বাংলাতে ও বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে সবুজায়ন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।৫ জুন, বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে শাল ,পলাশ, কাজু সহ বিভিন্ন প্রজাতির দেড়শটি বেশি গাছ রোপন করা হয়। কেবল বৃক্ষরোপণই নয় গাছগুলিকে রক্ষণাবেক্ষণের ও দায়িত্ব গ্রহণ করেছে শাসক দল। 

কিন্তু প্রশ্ন এই উদ্যোগ কেবল একদিন ব্যাপী পালিত করে কী আদপে কাজের কাজ কী কিছু হবে? প্রতিদিন অপরিনত বৃক্ষছেদন, কাঠের চোরা চালানের জন্য নির্বিচারে বনভূমির ধংস, জলাভূমি ভরাট করে বহুতলের রমরমা ব্যবসা এই সবকিছুর জন্যই আজ বিশ্ব সংকটের সম্মুখীন। প্রতি নিয়ত জীবনী শক্তি হারাচ্ছে প্রানীকূল, অনেক ক্ষেত্রেই পর্যাপ্ত বংশ বৃদ্ধি হচ্ছে না প্রানী জগতের, যার ফলে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। অনেক ক্ষেত্রে প্রানী জগৎ থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বহু প্রজাতি।


সাধারনকে অবোগত করতে জানিয়ে রাখি এতো উদ্যোগ এত প্রকল্প ও প্রচেষ্টার পরও পরিবেশ সূচকে (এনভায়রনমেন্ট পারফরম‌্যান্স ইন্ডেক্স)-এ ভারতের স্থান সবচেয়ে নিচে। ১৮০টি দেশের মধ্যে ভারতবর্ষ রয়েছে ১৮০ নম্বরে। পাকিস্তান, বাংলাদেশ এমনকী জাম্বিয়া, ইথিওপিয়া, ইরাক, সুদানও ভারতের থেকে এগিয়ে।যা সত্যিই আশ্চর্য্যের।উল্লেখ্য,রাষ্ট্রসংঘের নথি বলছে, বিশ্বে বছরে ৪০০ মিলিয়নেরও বেশি প্লাস্টিক পণ‌্য উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশই ‘রিসাইকল’ করা যায় অর্থাৎ পুনর্ব্যবহারযোগ‌্য।

প্লাক্টিকের করাল গ্রাস  ক্রমেই কেড়ে নিচ্ছে পরিবেশের প্রানীবৈচিত্রকে। বাতাসে মাইক্রোপ্লকাস্টিকের কনায় বিপর্যস্ত হচ্ছে স্বআঃভাবিক জন জীবন। প্লাস্টিক-বর্জ‌্য নদী-পুকুর এমনকী সমুদ্রের তলদেশে জমে জমে জলজ প্রাণীকুলের নির্মম ক্ষতি করছে যার ফলে বিকৃত হচ্ছে ইকো সিস্টেম , বদলে যাচ্ছে প্রানীদের খাদ্যাভ্যাস। পৃথিবীর সর্বোচ্চ স্থান মাউন্ট এভারেস্টও এর হাত থেকে বাঁচেনি। মাইক্রোপ্লাস্টিকের বিষে ক্রমেই ক্ষতি হচ্ছে এই পৃথীর সর্বোচ্চ বিশাল হিমশৈল শিখরের। মান দেহে বাসা বাঁধছে জটিল ও মারন রোগের।


প্রতি বছর প্লাস্টিক  ব্যবহারের ক্ষেত্রে না না নিয়ম-নীতি জারি করা হয়, নেওয়া হয় না না উদ্যোগ ও, কিন্তু এত কিছু সত্ত্বেও এই পরিস্থিতি ও ক্রমাগত হার্ট, ত্বক, ফুসফুসের জটিল রোগের পরিসংখ্যান জানান দিচ্ছে কতটা অস্বাস্থ্যকর  পরিবেশে বাস করছি আমরা। শুধু তাই নয় আগামী  সময়ে দূষণ ও উষ্ণায়নের করাল থাবায় ক্ষতবিক্ষত হতে চলেছে প্রকৃতি ও পরিবেশ। পরিবর্তিত হতে চলেছে মানুষের জীবন শৈলী ও জীবন ধারনের পরি কাঠামো। 

বৈজ্ঞানিকদের অনুমান হয়ত আগামী দিনে এমন সময় আসতে চলেছে যেখানে অন্যান্য প্রানীকূলের মতই হয়ত বিলুপ্ত হয়ে যাবে মানব কূল ও। থেমে যাবে মানব সমাজের বিংশ বিস্তার প্রক্রিয়া। নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে প্রকৃতির শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষ। পরিশেষে এটাই বলতে হয় আমরা যদি সচেতন না হই সেক্ষেত্রে শ্রষ্ঠার সৃষ্টিই একদিন তার বিনাস ডেকে আনবে। 


You might also like!