দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ কোনও রকম রক্তপাত ছাড়াই সোমবার পঞ্চম দফায় মোটের উপর শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হলো ব্যারাকপুর লোকসভার নির্বাচন। শিল্পাঞ্চলের ভোটে বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিং যখন এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত ছুটে বেড়িয়েছেন, তখন হাইভোল্টেজ লড়াইয়ে দিনভর রিল্যাক্স মুডে কাটালেন তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিক। দিনের বেশিরভাগ সময় তাঁর ফোনটাই ছিল ওয়ার রুম।
একটা জায়গায় বসে কোথায় কী সমস্যা এবং সমাধানের উপায় বাতলে দিয়েছেন দলীয় কর্মীদের। বারবার পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, কোথাও কোনও রকম অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না। ক্যাপ্টেনের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন তৃণমূলের কর্মীরাও। বহুদিন পর রক্তপাতহীন ভোট দেখল ব্যারাকপুর।
এ দিন সকাল পৌনে আটটা নাগাদ নৈহাটির বাড়ি থেকে বেরিয়ে বড়মার মন্দিরে পুজো দেন পার্থ। তার পর কিছু দূরে নৈহাটি গৌরীপুর মোড়ের কাছে হনুমান মন্দিরেও পুজো দেন তিনি। এর পর সেখান থেকে বেরিয়ে বাড়ির কাছে নৈহাটি প্রফুল্ল সেন গার্লস হাইস্কুলের মডেল বুথে ভোট দিয়ে আত্মবিশ্বাসী পার্থ বলেন, 'মানুষের আস্থা, বিশ্বাস আমার উপর রয়েছে। আমি জিতব।' একইসঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, 'অর্জুনের পরাজয় শুধু সময়ের অপেক্ষা।'
ভোট দিয়ে নৈহাটির কাছেই কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে একটি হোটেলে ঢোকেন তিনি। সঙ্গে মিডিয়ার কনভয়। সেখানে সকালের জলখাবার খেয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা কাটান। ওই হোটেলেই ওয়াররুম বানিয়ে ফেলেন তিনি। এর মধ্যেই তার কাছে খবর আসে কাঁচরাপাড়ায় অর্জুন সিংকে ঘিরে গো-ব্যাক স্লোগান দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে ফোন তুলে নির্দেশ, 'প্রতিপক্ষ যেন কোনও মাইলেজ না পায়।'
এর পর বেরিয়ে ভাটপাড়া, কাঁকিনাড়া অঞ্চল এমনকী অর্জুনের জগদ্দল মেঘনা মোড়ের বাড়ির সামনে দিয়েও একবার চক্কর খান তিনি।
নয়াবাজার, মানিকপির, সুন্দিয়া কাঁকিনাড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা ঘোরেন পার্থ। কোনও বুথে তিনি না ঢুকলেও বুথের বাইরে থাকা তৃণমূলের ক্যাম্পে বসা দলীয় কর্মীদের ঠান্ডা মাথায় ভোট করানোর নির্দেশ দেন। ঘণ্টা খানেক চক্কর কাটার পর চলে যান সোজা আমডাঙায়।
পার্থ বলেন, 'মানুষ গুন্ডারাজের বিরুদ্ধে বুথে বুথে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। আগামী ৪ জুন ইভিএম শুধু খোলার অপেক্ষা।' তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ দিন অর্জুন রাস্তায় থাকলেও বিজেপির পুরোনো কর্মীদের সে ভাবে দেখা মেলেনি। অনেক বুথে দেখা মেলেনি বিজেপির এজেন্টের। ভাটপাড়া, জগদ্দল, গারুলিয়ার হাতেগোনা কয়েকটি জায়গায় বুথের বাইরে বিজেপির ক্যাম্প অফিস থাকলেও বাকি জায়গায় সেটাও ছিল না।
সিপিএম প্রার্থী দেবদূত ঘোষকেও রাস্তায় খুব একটা দেখা যায়নি। সিপিএমের ক্যাম্প অফিস কিংবা বুথ এজেন্ট খুঁজতে গিয়েও হিমশিম অবস্থা।