দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক :শৃঙ্খলা হল প্রতিটি সাফল্যের ভিত, আর এই গুণের বীজ বপন করতে হয় জীবনের একেবারে গোড়ার দিকেই। ছোটবেলাই শেখার শ্রেষ্ঠ সময়, যখন মনের জমি সবচেয়ে উর্বর। সেই সময় থেকেই যদি সঠিক উপায়ে শৃঙ্খলার শিক্ষা দেওয়া যায়, তাহলে তা গভীরভাবে মনের ভিতরে গেঁথে যায়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই অভ্যাস গড়ে তোলা যতটা কঠিন, ছোট বয়সে তা গড়ে তোলা ঠিক ততটাই সহজ। আর সেই দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে বাবা-মায়েরই। যারা সদ্য অভিভাবক হয়েছেন, তারা এখন থেকেই শিশুকে শৃঙ্খলার পথে চালিত করতে পারেন। তবে তা করতে গেলে কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলা খুবই জরুরি।
১. নিজেই আদর্শ হোন
শিশুরা দেখে শেখে সবচেয়ে বেশি। তাই আপনি নিজের আচরণের দিকে খেয়াল রাখুন সবার আগে। ওদের শৃঙ্খলা শেখাতে চাইলে নিজে সেই শৃঙ্খলা মেনে চলুন। এটা কঠিন কাজ। কিন্তু উভয়ের জন্যই ভাল।
২. নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি করুন
আগে থেকেই কিছু নিয়ম তৈরি করুন। যা ধারাবাহিক ভাবে মেনে চলতে হবে। সকালের দাঁতমাজা থেকে শুরু করে রাতে খেয়ে যাওয়া এমনকি খেলাধুলোর সময় সবকিছু একটি নিয়মের আকড়ে বেঁধে ফেলুন। এই নিয়ম সন্তানের বয়স অনুযায়ী বদলাবে। কিন্তু নিয়ম মানতে হবে। কেন ওই নিয়ম বানাচ্ছেন তার কারণও বুঝিয়ে বলুন সন্তানকে। তাতে সেই নিয়ম মেনে চলতে তাদের সুবিধা হবে।
৩. নিয়ম ভাঙার ‘শাস্তি’ও আগেই ঠিক করুন
নিয়ম মানা যেমন জরুরি। তেমনই নিয়ম অমান্য করার পরিণতিও ভুগতে হবে। সেই পরিণতি কী, তা আগে থেকেই ঠিক করুন। যেমন সময়ে পড়াশোনা শেষ না করলে বাড়ির কোনও কাজে সাহায্য করতে হবে। বা খেলার সময় বাড়লে কোনও একটি ঘর পরিষ্কার করতে হবে।
৪. ভাল কাজের স্বীকৃতি
‘শাস্তি’ যেমন জরুরি, তেমনই জরুরি পুরষ্কারও। তাই কোনও কাজ ভাল হলে তার প্রশংসা করুন। বা পুরষ্কৃত করুন। এতে ভাল কাজে আরও বেশি উৎসাহী হবে আপনার সন্তান।
৫. সমস্যা সমাধানের শিক্ষা
শৃঙ্খলার অর্থ শুধু কিছু পূর্বনির্ধারিত নিয়ম মেনে চলা নয়। স্বাবলম্বী হওয়াও তার মধ্যে পড়ে। তাই সন্তানকে নিজের সমস্যার সমাধান নিজেকেই করতে দিন। প্রয়োজনে সাহায্য করুন। কিন্তু সমাধান ওঁদেরই করতে দিন।
৬. অসুবিধা গুলি শুনুন
আপনার সন্তান কোনও বিষয়ে কী ভাবছে, সে একটি বিষয়কে কোন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখছে বা কোনও বিষয়ে তাঁর উদ্বেগ হচ্ছে কি না, সেগুলি শুনুন। দরকার হলে তার জন্য আলাদা একটা সময় বার করুন। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের শিক্ষাও এ থেকে পাবে আপনার সন্তান।
৭. ধারাবাহিকতা এবং ধৈর্য
শৃঙ্খলার আসল চাবিকাঠি হলো ধারাবাহিকতা আর সেই ধারাবাহিকতার জন্য দরকারি হল ধৈর্য। এই ধৈর্য দু’পক্ষেরই থাকা দরকার। বিশেষ করে সন্তান যখন শিখছে, তখন বাবা-মাকেই আরও বেশি ধৈর্যশীল হতে হবে। সন্তান ভুল করবেই।কিন্তু সেই ভুল গুলি শুধরে দেওয়ার পরে সেটা ঠিক রাখার চেষ্টা কতটা করছে, সে দিকে খেয়াল রাখুন। আর দেখুন, যে নিয়ম তৈরি করেছেন, তার ধারাবাহিকতা বজায় থাকছে কি না। তা হলেই বুঝবেন সন্তান ঠিক পথে এগোচ্ছে।