দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: দার্জিলিং ও ডুয়ার্স মানেই ভিড় জমে ওঠা পর্যটনকেন্দ্র। কিন্তু এই পাহাড়-জঙ্গলের দেশেই আছে কিছু অজানা সৌন্দর্যের আস্তানা, যা আজও প্রচারের আড়ালে। যেখানে নেই হইচই, নেই কোলাহল—আছে শুধু প্রকৃতির মাধুর্য, সবুজ বনানী, পাখির কলতান আর নির্মল বাতাস। পুজোর ছুটিতে ভিড় এড়িয়ে যদি সত্যিই শান্তির আশ্রয় খুঁজে নিতে চান, তবে এই চার অফবিট ডেস্টিনেশন হতে পারে একেবারে যথাযথ।
১। কোলবংঃ দার্জিলিংয়ের খুব কাছেই পাহাড়ঘেরা অপূর্ব গ্রাম কোলবং। চারিদিকে দিগন্তবিস্তৃত সবুজে সাজানো পাহাড়। একটু দূরেই তাকালে দেখা মেলে সুন্দরী কাঞ্চনজঙ্ঘার। হাত বাড়ালেই মেঘ ছোঁয়া যায় এই গ্রামে। এককথায় প্রকৃতি যেন নিজহাতে সাজিয়েছে ছোট্ট এই গ্রামকে। শিলিগুড়ি থেকে এই গ্ৰামের দূরত্ব প্রায় ১০২ কিলোমিটার। এনজেপি কিংবা শিলিগুড়ি জংশন স্টেশন থেকে সরাসরি একটি রিজার্ভ প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করে চলে আসা যায় এখানে।
২। বারমেকঃ কালিম্পংয়ের কাছেই একটা ছোট্ট গ্রাম। যেখানে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার সাধ মিটবে ঘরে বসেই। এখানকার ঠান্ডা বাতাস এক নিমিষে ভুলিয়ে দিতে পারে নিত্যদিনের কোলাহল, ব্যস্ততাকে। এখান থেকে সিকিমের একটা অংশ দেখা যায়। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন কিংবা বাগডোগরা এয়ারপোর্টে নেমেই সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছে যেতে পারবেন বারমেকে। মোটে ৬৫-৭০ কিলোমিটার।
৩। দারাগাঁওঃ কালিম্পং পার করে এগোলেই দারাগাঁও। রামধুরার পরই দারাগাঁও। চারিদিক ঢাকা ঘন সবুজ পাহাড়। দারাগাঁওকে ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে পাইন আর সিঙ্কোনা। দারাগাঁওয়ের কোলে বসে দেখা যায় দার্জিলিং, কালিম্পং ও সিকিমের পাহাড়। দারাগাঁওতে স্টে করে সহজেই ঘুরে নিতে পারবেন ইচ্ছেগাঁও, সিলেরিগাঁও, রামধুরা।
৪। গুরদুমঃ মানেভঞ্জন থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে এক ছোট্ট গ্রাম। শিলিগুড়ি থেকে সুখিয়া পোখরি হয়ে মানেভঞ্জন চলে যান। সেখান থেকে ব্রেক করে গুরদুমে পৌঁছতে হবে। দার্জিলিং থেকে যেতে চাইলে শেয়ার ক্যাব করে নিন সুখিয়া পোখরি অবধি। সেখান থেকে আবার গাড়ি নিয়ে গুরদুম। এখান থেকে টুমলিং, শ্রীখোলা, টোংলু, ধোত্রের মতো ডেস্টিনেশনগুলো কাছে।
∆ খরচঃ
কোলবং, বারমেক হোক কিংবা দারাগাঁও, গুরদুম, এই প্রত্যেকটি জায়গাতেই বাগডোগরা এয়ারপোর্ট কিংবা এনজেপি স্টেশন থেকে যেতে হলে গাড়ি ভাড়া করতে হবে। চাইলে শেয়ার গাড়িও পেয়ে যেতে পারেন সেখানে। পুরো গাড়ি ভাড়া করলে খরচ প্রায় প্রায় ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকার মধ্যে। শেয়ার গাড়িতে গেলে মাথাপিছু খরচ অনেকটা কম পড়বে।
হোমস্টেগুলিতে মাথাপিছু খরচ ১৭০০ টাকা থেকে আড়াই হাজার নিত্যদিন। লাঞ্চ ছাড়া ব্রেকফাস্ট এবং ডিনার থাকবে প্যাকেজে। কোনও কোনও হোমস্টেতে সান্ধ্যকালীন খাবার কমপ্লিমেন্ট (বিনামূল্যে) হিসেবে পেয়ে যেতে পারেন। তবে মরশুম অনুযায়ী রেট পরিবর্তন হতে পারে। সব মিলিয়ে যে অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরবেন, তাতে মন চাঙ্গা হবে আলবাত!