জলই জীবন
কথায় আছে, জলই জীবন। আর এই কথাটা কিন্তু একশো শতাংশ সত্যি। কারণ যেই রক্তের মাধ্যমে শরীরের প্রতিটি কোণে পুষ্টি এবং অক্সিজেন পৌঁছে যায়, তা তৈরি হয় জলের মাধ্যমে। শুধু তাই নয়, দেহ থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দেওয়া, একাধিক উৎসেচক এবং হরমোন তৈরি, বিপাকের হার নিয়ন্ত্রণ সহ নানাবিধ জটিল কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে জল। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে নিয়মিত জল খেতেই হবে।
খাওয়ার আগে জলপান করলে কি হজম ক্ষমতা বাড়ে?
খাওয়ার আগে জলপান কোনও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। বরং এই ভুলটা করলে খাবার হজম হতেই সমস্যা হবে। কারণ খাবারকে হজম করার জন্য আমাদের পাকস্থলীতে বেরয় লঘু হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড। এবার আপনি যদি খাবার খাওয়ার আগেই অনেকটা জল খেয়ে নেন, তাহলে এই অ্যাসিডের কার্যকারিতা কিছুটা হলেও কমে যাবে। ফলে খাবার ঠিকমতো হজম হতে চাইবে না। উল্টে পিছু নেবে গ্যাস, অ্যাসিডিটি, বদহজমের মতো সমস্যা। তাই অহেতুক খাওয়ার আগে জলপান করার ভুল করবেন না।
খাওয়ার পর জল খেলে চিন্তা নেই
খাবার খাওয়ার আগে একান্তই জল তৃষ্ণা চাপলে এক থেকে দুই চুমুক জল খেয়ে নিন। তারপর ঠিক ১০ থেকে ১৫ মিনিট বাদে খাবার খান। আর চেষ্টা করুন খাবার খাওয়ার পরপর জলপান না করার। পরিবর্তে খাওয়ার ১৫ মিনিট পর করুন জলপান। আশা করছি, এই নিয়মটা মেনে চললেই চট করে খাবার হজম হয়ে হবে। এমনকী শরীরের পিছু নেবে না একাধিক পেটের অসুখ।
দিনে কতটা জলপান করবেন?
ভ্যাপসা গরম পড়েছে বাংলায়। ফলে খুব ঘাম হচ্ছে। আর ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে জল এবং জরুরি কিছু খনিজ। তাই এই সময় অন্ততপক্ষে ৩ লিটার জলপান করুন। আর যাঁরা এই গরমের মধ্যে বাইরে বেরিয়ে কাজ করছেন, তাঁরা দিনে অন্তত এক লিটার ওআরএস জলপান করুন। তাতেই কিন্তু শরীরে ইলোকট্রোলাইটসের ব্যালেন্স বজায় থাকবে। তাই আজ থেকেই এই নিয়মটা মেনে চলুন।
ডায়েটে নজর দিন
হজমশক্তি বাড়াতে চাইলে ফাস্টফুড এবং ঘরে তৈরি তেল, মশলা সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া ছাড়তে হবে। তার বদলে পাতে রাখুন ফাইবারে পরিপূর্ণ শাক, সবজি এবং ফলের মতো উদ্ভিজ্জ খাবার। সেই সঙ্গে নিয়মিত সেবন করুন প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ টক দই। আশা করছি, এই কয়েকটি নিয়ম মেনে চললেই আপনি সুস্থ থাকবেন।
তবে গ্যাস, অ্যাসিডিটির সমস্যা কিছুতেই কমতে না চাইলে বা দিনের পর দিন সমস্যা বাড়তে থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তাঁর পরামর্শ মতো ওষুধ খান। আশা করছি, এই কাজটা করলেই আপনার সুস্থ থাকার পথ প্রশস্থ হবে।