দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলাদেশ সরকার তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে চাইছে। চিন ও ভারতের মধ্যে চলছে ঠান্ডা লড়াই চলছে এই প্রকল্প নিয়ে। এদিকে বেজিং বাংলাদেশকে তিস্তা প্রকল্পে বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে দিল্লি এনিয়ে আপত্তির কথা জানিয়েছিল। ভারতের বিদেশসচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রাএর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী। বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী জানান ভারত অর্থ দিতে চাইছে এই প্রকল্পে।
প্রসঙ্গত, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে চাইছে বাংলাদেশ। কিন্তু এই প্রকল্প করা নিয়ে চিন এবং ভারতের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই চলছে। ইতিমধ্যেই বেজিং তিস্তা প্রকল্পে বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তি সহযোগিতা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশকে। চলতি বছরের জানুয়ারিতেই ঢাকাকে এই প্রস্তাব দেয় চিন। তবে এনিয়ে আপত্তির কথা জানিয়েছিল দিল্লি।
মে মাসেই ঢাকা গিয়ে ভারতের বিদেশসচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং বিদেশসচিব মাসুদ বিদ মোমেনের সঙ্গে। তারপরেই বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী দাবি করেন, তিস্তায় যে বৃহৎ প্রকল্প করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তাতে অর্থ দিতে চাইছে ভারত।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নে বেজিংয়ের তাড়া দিতেই দিল্লি আপত্তি জানিয়েছিল। এনিয়ে ঢাকার দ্বিধাও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আর এরই মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানান, তিস্তা পাড়ের মানুষের দুঃখ লাঘব করার জন্য ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বুধবার, জাতীয় সংসদে কুড়িগ্রাম-২ আসনের সাংসদ হামিদুল হক খন্দকারের লিখিত প্রশ্নের জবাবে হাসিনা জানান, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য ঢাকায় অবস্থিত চিনা দূতাবাসের মাধ্যমে, ২০২১ সালের মার্চ মাসে, সফট লোন দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয় চিনের কাছে।
তিনি বলেন, ‘এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য, ২০২০ সালের অগাস্টে, চিন সরকারের আর্থিক সহায়তায় সমীক্ষা সম্পন্ন করে প্রায় ৮২১০ কোটি টাকার পিডিপিপি বা প্রফেশনাল ডিপ্লোমা ইন পাবলিক প্রকিউরমেন্ট দেওয়া হয়েছিল ইআরডিতে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইআরডির বৈদেশিক সাহায্য অনুসন্ধান কমিটির ৫১তম সভায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের স্বার্থে সহজ শর্তের ঋণ পেতে চিন সরকারকে অনুরোধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
বাংলাদেশের সংসদে হাসিনা জানান, পিডিপিপির বিষয়ে চিন সরকার একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন গত বছরের ৫ মার্চে পাঠায় ইআরডিতে। তাতে বড় আকারের ভূমি উন্নয়ন ও ব্যবহার, নৌ-চলাচল ব্যবস্থার উন্নয়নের বিষয়ে অধিকতর বিশ্লেষণ না থাকা এবং বড় আকারের বিনিয়োগের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। চিনের সরকার প্রকল্পটির পর্যায়ভিত্তিক বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আরও বিশদ সমীক্ষার পরামর্শ দেয় বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাওয়ার চায়না কর্তৃপক্ষ চিনের সরকারের নির্দেশ মোতাবেক গত বছরের ২৭ অগাস্ট ফিজিবিলিটি স্টাডি রিপোর্ট সংশোধনের প্রস্তাব পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’