kolkata

1 week ago

Loksabha Profile Jadavpur : মিমির ব্যাটন সায়নীর হাতে, চতুর্মুখী লড়াই নতুন সাংসদের খোঁজে যাদবপুর

Loksabha Profile Jadavpu
Loksabha Profile Jadavpu

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ সময় পরিবর্তনশীল। কোনও কিছুই থেমে থাকে না। তাই পাঁচ বছর আবার নতুনের খোঁজ। চতুর্মুখী লড়াইয়ে সন্ধান মিলতে পারে আগামী ৪ জুন ইভিএম খোলার পরেই। আর সে নিয়েই দিনভর মগ্ন যাদবপুর। বাংলা অন্যতম এলিট এই লোকসভা পাঁচ বছর আগে গ্ল্যামার দেখেছিল। পেয়েছিল সাংসদ-অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীকে। তিনি আজ প্রাক্তন।

শুরু হয়েছিল ক্যালকাটা সাউথ-ওয়েস্ট নামে। কিছুদিনের মধ্যে নাম হয়ে গেল আলিপুর। তারপর ১৯৭৭ সাল থেকে পাকাপাকি নাম হল যাদবপুর। যাদবপুর হওয়ার আগে পর্যন্ত এই কেন্দ্রের তারকার নাম ছিল প্রয়াত ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত। যাদবপুর হওয়ার পর এই কেন্দ্র থেকে দু বার করে জয়ী হয়েছিলেন বামেদের দুই হেভিওয়েট সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় এবং মালিনী ভট্টাচার্য।

১৯৮৪ সালে এক নেত্রীর উত্থান। তার ঠিক পাঁচ বছর পর ওই নেত্রীর হার দেখেছে এই যাদবপুর। সেই নেত্রী আজ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ১৯৯৬ সালে এই যাদবপুরই ফের কংগ্রেসকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন কৃষ্ণা বসু। একমাত্র তিনিই এই কেন্দ্র থেকে তিনবারের সাংসদ। একবার কংগ্রেসের টিকিটে আর দু বার তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে।

আজ থেকে দু দশক আগে শেষবার যাদবপুরে বামেদের মুখে হাসি ফুটেছিল। ফুটিয়েছিলেন সুজন চক্রবর্তী। তারপর শুধু রক্তক্ষরণের গল্পো। এরইমধ্যে এক বিরল পরিবর্তনের সাক্ষী একদা কলকাতা বর্তমানে দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই কেন্দ্র। ২০০৯ থেকে ২০১৯, কবীর সুমন, সুগত বসু থেকে মিমি চক্রবর্তী, তিন সাংসদ যাদবপুরের।

১৯৮০ সালে এই কেন্দ্র থেকে রেকর্ড ভোটে জিতেছিলেন প্রয়াত সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। পাঁচ বছর আগে তৃণমূলের মিমি চক্রবর্তীর হাতে সেই রেকর্ড চূর্ণ। ২০১৯ সালে যাদবপুর দূর্গে বাম প্রার্থী বিকাশ ভট্টাচার্যের পতন হয়েছিল ২ লাখ ১৩ হাজার ভোটে।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হুগলি জেলায় একটি সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই সভাতেই তৃণমূলের পতাকা তুলে নেন সায়নী ঘোষ। তারপর একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছিলেন তিনি। এর প্রায় ৪ বছর পরে যাদবপুর জিতে আসার দায়িত্ব পড়ল সায়নীর উপরেই। যদিও এর আগে একাধিক বিতর্ক তৈরি হয় সায়নীকে নিয়ে। প্রায় ৯ বছর আগে সায়নীর একটি টুইট ঘিরে তৈরি হয় বিতর্ক। তাতে লেগেছিল রাজনীতির রং। তারপর কেটেছে অনেকটা সময়। কিন্তু এখনও সেই বিতর্ক ধাওয়া করে সায়নীকে। চলতি লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে অন্য ছবিও ধরা পড়েছে। যেখানে দেখা গিয়েছে শিবমন্দিরে পুজো দিচ্ছেন তিনি। যদিও তারপরেই ফের কন্ডোম বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।

তাঁর বিপক্ষে CPIM-এর প্রার্থী হয়েছেন সৃজন ভট্টাচার্য। গত বিধানসভা নির্বাচনে সিঙ্গুর থেকে লড়াই করেছিলেন তিনি। ভোটের লড়াইয়ে হার মানতে হলেও রাজনীতির ময়দান থেকে সরে যাননি তিনি। বিগত কয়েক বছরে একাধিক আন্দোলনের মুখ ছিলেন সৃজন। নবান্ন অভিযানে যেমন খেয়েছেন পুলিশের মার তেমনই চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনেও বারেবারে পাশে দাঁড়াকে দেখা গিয়েছে তাঁকে। রাজনীতিতে 'গুড বয়' ইমেজ রয়েছে সৃজনের। নির্বাচনী প্রচারেও সৃজনের জনপ্রিয়তার বেশ কিছু নিদর্শনও দেখা গিয়েছে। তাঁকে দেখে আনন্দাশ্রু দেখা গিয়েছে বাম সমর্থকের চোখে। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, সেকারণেই যাদবপুরের মতো কঠিন আসনে লড়াই করার জন্য পাঠানো হয়েছে তরুন বাম নেতা। অনেকেই মনে করছেন এবার যাদবপুর কেন্দ্রে 'হাওয়া বদল' করতে পারেন সৃজন।

অন্যদিকে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে BJP-র প্রার্থী হয়েছেন অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়। গত বিধানসভা নির্বাচনে বোলপুরে বিজেপির টিকিটে লড়াই করেছিলেন তিনি। যদিও সেখানে হেরে গিয়েছিলেন। সূত্রের খবর, বিজেপির অন্দরে চানক্য নামেই পরিচিত তিনি। বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলার শিক্ষিত সমাজের কাছে বিজেপির আদর্শ প্রচারের জন্য অনির্বাণের গঙ্গোপাধ্যায়ের উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়। এবার যাদবপুরের মতো কঠিন কেন্দ্র জেতার জন্য তাঁর উপরেই ভরসা রেখেছে গেরুয়া শিবির।

গত লোকসভা কেন্দ্রে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে লড়াই করেছিলেন অভিনেত্রী মিমি। তাঁকে ঢেলে ভোট দিয়েছিলেন সেখানকার ভোটাররা। মিমি এবার নেই। তবে তাঁর জায়গায় রয়েছেন সায়নী ঘোষ। বিপক্ষে রয়েছে বামেদের 'গুড বয়' ইমেজের সৃজন এবং গেরুয়া শিবিরের অনির্বাণ। তবে কি এবার হাওয়া বদল হবে যাদবপুরে? নাকি কঠিন কেন্দ্র ফের নিজেদের দখলেই রাখতে পারবে জোড়াফুল? উত্তর মিলবে ৪ জুলাই।


You might also like!