দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: পাকিস্তানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন আরও এক ধাপ বাড়ল। ইসলামাবাদের অন্যতম প্রধান প্রতিপক্ষ বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)-কে বিদেশি জঙ্গি সংগঠনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করল ওয়াশিংটন। শুধু বিএলএ নয়, তাদের সহযোগী ‘মাজিদ ব্রিগেড’-কেও দেওয়া হয়েছে জঙ্গি তকমা। উল্লেখযোগ্যভাবে, দীর্ঘদিন ধরে স্বাধীন বালোচিস্তান গঠনের লক্ষ্যে সশস্ত্র আন্দোলন চালিয়ে আসছে বালোচ আর্মি, যাদের দমনে হিমশিম খাচ্ছে পাকিস্তান সেনা। আর ঠিক পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময়ই বালোচদের বিরুদ্ধে এই ঘোষণা করল আমেরিকা।দিনকয়েক আগেই পহেলগাঁওয়ে হামলাকারী দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টকে জঙ্গি তকমা দিয়েছিল ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। উল্লেখ্য, এই টিআরএফের জন্য বরাবর ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে পাকিস্তান। তাই তাদের জঙ্গি তকমা দেওয়ায় ইসলামাবাদ যে খুশি হয়নি সেকথা বলাই বাহুল্য। এই ঘটনার কয়েকদিন পরেই আমেরিকা সফরে গিয়েছেন পাক সেনাপ্রধান। তাঁর সফর চলাকালীনই আমেরিকা জানিয়ে দিল, এবার থেকে স্বাধীনতাকামী বালোচরাও থাকবে জঙ্গিদের তালিকায়। অর্থাৎ কূটনৈতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে খুশি করে দিল আমেরিকা।
প্রসঙ্গত, পাক-প্রেমে মজে রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের উপর শুল্ক চাপানোর পরেই পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সেরে ফেলে আমেরিকা। ট্রাম্প জানান, পাকিস্তানে যে তেলের ভাণ্ডার রয়েছে তার উন্নতিসাধনের জন্য দু’দেশ একসঙ্গে কাজ করবে। পাকিস্তানের শুল্ক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ১৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। পরপর দু’মাসে দু’বার আমেরিকা সফরে গিয়েছেন পাক সেনাপ্রধান। এবার পাক সেনার ‘শত্রু’ বালোচ আর্মিকেও জঙ্গি তকমা দিল ট্রাম্প প্রশাসন।
উল্লেখ্য, পাকিস্তান থেকে আলাদা হতে চেয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে বালোচিস্তানের জনগণ। পাক সেনার অকথ্য নির্যাতনের প্রতিবাদে সেখানে তৈরি হয়েছে সশস্ত্র সংগঠন বালোচ লিবারেশন আর্মি। এই বাহিনীকে দমন করতে গোটা বালোচিস্তানে অত্যাচারের সীমা পার করেছে পাকসেনা। কিন্তু বালোচদের স্বাধীনতা সংগ্রামকে সটান জঙ্গি কার্যকলাপ বলে দাগিয়ে দিল আমেরিকা। এছাড়াও দিনকয়েক আগে বালোচিস্তান থেকে অশোধিত তেল নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে আমেরিকার চুক্তি রয়েছে। তাই বিএলএকে জঙ্গি তকমা দেওয়ার নেপথ্যে পাক প্রেম ছাড়াও রয়েছে মার্কিন ব্যবসায়িক স্বার্থ।