কলকাতা, ৯ মে: সময়ের সঙ্গে সেই শিথিল হয়েছিল নিয়ম। তবে, ফের রবীন্দ্র সরোবরের গেটের বাইরে ‘পোষ্য নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না রবীন্দ্র সরোবরে’—এই নির্দেশিকা ও নিরাপত্তারক্ষীদের কড়া মনোভাবের জেরে ক্ষুব্ধ পোষ্যপ্রেমীরা। সরোবর রক্ষাকারী কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটিকে বিকল্প প্রস্তাব দিতে চলেছেন তাঁরা।
কাকভোর থেকেই প্রাতঃভ্রমণকারীরা পৌঁছে যান রবীন্দ্র সরোবরে। হাঁটাহাঁটি, ব্যায়াম মাঝে মধ্যে বিশ্রাম। তবে তার মাঝেই ঘটে বিক্ষিপ্ত সমস্যা। হাঁটার পথে যথেচ্ছভাবে রাস্তায় পড়ে থাকে কুকুরের মলমূত্র। দূষিত শহরে শুদ্ধ বাতাস নিতে এসে বিশ্রী গন্ধে নাকপাতা দায় হয়ে উঠেছে। কেউ কেউ আবার খেতে দেন, তার উচ্ছিষ্ট পড়ে থাকে। এইসব নোংরা পরিষ্কার করার দায় এসে পড়ে কেএমডিএ কর্তৃপক্ষের ঘাড়ে।
করোনার আগে বছর পাঁচ বন্ধ ছিল সরোবরে প্রবেশে। ফের শুরু হয়। এবার পোষ্যর বর্জ্যে অতিষ্ঠ হয়ে ফের নির্দেশিকা টাঙাল কেএমডিএ। নিরাপত্তারক্ষীরা সতর্ক। ফলে পোষ্য নিয়ে এলে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না ভিতরে। অনেক পোষ্যকে আশপাশের ফুটপাতের রাস্তায় মলমূত্র ত্যাগ করাচ্ছে মালিকরা। লেক রক্ষা করতে গিয়ে আশপাশের এলাকা অপরিচ্ছন্ন হয়ে উঠছে।
কেএমডি-এর এই সিদ্ধান্তে খুশি ভ্রমণকারীদের একাংশ৷ সৌমেন্দ্রমোহন ঘোষের কথায়, দেশের বিভিন্ন শহরে পৌরসভার নিয়ম আছে পোষ্যদের নিয়ে রাস্তায় বের হলে সঙ্গে রাখতে হয় বাধ্যতামূলকভাবে স্কুপ কিট ও জলের বোতল। নাহলে আর্থিক জরিমানা করা হয়। এখানে সেই সব নেই। মলমূত্র ত্যাগ করলে দায়িত্ব মালিকদের নিতে হবে।
তবে পোষ্যপ্রেমীদের এই সিদ্ধান্তে ব্যাপক ক্ষোভপ্রকাশ পেয়েছে। তাদের কথায়, মানুষ প্রাতঃভ্রমণ করতে যান সুস্থ থাকতে। দূষণের শহরে মুক্ত শুদ্ধ বাতাস নিতে। তাহলে পশুদেরও বেঁচে থাকার অধিকার আছে। তারাও শুদ্ধ বাতাস নিতে চায়। ভিতরে পথকুকুর ভর্তি। তারা মলমূত্র ত্যাগ করে সেটা তো আটকানো হচ্ছে না। এরা যদি খোলা জায়গা, মাটি না পায় তাহলে হাঁটতে চলতে তাদের অসুবিধা হয়। তাই এমন সিদ্ধান্ত অমানবিক।
আরও এক পোষ্যপ্রেমীর কথায়,"আমরা কর্তৃপক্ষকে বিকল্প প্রস্তাব দিচ্ছি। দেশের বিভিন্ন শহরে এদের জন্য পার্ক আছে। আমরা সরোবরে একটা নির্দিষ্ট জায়গা দেওয়ার জন্য আবেদন করব। নিজেদের টাকায় সেখানে বনায়ন করব সাজাব। সেখানে মলমূত্র পরিষ্কারের ব্যবস্থা করব। এমনকি পথ কুকুরদের খাওয়ানো, ওষুধ ও টিকাকরণের ব্যবস্থা করব। এই অমানবিক পদক্ষেপ নেওয়া চলবে না। আলোচনা করে বিকল্প প্রস্তাব মেনে নিক।"