দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃরাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে সরিয়ে দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে গেছে। আদর্শ আচরণবিধি লাগু হওয়ার পরই বড় পদক্ষেপ নিল নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের স্বরাষ্ট্রসচিবকেও অপসারণের নির্দেশ। মিজোরাম, হিমাচল প্রদেশের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডিপার্টমেন্টের সচিবকেও সরানোর নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
গত ডিসেম্বরে রাজ্য পুলিশের নয়া ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি) হিসাবে নিয়োগ করা হয় রাজীব কুমারকে। রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। একটা সময়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীবকে নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। সেই আইপিএস অফিসারকে রাজ্য পুলিশের সর্বোচ্চ পদে নিয়োগ করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন ঠিক হয়েছিল, আপাতত তিনি ভারপ্রাপ্ত ডিজি হিসেবেই কাজ করবেন।
কলকাতা পুলিশের কমিশনার থাকাকালীন একাধিক বিতর্কে নাম জড়িয়েছিল রাজীবের। ২০১৩ সালে সারদা অর্থ লগ্নি সংস্থার মামলায় তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল ‘সিট’ গঠন করে রাজ্য। ‘সিট’-এর দৈনন্দিন কাজকর্ম দেখার দায়িত্বে ছিলেন বিধাননগরের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। ২০১৩ সালে সারদাকাণ্ডে তৃণমূলের তৎকালীন সাংসদ এবং তৃণমূলের প্রাক্তন মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে গ্রেফতার করেছিলেন তিনি। কিন্তু ২০১৯ সালে সেই সারদা মামলাতেই রাজীবকে অভিযুক্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে নামে সিবিআই। তাঁর বিরুদ্ধে সারদা মামলার তথ্য লোপাটের অভিযোগ ওঠে। সেই সময় কলকাতা হাই কোর্ট থেকে আগাম জামিনও নিতে হয়েছিল রাজীবকে। সে বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাজীবকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তাঁর বাসভবনে যায় সিবিআই। এর প্রতিবাদে ধর্মতলায় মেট্রো চ্যানেলে ধর্না দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। সিবিআই দাবি করে, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে সারদা-সহ সমস্ত অর্থ লগ্নি সংস্থার টাকা ও সুবিধা কারা ভোগ করেছিলেন সে বিষয়ে তদন্ত করতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে রাজীব কুমার কোনও সহযোগিতা করেননি। একটা সময়ে এই সারদা তদন্তে শিলংয়ে রাজীব এবং কুণালকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই।
সম্প্রতি উত্তপ্ত সন্দেশখালিতে গিয়েছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। লঞ্চ থেকে নেমে টোটোয় চড়ে সন্দেশখালি থানায় পৌঁছন তিনি। তাঁর সঙ্গেই ছিলেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার এবং বসিরহাটের পুলিশ সুপার হোসেন মেহেদি রহমান।