দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ পড়শি দেশ পাকিস্থানের বেহাল অর্থনীতির হাল ফেরাতে, জাল মুদ্রার সমস্যার মোকাবিলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামাবাদ। আর এর জন্য, নোট বাতিলের আশ্রয় নিতে চলেছে স্টেট ব্যাঙ্ক অব পাকিস্তান বা এসবিপি। এসবিপি-র গভর্নর জামিল আহমেদ জানিয়েছেন, পাকিস্তানি নোট জাল করা আটকাতে, উন্নত সুরক্ষা বৈশিষ্ট্য-সহ নতুন সিরিজের নোট চালু করা হবে। নতুন নোটগুলির বৈশিষ্টসমূহের হাত ধরে দেশের মুদ্রা ব্যবস্থা আধুনিক হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। তিনি আরও জানিয়েছেন, পাকিস্তানের আর্থিক ব্যবস্থার প্রতি, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলি এবং পাক নাগরিকদের যাতে আস্থা তৈরি হয়, সেই লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ করতে চলেছে ইসলামাবাদ।
২০০৫ সাল থেকে নতুন সিরিজের ব্যাঙ্কনোট চালু করেছিল স্টেট ব্যাঙ্ক অব পাকিস্তান। বর্তমানে পাকিস্তানের বাজারে ২০ টাকা, ৫০ টাকা, ১০০ টাকা, ৫০০ টাকা, ১০০০ টাকা এবং ৫০০০ টাকার মুদ্রা নোট রয়েছে। এছাড়া, ২০২২-এর অগস্টে, পাকিস্তানের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে স্মারক মুদ্রা হিসেবে একটি ৭৫ টাকার নোটও প্রকাশ করা হয়েছিল। এই নোটগুলিতেও জাল হওয়া রুখতে বেশ কিছু সুরক্ষাগত বৈশিষ্ট্য ছিল।
যেমন, ৫০০০ টাকার নোটে একটি নিরাপত্তা থ্রেড রয়েছে। অতিবেগুনী রশ্মীর আলোর নীচে এই থ্রেডটি থেকে হলুদ এবং নীল ফ্লুরোসেন্ট আলো প্রতিফলিত হয়। ১০০০ টাকার নোটে, টাকার অঙ্কটি এমবেড করা আছে। এছাড়া, নোটগুলি ছাপা হয় ইন্ট্যাগলিও প্রক্রিয়ায়। স্ক্যানিং বা ফটোকপির মাধ্যমে যাতে এর প্রতিলিপি তৈরি না করা যায়, তার জন্য অ্যান্টি-স্ক্যান এবং অ্যান্টি-কপি লাইন প্যাটার্নও রয়েছে। এর পাশাপাশি, পাকিস্তানে রয়েছে ক্লিন নোট নীতি। এই নীতিতে নোটগুলি ময়লা হয়ে গেলে বা ছিঁড়ে গেলে সেগুলি বাজার থেকে সরিয়ে নিয়ে নষ্ট করে পেলা হয়।
এতকিছুর পরও অবশ্য জাল নোটের সমস্যার সমাধান হয়নি। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের অর্থনীতির এই বেহাল দশার অন্যতম কারণ কালো টাকার অবৈধ ব্যবহার। উচ্চ মূল্যের নোট রয়েছে বলে কালো টাকার সমস্যা আরও বেশি। এই অবস্থায় জাল মুদ্রা এবং করালো টাকার ব্যবহার আটকাতেই নতুন নোট জারি করা হবে। তবে, ভারতের মতো একদিনে নয়, ধীরে ধীরে পুরোনো নোটগুলি বদলে নতুন নোট জারি করা হবে বলে জানিয়েছে এসবিপি। নোট বদলের প্রক্রিয়াটি মসৃণ হবে বলেই আশা করছে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ। জনসাধারণের এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রমের ব্যাঘাত কমানোর জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা নিচ্ছে সেই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। বিমুদ্রাকরণের আগে, নতুন নোটের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে সরকারকে, এমনটাই জানিয়েছেন সেই দেশের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।