Country

5 hours ago

Janhvi Dangeti:শুভাংশুর পর জাহ্নবী! মার্কিন মহাকাশ অভিযানে উড়ান ভারতীয় কন্যার

After Subhanshu
After Subhanshu

 

দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক : স্পেসএক্সের ‘ড্রাগন’ ক্যাপসুলে চড়ে মহাকাশ অভিযানে ভারতের শুভাংশু শুল্কের যাত্রা গোটা দেশকে গর্বিত করেছে। বুধবার সকাল থেকেই উত্তেজনায় উত্তাল হয়ে উঠেছিল লখনউ—শুভাংশুর পরিবার, বন্ধু, প্রতিবেশীরা যেমন টিভির সামনে চোখ রেখেছিলেন, তেমনই সারা দেশ চেয়ে ছিল সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের দিকে।

এই মহাকাশ উল্লাসের মাঝেই আরও এক ভারতীয়ের নাম নীরবে জুড়ে গেল ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানে। তিনি জাহ্নবী ডাঙ্গেতি, মাত্র ২৩ বছর বয়সি এক তরুণী, যিনি অন্ধ্রপ্রদেশের পশ্চিম গোদাবরী জেলার বাসিন্দা। এখনই ঘোষণা হয়ে গিয়েছে, আমেরিকার বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘টাইটান স্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ’ (TSI)-এর পরবর্তী অভিযান, ‘টাইটান স্পেস মিশন’-এর অন্যতম নভশ্চর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন জাহ্নবী। সবকিছু ঠিক থাকলে, ২০২৯ সালেই সেই মিশনের অংশ হিসেবে মহাকাশে পাড়ি দেবেন তিনি।

নিঃশব্দে, প্রচারের আড়ালে থেকেও জাহ্নবীর এই কৃতিত্ব এক বিরাট নজির হয়ে উঠেছে, যা ভবিষ্যতের ভারতীয় মহাকাশ স্বপ্নে নতুন ছাপ রেখে যাচ্ছে।

মাত্র পাঁচ ঘণ্টার হলেও, টাইটান স্পেস মিশন এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা হয়ে উঠবে জাহ্নবী ডাঙ্গেতি এবং তাঁর সহযাত্রীদের জন্য। এই সংক্ষিপ্ত সময়েই তাঁরা দু’বার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করবেন, দেখতে পাবেন দু’বার সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত—যা এক অনন্য দৃশ্যপট তুলে ধরবে মহাকাশ থেকে।

মিশনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো, তিন ঘণ্টা ধরে নভশ্চররা সম্পূর্ণভাবে মাধ্যাকর্ষণশূন্য পরিবেশে থেকে নানা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালাবেন। মানব মহাকাশযানে কীভাবে আরও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন আনা যায়—তা নিয়েই চলবে গবেষণা। মূলত ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানে আরও নিরাপদ ও কার্যকরী যাত্রার পথ খুঁজে বের করাই এই মিশনের কেন্দ্রবিন্দু।

এই বিশেষ অভিযানের নেতৃত্ব দেবেন এক অভিজ্ঞ মহাকাশচারী—নাসার প্রাক্তন নভশ্চর এবং মার্কিন সেনার অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল উইলিয়াম ম্যাকআর্থার। তাঁর তত্ত্বাবধানে এই সংক্ষিপ্ত অথচ তাৎপর্যপূর্ণ যাত্রা বিশ্ব মহাকাশ গবেষণার পরবর্তী ধাপে এক বড় পদক্ষেপ হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জাহ্নবীর এই অভিযানের মূল তাৎপর্য নিহিত রয়েছে পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরে বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ ও তথ্য সংগ্রহে। পৃথিবী প্রদক্ষিণ করতে গিয়ে মহাকাশ থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের এক অনন্য অভিজ্ঞতা লাভ করবেন তিনি। সাধারণভাবে, পৃথিবীর একদিকে যখন সূর্য উদিত হয়, অন্যদিকে তখন সূর্য অস্ত যায়। একবার পৃথিবীকে সম্পূর্ণভাবে ঘুরে এলে দু’টি সূর্যোদয় ও দু’টি সূর্যাস্ত প্রত্যক্ষ করা সম্ভব—এমনটাই ঘটবে এই অভিযানে অংশ নেওয়া নভশ্চরদের ক্ষেত্রে।

জাহ্নবীর কথায়, অভিযানের সময়কাল হবে মোটে পাঁচ ঘণ্টা। এর মধ্যেই সম্পন্ন হবে দুটি পূর্ণ প্রদক্ষিণ, সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের সেই মহাজাগতিক দৃশ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক তথ্য সংগ্রহের কাজ। এই ক্ষণস্থায়ী মিশন হলেও, তার অভিজ্ঞতা ও গবেষণা ভবিষ্যতের মহাকাশ যাত্রার জন্য অমূল্য হয়ে উঠতে পারে।

‘টাইটান স্পেস মিশন’-এর অংশ হতে পেরে প্রবল উচ্ছ্বাসে ভাসছেন জাহ্নবী ডাঙ্গেতি। নিজের এই অসাধারণ অভিযানের অভিজ্ঞতা ও আগামী পরিকল্পনা নিয়ে ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন তিনি।

ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক জাহ্নবীর শৈশব কেটেছে অন্ধ্রপ্রদেশের পশ্চিম গোদাবরী জেলায়। সেখানেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পড়াশোনার পর তিনি পঞ্জাবের লভলি প্রফেশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণার স্বপ্ন নিয়ে পাড়ি দেন বিদেশে।

বিভিন্ন দেশের মহাকাশবিষয়ক প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বাড়িয়েছেন জাহ্নবী। ইতিমধ্যেই ‘অ্যানালগ মিশন’-এ অংশ নিয়ে মহাকাশ অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় বাস্তব প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন তিনি। এমনকি নাসার আন্তর্জাতিক এয়ার অ্যান্ড স্পেস প্রোগ্রামের অংশ হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এই সাফল্য তাঁকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে মহাকাশ গবেষণার বিস্তৃত দিগন্তের দিকে।


You might also like!