দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ কয়েক মাস বিলম্বের পর যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে গতকাল মঙ্গলবার সহজেই পাস হলো বৈদেশিক সহায়তা বিল। ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর অগ্রাভিযান ও কিয়েভের সামরিক সরবরাহে ঘাটতি চলার মধ্যে এ বিল পাস হওয়ার ফলে ইউক্রেনকে নতুন করে তহবিল জোগান দেওয়ার পথ সুগম হলো।
কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেট এদিন ইউক্রেন, ইসরায়েল, তাইওয়ান ও ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন অংশীদারদের ৯৫ বিলিয়ন (৯ হাজার ৫০০ কোটি) ডলারের প্রধানত সামরিক সহায়তা দেওয়া নিয়ে চারটি বিলে অনুমোদন দেয়। বিলগুলো অনুমোদিত হয় ৭৯-১৮ ভোটে।
এর আগে গত শনিবার কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান নেতারা এসব বিল নিয়ে নিজেদের অবস্থান আকস্মিকভাবে বদলে ফেলেন ও ভোটাভুটিতে সেগুলো পাস করেন।
সিনেটে বিল চারটি একটি প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত করে উপস্থাপন করা হয়। প্রথম বিলে ইউক্রেনে জরুরিভিত্তিতে তহবিল জোগানের লক্ষ্যে সবচেয়ে বেশি অঙ্কের ৬১ বিলিয়ন (৬ হাজার ১০০ কোট) ডলার সহায়তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। দ্বিতীয় বিলে ইসরায়েলকে ও বিশ্বজুড়ে সংঘাতকবলিত অঞ্চলের বেসামরিক লোকজনকে মানবিক সহায়তা হিসেবে ২৬ বিলিয়ন (২ হাজার ৬০০ কোটি) ডলার এবং তৃতীয় বিলে ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ‘চীনের প্রভাব মোকাবিলায়’ ৮ দশমিক ১২ বিলিয়ন (৮১২ কোটি) ডলার সহায়তা দেওয়ার বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
চতুর্থ বিলটি গত সপ্তাহে ওই প্যাকেজে যুক্ত করে প্রতিনিধি পরিষদ। এ বিলে চীনা নিয়ন্ত্রিত সামাজিক মাধ্যম অ্যাপ টিকটক নিষিদ্ধ করা, ইউক্রেনে জব্দ করা রাশিয়ার সম্পদ স্থানান্তরে পদক্ষেপ নেওয়া ও ইরানে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ইউক্রেন ও ইসরায়েলকে সহায়তা দেওয়াসংক্রান্ত বিল দুটি নিয়ে অনেক দিন ধরে নানা মহলে আলোচনা–সমালোচনা চলছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ সহায়তা প্রস্তাব নিয়ে চাপে ছিলেন। পরে প্রতিনিধি পরিষদে বিল দুটি পাস হওয়ার ঘটনাকে বাইডেনের বড় বিজয় হিসেবে দেখেন বিশ্লেষকদের অনেকে। এখন সিনেটও বিলগুলো অনুমোদন দিল।
এসব বিল কার্যকর হওয়ার জন্য সিনেটের অনুমোদন প্রয়োজন ছিল। এখন বাইডেনের সইয়ের জন্য বিলগুলো তাঁর কাছে পাঠানো হবে। তাঁর সইয়ের পর বিল আইনে পরিণত হবে। তখন ইসরায়েল ও ইউক্রেনকে সামরিক এবং মানবিক সহায়তা দিতে বাইডেন প্রশাসনের সামনে আর কোনো বাধা থাকবে না।
এদিকে দুজন মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনও বিলগুলো তাঁর টেবিলে পৌঁছানোর পর দ্রুত সেগুলো সই করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এরই মধ্যে তাঁর প্রশাসন ইউক্রেনকে ১ বিলিয়ন (১০০ কোটি) ডলারের সামরিক সহায়তা প্যাকেজ দেওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করেছে।