দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: সোমবার মুর্শিদাবাদের তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করে ইডি। সেদিন শুধু তাঁর নিজ বাসভবনেই নয়, পাশাপাশি আত্মীয়-পরিজনের বাড়ি-সহ মোট পাঁচটি স্থানে একযোগে তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় সংস্থা। জীবনকৃষ্ণর শ্বশুরবাড়ি, পিসির বাড়ি, এক বেসরকারি ব্যাঙ্ককর্মীর বাড়ি এবং ‘মিডলম্যান’ প্রসন্ন রায়ের শ্বশুরবাড়ি সহ একাধিক জায়গায় ইডির আধিকারিকরা হানা দেন। মুর্শিদাবাদের বড়ঞার মহিষগ্রামে জীবনকৃষ্ণর বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে থাকা ব্যাঙ্ককর্মী রাজেশ ঘোষের বাড়িতেও তল্লাশি চলে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে বিস্তৃত এই অভিযানে বিপুল চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।
অন্যদিকে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের পিয়ারাপুর মধ্যপাড়ায় তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার শ্বশুরবাড়ি। এদিন সেখানেও তল্লাশি চালায় ED। বড়ঞার তৃণমূল বিধায়কের শ্যালক নিতাই সাহা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। ঘণ্টা চারেক ধরে তল্লাশির পর, বিধায়কের শ্বশুরবাড়ি থেকে বেরিয়ে যান ED-র অফিসাররা। মুর্শিদাবাদের পাশাপাশি, শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বীরভূমেও অভিযান চালায় কেন্দ্রীয় এজেন্সি। সাঁইথিয়া পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মায়া সাহা সম্পর্কে তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার পিসি হন। এদিন তাঁর বাড়িতে যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা।
তল্লাশির সময় তৃণমূল কাউন্সিলরের বাড়িতে ঢুকতে যান সাঁইথিয়া থানার অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর দীনেশ মুখোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁকে প্রথমে বাধা দেয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। এরপর পুলিশ কর্মীর বডি ক্যাম খুলিয়ে তাঁকে তৃণমূল কাউন্সিলরের বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়। ধৃত বিধায়কের পিসি, তৃণমূল কাউন্সিলর মায়া সাহা বলেন, 'জীবন সাহা আমার ভাইপো, রক্তের সম্পর্ক। কিন্তু ও তো আমার ভাইপো বটে, যতই হোক। ও কী করেছে না করেছে, সেটা তো বলতে পারব না ..; ED এসে সব দেখল, তল্লাশি করল, কিন্তু কিছু পায়নি, খুব আনন্দ হল'
সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর তৃণমূল কাউন্সিলরের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান ED-র আধিকারিকরা। কেন্দ্রীয় এজেন্সি সূত্রে খবর, ২৮ অগাস্ট, কলকাতায় তলব করা হয়েছে বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার পিসি, সাঁইথিয়ার তৃণমূল কাউন্সিলর মায়া সাহাকে। এই আবহে আবার চাঞ্চল্য়কর দাবি করেছেন ধৃত তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাবা।
ধৃত জীবনকৃষ্ণ সাহার বাবা বিশ্বনাথ সাহা বলেন, 'রেড হওয়ার দরকার আছে। প্রচুর সম্পত্তি করেছে মায়া সাহা। একটা লজ, এম বাজার ...জানে ইডিরা? ....জানে না। আমার জায়গাটা বেনামে কিনে রেখেছে। মায়া সাহার বাড়ির পিছনের জায়গাটা...ওর শালা সম্বন্ধির নামে কিনে রেখে দিয়েছে। এমএলএ হয়েই তো করল। যা উপদ্রব, আমি তো থাকতেই পারব না যদি ওর কিছু না হয় ! '
মুর্শিদাবাদ, বীরভূমের পাশাপাশি, এদিন পুরুলিয়াতেও হানা দেয় ED। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নিমটাঁড় এলাকায় মিডলম্যান প্রসন্ন রায়ের শ্বশুরবাড়িতে যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী অফিসাররা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রসন্ন রায়ের স্ত্রী নীলিমা রায় এবং তাঁর দুই বোনই স্কুল শিক্ষিকা। ED সূত্রে খবর, SSC-র নবম-দশমে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এদিন রাজারহাটেও তল্লাশি চালানো হয়।