দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ পশ্চিম মেদিনীপুরে পেটাই পরোটাকে নিয়ে চলছে আস্ত এক মেলা। রাজ্যে প্রতি বছরের মতো এই বছরও পরোটা উৎসব আয়োজিত হতে চলেছে সবংয়ে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং ব্লকের ৬ নম্বর চাউলকুঁড়ি অঞ্চলের নেধুয়াতে উত্তরপল্লি হরিমন্দির উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর আয়োজিত হয় এই পেটাই পরোটা উৎসব। কথিত রয়েছে, নেধুয়া গ্রামের এই হরিমন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা হারু বৈরাগী। মন্দিরটি প্রায় ২৫০ বছরের বেশি পুরনো। মহামারীর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এবং গ্রামে গ্রামে হরিনাম সংকীর্তন করার জন্য এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করা হয়।
এলাকার পেশায় শিক্ষক কানাই চাঁদ পাল জানান, প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ বছর আগে এই গ্রামের বাসিন্দা হারু বৈরাগী তীর্থে চলে যান। প্রায় এক বছর পর হঠাৎ তীর্থ থেকে ফিরে এসে নিজ হাতে মাটি দিয়ে ইট তৈরি করে তা পুড়িয়ে এই মন্দিরটির প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এরপর থেকে প্রত্যেক বছরই ভীম একাদশীর দিন এই হরিমন্দিরে পুজো হয়।
এলাকার অপর বাসিন্দা জানান, যেহেতু এই পুজো একাদশীতে হয় তাই এলাকার মানুষ অন্নপ্রসাদ খান না। তাই গ্রামের মানুষ এই পেটাই পরোটা উৎসব করে থাকেন। এই মন্দির প্রাঙ্গনে শুধু সবং নয় পটাশপুর, ভগবানপুর, নারায়নগড়, পিংলা, ময়না সহ দূর দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে এই উৎসবে অংশ নেওয়ার জন্য। পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা জানান, প্রত্যেক বছর প্রায় আট থেকে ১০ ক্যুইন্টল ময়দার পেটাই পরোটা তৈরি করা হয়। সেই পরোটা ওই এলাকা থেকে প্রায় পাঁচ-ছয় হাজার মানুষ খান।
গ্রামের মানুষজন এক হয়ে এই রীতিটি চালু রেখেছে। গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলে এই উৎসব করে থাকেন। নিজেরাই এই জন্য অর্থ দেন তাঁরা। সবমিলিয়ে বছরের পর বছর ধরে যে নিয়ম চলে এসেছে তা অব্যাহত রাখছেন তাঁরা। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে আনন্দে মেতে ওঠেন গোটা গ্রামের বাসিন্দারা। এই ধারা আগামী প্রজন্মও অব্যাহত রাখবে বলে আশাবাদী গ্রামের বাসিন্দারা।