Travel

3 hours ago

Puja Vacation Road Trip: পুজোর ছুটিতে ভিড় নয়, চাই নির্জনতা? কলকাতার কাছেই ঘুরে আসুন এই ৩ শান্তিপূর্ণ গন্তব্যে!

Bana vihar, Bhanjanagar
Bana vihar, Bhanjanagar

 

দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: পুজোর নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে আলোর রোশনাই, ঢাকের তালে মাতোয়ারা জনসমুদ্র, রঙিন পোশাকে সাজগোজ আর প্যান্ডেল হপিং-এর উত্তেজনা। তবে সকলের জন্য পুজো মানে কিন্তু এই কোলাহল নয়। অনেকেই এই সময়টিকে বেছে নেন শহরের ব্যস্ততা থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে নিঃশব্দে নিজের সঙ্গে  সময় কাটানোর জন্য। একটু নির্জনতা, একটু প্রকৃতি, আর অনেকটা মানসিক শান্তি—এটাই হয়ে ওঠে তাঁদের পুজো কাটানোর পথ। আপনিও যদি হন সেই ‘দ্বিতীয় পথের পথিক’, তাহলে আপনার জন্য রইল পুজোর ছুটিতে ঘুরে আসার মতো তিন নিরিবিলি, অথচ কলকাতার খুব কাছের গন্তব্যের ঠিকানা। এই সব জায়গায় পৌঁছতে চারচাকাই যথেষ্ট। শহর থেকে বেশি দূর নয়, অথচ একবার পৌঁছলে যেন আর এক পৃথিবী।  

• ভঞ্জনগরঃ দু’টি দিন প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে চাইলে চলুন ওড়িশার ভঞ্জনগরে। পাহাড় ঘেরা জলাধারকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে রাজ্য সরকারের নেচার ক্যাম্প। অ্যাডভেঞ্চার করতে চাইলে অবশ্য ক্যাম্প পাততে পারেন জলাধারের অদূরেই। গুনে গুনে পর্যটনকেন্দ্র দেখতে চাইলে অবশ্য এই জায়গা মনমতো হবে না। ভঞ্জনগর ভাল লাগবে তাঁদের, যাঁরা বেড়াতে গিয়ে অলসযাপন পছন্দ করেন, স্থানীয় খাবারের স্বাদ পেতে চান, আর কোনও সুন্দর জায়গায় থেকে আড্ডা-গল্পে সময় কাটাতে চান। গঞ্জাম জেলার ভঞ্জনগর শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে তৈরি হয়েছে দহ জলাধার। পাহাড় এই স্থানের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে। শীতের মরসুমে জলাধারের আশপাশে পিকনিক দলের ভিড় জমে। এখানকার মূল আকর্ষণই এই জলাধার। এখান থেকে ঘুরে নিতে পারেন বিজু পট্টনায়ক পার্ক, প্ল্যান্ট রিসার্চ সেন্টার, বেলেশ্বর মন্দির। দহ জলাধারের কাছেও রয়েছে নেচার ক্যাম্প। পক্ষী পর্যবেক্ষণ, হেঁটে আশপাশ উপভোগ করার জন্য এটি দারুণ জায়গা।

কী ভাবে যাবেন? 

চারচাকায় সফর মানে তো শুধু গন্তব্যে পৌঁছনো নয়! বরং দেখতে দেখতে যাওয়া যায় বিভিন্ন স্থান। ভঞ্জনগর যেতে হলে কলকাতা থেকে পাড়ি দিতে হবে ব্রহ্মপুর। দূরত্ব ৬১০ কিলোমিটার। কলকাতা থেকে খড়্গপুর, বালেশ্বর, ভদ্রক, কটক, খুরদা হয়ে ভঞ্জনগর। ভদ্রক বা কটকে রাত্রিবাস করতে পারেন। হাতে সময় থাকলে বালেশ্বর হয়ে আসার সময় দেখে নিতে পারেন চাঁদিপুর। 

