দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২৫: আজ ৩১ মে, বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-র নেতৃত্বে পালিত এই দিনটির মূল লক্ষ্য হল তামাক ও নিকোটিনজাত পণ্যের ব্যবহারের মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং একটি তামাকমুক্ত বিশ্ব গঠনে ব্যক্তি, সমাজ এবং রাষ্ট্রকে ঐক্যবদ্ধ করা। 2025 সালে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য হল " আবেদন উন্মোচন: তামাক ও নিকোটিন পণ্যের উপর শিল্প কৌশল উন্মোচন "। এই প্রতিপাদ্যটি তামাক ও নিকোটিন শিল্পগুলি তাদের অনিরাপদ পণ্যগুলিকে আকর্ষণীয় করে তুলতে, বিশেষ করে তরুণদের কাছে, ব্যবহৃত বিভ্রান্তিকর কৌশলগুলি প্রকাশ এবং চ্যালেঞ্জ করার উপর দৃষ্টি আকর্ষণ করে।এই প্রচার অভিযানের মাধ্যমে তামাক কোম্পানিগুলোর চমকপ্দ প্যাকেজিং, ফ্লেভার যুক্ত পণ্য, সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ব্যবহার এবং অন্যান্য অনৈতিক কৌশলের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
🔻 তামাকের ক্ষতিকর প্রভাবঃ
বিশ্বব্যাপী প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হলো তামাক ব্যবহার। WHO-এর তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর প্রায় ৮০ লক্ষ মানুষ তামাকজনিত রোগে মারা যায়। এর মধ্যে অনেকেই পরোক্ষ ধূমপানের শিকার।
🔻 তামাকের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষতিকর দিক:
ক্যান্সার: তামাক সেবন অনেক ধরণের ক্যান্সারের, বিশেষ করে ফুসফুসের ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ। এটি মুখ, গলা, খাদ্যনালী, মূত্রাশয় এবং অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারও সৃষ্টি করতে পারে।
শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা: তামাক সেবনের ফলে দীর্ঘস্থায়ী বাধাজনিত পালমোনারি রোগ (সিওপিডি), এমফাইসেমা এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্রঙ্কাইটিস হতে পারে।
হৃদরোগ: ধূমপান হৃদরোগের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এটি রক্তনালী এবং হৃদপিণ্ডের কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত করে।
পরোক্ষ ধূমপান: ধূমপায়ী নন এমন ব্যক্তিরাও ধূমপানের সংস্পর্শে আসেন এবং হৃদরোগ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ সহ বেশ কিছু স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হন।
গর্ভাবস্থা: গর্ভাবস্থায় তামাক ব্যবহারের ফলে গর্ভপাত, অকাল প্রসব, কম ওজনের শিশু জন্মানো এবং শিশুদের বিকাশগত সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়। গর্ভাবস্থায় পরোক্ষ ধূমপানের সংস্পর্শে আসার ফলে অনেক জটিলতার ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
🔻 বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের গুরুত্বঃ
এই দিনটি কেবল একটি প্রতীকী উদ্যোগ নয়, বরং এটি তামাকবিরোধী সচেতনতা এবং আইনি পদক্ষেপ জোরদার করার এক গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের মাধ্যমে সরকার ও স্বাস্থ্য সংস্থাগুলোকে নীতিনির্ধারণে উদ্বুদ্ধ করা হয়; সাধারণ মানুষকে ধূমপান ত্যাগে অনুপ্রাণিত করা হয়; তরুণ সমাজকে তামাকের প্রলোভন থেকে দূরে রাখার বার্তা দেওয়া হয় এবং তামাক বিরোধী আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন ও তদারকিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
১৯৮৭ সালে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্য রাষ্ট্রগুলি বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্যের উপর তামাক ব্যবহারের ধ্বংসাত্মক প্রভাব (মৃত্যু এবং রোগ) সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য 'বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস' প্রতিষ্ঠা করা হয়। তাই তামাক সেবনের সামাজিক ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব থেকে মুক্ত থাকার জন্য সকলকে সচেতন হতে হবে। ধূমপান বা তামাক সেবন ছেড়ে দিয়ে নিজেকে এবং প্রিয়জনদের রক্ষা করুন। এই দিবসে আসুন আমরা সকলে মিলে প্রতিজ্ঞা করি – তামাক নয়, বেছে নিই এক সুস্থ জীবন!