বনকর্তারা হাতে কলমে প্রশিক্ষণের ব্যাবস্থা করেছেন হস্তিকন্যা’ পার্বতী বরুয়াকে এনে। তবে মাহুত ও পাতাওয়ালাদের পার্বতীর বার্তা, ‘শাসন করার থেকে বেশি করে দিতে হবে সোহাগ। না হলে, আদতে বন্য ওই পোষা হাতিদের বন্যতা যখন তখন চাগাড় দিতে পারে। ঘটতে পারে বড় বিপদ।’
তাহলে কি সাত জনের মৃত্যুর পিছনে মাহুতদের তরফেই কোন ত্রুটি ছিল? বন দপ্তরের এক কর্তা জানিয়েছেন, মাহুতদের মৃত্যু ও পাতাওয়ালাদের আক্রমণের ঘটনার তদন্তে একাধিক কারণ উঠে এসেছে। প্রথমত, অভিজ্ঞতার অভাবে পোষা পুরুষ হাতিদের ‘মস্তি’তে থাকার বিষয়টি বুঝতে পারেননি মাহুতরা। ওই সময়ে জোর করে বনসুরক্ষার কাজে লাগাতে গিয়ে বিপদ ডেকে এনেছেন তাঁরা।
দ্বিতীয়ত, কয়েকজন বদমেজাজি মাহুত ও পাতাওয়ালা দিনের পর দিন দুর্ব্যবহার, অতিরিক্ত শাসন করায় ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রমণ করেছে কুনকিরা। তৃতীয় কারণ হলো, নেশায় আসক্ত মাহুত বা পাতাওয়ালারা দেখভাল করতে এসে কুনকিদের বিপদের মুখে পড়েছেন। জলদাপাড়া বনবিভাগের ডিএফও প্রবীণ কাসোয়ান বলেন, ‘মাহুত ও পাতাওয়ালাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। অসমের গৌরীপুর রাজবাড়ীর কন্যা পার্বতী বিশ্বের প্রথম ও এশিয়ার একমাত্র মহিলা মাহুত ও হস্তি বিশেষজ্ঞ। পোশাকি নাম পার্বতী হলেও ওয়ার্ল্ড লাইফ ফোরামে ‘কুইন অফ এলিফ্যান্ট’ নামেই বিখ্যাত তিনি। আশা করছি হাতেকলমে ওঁর শিক্ষা কাজে লাগবে।’
মঙ্গলবার পার্বতী তিনি বলেন, ‘হাতিদের মুড বুঝতে পারাটাই প্রথম কাজ। ওদের আত্মীয় না ভাবতে পারলে অনুশাসনে রাখা খুবই দুষ্কর। হাতি স্বাভাবিক আচরণ করছে, নাকি সে অসুস্থ, তা চোখ দিয়ে বিচার করা শিখতে হবে।’ ২০১৯ সালে কোভিডের সময়ে মাহুত ও পাতাওয়ালাদের প্রশিক্ষণে ছেদ পড়ে।
বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে তারপরেও কিছুদিন ঝুঁকি নিতে চাননি খোদ পার্বতী বরুয়া। এরই মধ্যে জলদাপাড়ায় পর পর মাহুতের মৃত্যু, পাতাওয়ালার জখমের ঘটনায় টনক নড়ে বনদপ্তদের। হাতি পরিচালনার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার ঘাটতি দূর করতে সেই কারণে প্রশিক্ষণের জন্য আনা হয়েছে পার্বতীকে।