দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: নেটপ্রভাবীরা আর কনটেন্ট তৈরির অজুহাতে বাক্স্বাধীনতার আড়ালে আশ্রয় নিতে পারবেন না। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়ে দিল, কনটেন্ট নির্মাতারা আসলে নিজেদের বক্তব্যের বাণিজ্যিকীকরণ করেন। বিচারপতি সূর্যকান্ত ও জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চ স্পষ্ট করেছে, কোনও কনটেন্ট যদি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে তৈরি হয় বা নিষিদ্ধ বক্তৃতার আওতায় পড়ে, তবে তার ক্ষেত্রে বাক্স্বাধীনতার অধিকার আর প্রযোজ্য হবে না।
সম্প্রতি নেটপ্রভাবী রণবীর ইলাহাবাদিয়ার একটি অনলাইন অনুষ্ঠান ঘিরে বিতর্ক দানা বাঁধে। সুপ্রিম কোর্টে মামলাও হয় এই নিয়ে। তাতে নাম জড়ায় অন্য পাঁচ সমাজমাধ্যম প্রভাবীরও— সময় রায়না, বিপুল গয়াল, বলরাজ পরমজিৎ সিংহ ঘাই, সোনালি ঠাকুর এবং নিশান্তজগদীশ তনওয়ারের। বিশেষ ভাবে সক্ষমদের নিয়ে ঠাট্টা করার অভিযোগ ওঠে তাঁদের বিরুদ্ধে। ওই ঠাট্টার জন্য ইতিমধ্যে শীর্ষ আদালতে ক্ষমা চেয়েছেন পাঁচ নেটপ্রভাবী। তবে সোমবার আদালত নির্দেশ দিয়েছে, ওই পাঁচ নেটপ্রভাবীকে নিজেদের সমাজমাধ্যম চ্যানেল থেকেও সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
কেন্দ্রের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরমণী আদালতে জানান, অনলাইনে কোনও বক্তব্যের গাইডলাইন স্থির করতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক-সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা হয়েছে। তবে বিষয়টির সঙ্গে বাক্স্বাধীনতার বিষয়ও জুড়ে আছে বলে এটি সংবেদনশীলতার সঙ্গে বিবেচনা করতে হচ্ছে। অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, শুধুমাত্র মুষ্টিমেয় নেটপ্রভাবীদের বিচ্যুতির ভিত্তিতে চিন্তাভাবনা না করে দ্রুত বা অপ্রত্যাশিত ভাবে কোনও বিধি তৈরি করা যাবে না। যোগাযোগের প্রযুক্তি এবং ভবিষ্যতে কী কী চ্যালেঞ্জ আসতে পারে, তা বিবেচনা করে এই বিধি অনেক বেশি প্রশস্ত হতে হবে।শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, “একটি কার্যোপযোগী গাইডলাইন স্থির করতে হবে। অন্যথায় উর্বর মস্তিষ্কের তরুণ প্রজন্মকে এই বিধি এড়িয়ে যাওয়া থেকে আটকানো যাবে না। সীমা অতিক্রম করার ফরে যতটা ক্ষতি হচ্ছে, পরিণামও তেমনই হওয়া উচিত। না হলে তাঁরা ভাববেন, শুধু ক্ষমা চেয়েই পার পেয়ে যাওয়া যাবে।”
অভিযুক্ত পাঁচ নেটপ্রভাবীকে নিজ নিজ সমাজমাধ্যম চ্যানেলে ক্ষমা চাইতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। শুধু তা-ই নয়, সমাজে সকলকে নিয়ে চলার জন্য মানুষকে বিভিন্ন ভাবে সচেতনও করতে হবে তাঁদের। বিশেষ ভাবে সক্ষমদের সমাজের মূলস্রোতের সঙ্গে আরও নিবিড় করে তুলতে পাঁচ নেটপ্রভাবী কী কী পদক্ষেপ করেছেন, তা-ও হলফনামা আকারে জমা দিতে হবে সুপ্রিম কোর্টে। সুপ্রিম কোর্ট এ-ও জানিয়েছে, যতটা সীমা লঙ্ঘন করেছেন নেটপ্রভাবীরা, তাঁদের অনুতাপও যেন ততটাই হয়। তার পরেই তাঁদের জরিমানা সংক্রান্ত বিষয়ে বিবেচনা করা হবে।