দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী, কিন্তু স্বপ্নে ছিল না কোনও কমতি। মধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে নজরকাড়া ফলাফলের পর নিট পরীক্ষাতেও দুর্দান্ত সাফল্য— উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরের কৃতি ছাত্র অঙ্কন মণ্ডল আজ সকলের মুখে মুখে। নিট-এ তাঁর র্যাঙ্ক ৮১০। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন এক ধাপ এগোলেও, সামনে তখন পাহাড়প্রমাণ আর্থিক বাধা। ঠিক সেই সময় ত্রাতার ভূমিকায় এগিয়ে এল বসিরহাট জেলা পুলিশ।
স্বরূপনগরের পলতার বাসিন্দা অঙ্কনের বাবা পীযূষ মণ্ডল পেশায় চাষি। একফালি জমিতে চাষ করেই কোনওরকমে চলে পাঁচজনের সংসার। এমন দুর্দশার মধ্যেও অঙ্কনের স্বপ্ন ছিল একদিন সাদা অ্যাপ্রনে জড়ানো। মাধ্যমিকে পেয়েছেন ৯৬ শতাংশ, উচ্চমাধ্যমিকে ৯০ শতাংশ। কিন্তু ডাক্তারি পড়াশোনার ব্যয় সামলানো যেন এক অসম লড়াই। অবশেষে নিজের অবস্থার কথা জানিয়ে সরাসরি বসিরহাট জেলার পুলিশ সুপার ড. হোসেন মেহেদি রহমানের কাছে সাহায্যের আবেদন জানায় অঙ্কন। সেই আবেদনেই সাড়া দিয়ে দিন কয়েক আগে আচমকা অঙ্কনের পলতার বাড়িতে হাজির হন পুলিশ সুপার নিজে, সঙ্গে স্বরূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক অরিন্দম হালদার ও জেলার অন্য আধিকারিকরা। অঙ্কনের হাতে তাঁরা তুলে দেন একটি ল্যাপটপ, স্টেথোস্কোপ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পড়াশোনার সামগ্রী। শুধু তাই নয়, তাঁর মেডিক্যাল পড়াশোনার জন্য আর্থিক সহায়তার আশ্বাসও দিয়েছে জেলা পুলিশ।
এই প্রসঙ্গে ড. হোসেন মেহেদি রহমান বলেন, “জেলার দুঃস্থ পড়ুয়াদের পাশে পুলিশ বরাবরই ছিল এবং থাকবে।” অঙ্কনের বাবা বলেন, “বসিরহাটের পুলিশ সুপার যেভাবে আমার মত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, আমি কোনওদিন তাঁর ঋণ শোধ করতে পারব না। তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ থাকব।” বসিরহাট জেলা পুলিশের এই মানবিক পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই প্রশংসা কুড়িয়েছে জেলার বাসিন্দাদের মধ্যে। কঠিন সময়েও পুলিশের এই সহানুভূতিশীল ভূমিকা যে ভবিষ্যতের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে, তা বলাই বাহুল্য।