• পত্রাতুঃ সিকিমের রেশমপথের মতো পাহাড়কে পাক খেয়ে উঠেছে সর্পিলাকার রাস্তা। পথের সৌন্দর্য উপভোগ্য হয়ে ওঠে, বেশ কিছুটা উপরে ওঠার পর ভিউ পয়েন্টে দাঁড়ালে। চারপাশ জুড়ে ঢেউ খেলানো পাহাড়, আর দূরে দেখা যায় পত্রাতু জলাধার। রাঁচি শহর থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরের পত্রাতু ভ্যালিও হতে পারে পুজোর ছুটির গন্তব্য। এই স্থান অবশ্য একেবারে নির্জন নয়। পত্রাতু জলাধারের পাশেই রয়েছে ঝাড়খণ্ড পর্যটন দফতরের দু’টি থাকার জায়গা। পত্রাতু থেকেই ঘুরে নেওয়া যায় পালানি ফল্‌স, টেগোর হিল, কাঁকে জলাধার। এক রাত রাঁচি শহরে থেকেও ঘুরে নিতে পারেন হুড্রু, জোনা, দশম, লোধ জলপ্রপাত।

কী ভাবে যাবেন?

১৬ এবং১৮ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে গেলে কলকাতা থেকে রাঁচির দূরত্ব ৪০১ কিলোমিটার। যেতে ৯-১০ ঘণ্টা লাগবে। রাঁচি থেকে পত্রাতু আরও ঘণ্টাখানেকের পথ। কলকাতা থেকে খড়্গপুর, লোধাশুলি, ধলভূমগড়, ঘাটশিলা, গালুডি পার করে টাটা রোড ধরে পৌঁছতে হবে রাঁচি। লোধাশুলিতে অরণ্যের মধ্যেও রাত্রিবাসের ব্যবস্থা আছে। এক রাত সেখানে বা ঘাটশিলায় থেকে আশপাশের দর্শনীয় স্থান ঘুরে নিতে পারেন।

কোথায় থাকবেন?

ঝাড়খণ্ড পর্যটন দফতরের দু’টি থাকার জায়গা। পত্রায়ন বিহার ও সরোবর বিহার। রাঁচিতে অসংখ্য হোটেল আছে স্টেশনের কাছেই। 

• দুয়ারসিনিঃ  জঙ্গলের ভিতর ছোট ছোট কটেজে রাত কাটানোর অ্যাডভেঞ্চারের টানে এখন অনেকেই ছুটে যাচ্ছেন পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রামের দিকে। তেমনই একটি স্থান দুয়ারসিনি। জায়গাটি বাংলা ও ঝাড়খন্ডের সীমান্তে। ছোট ছোট পাহাড়ের মাঝে রয়েছে শাল-পিয়াল-শিমুলের বন। দুয়ারসিনির কাছেই বয়ে চলছে সাতগুড়ুম নদী। সেখানেই পাখ-পাখালি দেখতে দেখতে নিরিবিলিতে কাটিয়ে দেওয়া যায় সময়। আদিবাসী গ্রামও ঘুরে দেখতে পারেন। ভাগ্য ভাল থাকলে বনে নজরে পড়তে পারে বিভিন্ন বন্যপ্রাণী। গাড়ি নিয়ে ঘুরে নিতে পারেন টটকো জলাধার। ঘুরে নিতে পারেন ১১৬ কিলোমিটার দূরে আর এক স্থান হাতিবাড়িও।

কী ভাবে যাবেন?

কলকাতা থেকে বাগনান, খড়্গপুর, লোধাশুলি, ধলভূমগড়, ঘাটশিলা হয়ে দুয়ারসিনি। দূরত্ব ২৬২ কিলোমিটার। টানা গেলে ঘণ্টা ছয়েক সময় লাগবে। তবে শুধু গন্তব্য ভ্রমণের লক্ষ্য না হলে, প্রথম বিরতিটি নিতে পারেন লোধাশুলিতে। আরণ্যক পরিবেশে বেশ কিছু ক্ষণ কাটাতে পারেন। ঘাটশিলাতেও দেখে নিতে পারেন গালুডি ড্যাম। দুয়ারসিনি থেকে ফেরার সময় এক রাত রাখতে পারেন ঘাটশিলার জন্যও। এখানেও অনেক কিছুই দেখার আছে।

কোথায় থাকবেন?

দুয়ারসিনির আরণ্যক পরিবেশে থাকতে চাইলে বনোন্নয়ন নিগমের কটেজ সবচেয়ে ভাল। তবে জায়গা না পেলে ঘাটশিলায় থেকে আশপাশ ঘুরতে পারেন। কিংবা গালুডির আশপাশে কোথাও থাকতে পারেন।

 

You might also like!