দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক ঃ মৌসুমী অক্ষরেখা এবং নিম্নচাপের জোড়াফলা বঙ্গে। তার জেরে রাজ্যে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। গত দু’দিন ধরে দামোদর উপত্যকায় বিক্ষিপ্তভাবে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি চলছে। টানা বৃষ্টির ফলে ফের জল ছাড়ল ড্যামোদার ভ্যালি কর্পোরেশন (DVC)।
মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে মোট ৩৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া শুরু হল বলে খবর। জল ছাড়ার খবরে দুশ্চিন্তা বেড়েছে নিম্ন দামোদর উপত্যকার বাসিন্দাদের। আগামী দিনে আরও বৃষ্টি হলে কত পরিমাণ জল ছাড়া হবে? সেই প্রশ্নও উঠেছে।
মৌসম দফতর জানিয়েছে, আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সেই অনুযায়ী রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর এবং সেচ দফতর পুরো পরিস্থিতির উপর নজরদারি চালাচ্ছে। নিচু এলাকার মানুষদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
গত দু’দিন ধরে দামোদর উপত্যকা অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টি চলছে। বিহার ও ঝাড়খণ্ডেও বৃষ্টি হচ্ছে। ঝাড়খণ্ডের তেনুঘাট ও তিলিয়া বাঁধ থেকে জল ছাড়া শুরু হয়েছে। সেই জল এসে জমা হচ্ছে মাইথন ও পাঞ্চেতে। ফলে এই দুই বাঁধেও জলের পরিমাণ বাড়ছে। সে কারণেই এই দুই বাঁধ থেকে জল ছাড়া শুরু হয়েছে বলে দাবি করেছে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। বরাকর উপত্যকায় মঙ্গলবার রাতে বৃষ্টি হয়েছে ২০ মিলিমিটার। আজ বুধবারও বৃষ্টি চলছে পূর্ব বর্ধমানের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। আজ ও আগামিকাল ভারী বৃষ্টির আগাম সতর্কতার কথাও জানানো হয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। বৃষ্টি বাড়লে পরিস্থিতি কী হতে পারে? সেই চর্চা শুরু হয়েছে।
ফি বছর ডিভিসির ছাড়া জলে নিম্ন দামোদর উপত্যকায় বন্যা দেখা যায় বলে অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহুবার অভিযোগ করেছেন, রাজ্যকে না জানিয়ে ডিভিসি জল ছেড়ে দেয়। পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া, হুগলির বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়। ঘাটালেও বন্যা হয়। গতবারও সেই ভয়াল ছবি দেখা গিয়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকার চাষের জমি, পুকুর, বাড়ি জলের তলায় চলে যায়। সব কিছু হারিয়ে বন্যা দুর্গতদের দিনের পর দিন ত্রাণশিবিরে থাকতে হয় বলে অভিযোগ। প্রচুর টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। কেন্দ্রীয় সরকার কেন পলি তুলে জলাধার সংস্কার করছে না? সেই প্রশ্নও মুখ্যমন্ত্রী একাধিক বার তুলেছেন। রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছাড়ার অভিযোগ ডিভিসি প্রথম দিকে মানতে চায়নি। যদিও পরে ডিভিসি জানায়, এরপর থেকে রাজ্যকে জানিয়েও জল ছাড়া হবে।
বর্ষার প্রথমেই ডিভিসি জল ছাড়তে শুরু করেছে। আর কত জল ছাড়া হবে? প্রচুর পরিমাণ জল ছাড়লে পরিস্থিতি কী হবে? সেই আশঙ্কা থাকছে। প্রশাসনও পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে বলে খবর।