বাজারিছড়া (অসম), ২৬ মে : শ্রীভূমি জেলান্তর্গত বাজারিছড়া থানাধীন শশীনগর গ্রামে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন গৃহকর্তা। ডাকাতের দল গৃহস্থের বাড়ি থেকে লুট করে নিয়েছে বহু স্বর্ণালঙ্কার এবং নগদ টাকা। ঘটনা রবিবার রাতে সংগঠিত হয়েছে শশীনগর গ্রামের বাসিন্দা জনৈক শৈলেন পাল ওরফে খোকাবাবুর বাড়িতে। বৃষ্টিভেজা রাতের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রায় ছয়-সাতজনের এক সশ্রস্ত্র ডাকাতের দল শৈলেন পালের বাড়িতে পড়ে। ডাকাতদের হামলা গুরুতর আহত হয়ে বাড়ির মালিক শৈলেনবাবু বর্তমানে মাকুন্দা লেপ্রসি কাম জেনারেল হসপিটালে চিকিৎসাধীন।
জানা গেছে, গতকাল মধ্যরাতে ছয়-সাতজনের এক ডাকাত দল খোকাবাবুর ঘরের সামনের বন্ধ গ্রিলের ওপর দিয়ে ছাদে ওঠে সিঁড়ি বেয়ে নীচে নেমে আসে। নীচে নেমে ডাকাতরা তাঁর ঘরের দরজায় লাথি মারতে থাকে। বাড়ি–মালিক শৈলেন পাল মনে করেন, প্রতিবেশি কেউ দরজায় ধাক্কা মারছেন। তা ভেবে ঘরের দরজা খুলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডাকাতের দল ভেতরে প্রবেশ করে বাড়ির সব সদস্যের হাত-পা বেঁধে পিস্তল দেখিয়ে হল্লা-চিৎকার না করতে শাঁসায়।এক সময় ডাকাতদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন গৃহকর্তা খোকাবাবু। তখন ডাকাতেরা তাঁর হাতে ধারালো ভোজালির কোপ বসিয়ে দেয়। ফলে রক্ত ঝরিয়ে মেঝেতে লুটে পড়েন তিনি।
জানা গেছে, খোকাবাবুর ছেলে সঞ্জয় পাল মিজোরামে ঠিকাদারি করেন। গতকাল তিনিও বাড়িতে ছিলেন। দুই ডাকাতের মুখ খোলা থাকলেও বাকিদের মুখ ঢাকা ছিল। হাতে ছিল পিস্তল ও ধারালো অস্ত্রশস্ত্র। তারা ভাঙা হিন্দিতে সঞ্জয়কে নাকি বলে, তোমার কাছে চার লক্ষ টাকা রয়েছে। সেগুলো দিয়ে দাও। সঞ্জয় জানান, তাঁর কাছে নগদ টাকা নেই। তা শুনে ডাকাতেরা গোটা ঘর তছনছ করে নগদ প্রায় ১৫ হাজার টাকা সহ মহিলা ও শিশুদের পরিহিত গয়না এবং ঘরের স্টিল আলমিরায় মজুত প্রায় পাঁচ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও দুটি মোবাইল ফোনের হ্যান্ডসেট নিয়ে কেটে পড়ে।তবে যাওয়ার পথে ডাকাতরা নাকি দুটি মোবাইল ফোনের হ্যান্ডসেট হাতিখিরা হাসপাতালের সামনে ফেলে গেছে।
ঘটনা সম্পর্কে আজ সোমবার ভোরে বাজারিছড়া থানায় এফআইআর করেন গৃহকর্তা। এফআইআরের ভিত্তিতে এক মামলা রুজু করে পুলিশ তদন্তে নেমে মোবাইল ফোন দুটি উদ্ধার করেছে। পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিক জানিয়েছেন, তদন্তে নেমে তাঁরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে তা খতিয়ে দেখছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ডাকাতদের শনাক্ত করার চেষ্টা তারা করছেন। এদিকে পুলিশের ধারণা স্থানীয় কতিপয় দুষ্কৃতী বাইরের ডাকাতের সহযোগিতায় এই দুষ্কর্ম সংগঠিত করেছে।