দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রীর সভার প্রাক্কালেই সংগঠনে বেনজির খেয়োখেয়ি! অস্বস্তিতে বারাসত জেলা বিজেপি। সূত্রের খবর, আসন্ন লোকসভা ভোটে বারাসত কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হতে চাইছেন জেলার কমবেশি ১০ জন নেতৃত্ব। ইতিমধ্যে তাঁরা আবেদনপত্রও জমা দিয়েছেন। এছাড়াও রয়েছেন চিকিৎসক-সহ অনেক বিশিষ্টজন। সবমিলিয়ে প্রার্থী হতে চেয়ে জেলাতেই ১৬ জন আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। বারাসতে প্রধানমন্ত্রীর সভার আগের এই ঘটনায় চরম বিড়ম্বনায় পড়েছে বারাসত সাংগঠনিক জেলা বিজেপি।
লোকসভা ভোটে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কাছেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জেলা কলকাতা লাগোয়া উত্তর ২৪ পরগনা। এখানে আসন সংখ্যা ৫টি। এই জেলারই সন্দেশখালি ইস্যুকে সামনে রেখে লোকসভা ভোট বৈতরণী পার করতে চাইছে বিরোধী শিবির। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও সন্দেশখালি নিয়ে সভা করবেন জেলা সদর বারাসতে। কিন্তু বিজেপির নিচুস্তরে দেখা যাচ্ছে ঠিক এর উলটো চিত্র। এর আগেও বারাসত সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি পরিবর্তনের পর গেরুয়া শিবিরে গোষ্ঠী কোন্দল সামনে এসেছিল। সাংগঠনিক জেলার অন্তর্গত ২৯টি মণ্ডলের বেশিরভাগ নেতৃত্ব প্রকাশ্যে রাস্তায় নেমে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিল। বারাসত সাংগঠনিক জেলা পার্টি অফিসে তালা লাগিয়ে রাস্তা অবরোধ করেছিলেন তারা। প্রকাশ্যে গেরুয়া শিবিরের দুপক্ষকে সংঘর্ষে জড়াতেও দেখা গিয়েছিল। এর পর লোকসভা ভোটের আগে সামনে এল জেলা নেতৃত্বদের প্রার্থী হতে চাওয়ার হিড়িক। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে বারাসত সাংগঠনিক জেলা বিজেপির তাবড় তাবড় প্রায় ১০জন নেতানেত্রী প্রার্থী হতে চেয়ে জেলাতে আবেদন জানিয়েছেন। অনেক নেতৃত্ব আবার নিজেরা মুখ লজ্জার খাতিরে আবেদন জানাতে না পেরে চিকিৎসক-সহ সমাজের বিশিষ্ট জনেদের প্রার্থী করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁদের দিয়ে আবেদনপত্র জমা করিয়েছেন। বারাসত লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হতে চাওয়ার এই সংখ্যাটা জেলাতেই সব মিলিয়ে দাঁড়িয়েছেন ১৬ জন। এছাড়াও রাজ্য বিজেপির কাছেও বারাসত লোকসভার প্রার্থী হতে চেয়ে আবেদন জমা পড়েছে। জেলা বিজেপির এক নেতৃত্ব জানিয়েছেন, প্রার্থী নির্বাচনের জন্য দিল্লির তরফে ৫-৭টি বেসরকারি সংস্থাকে সমীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা স্ক্রুটিনি করে সরাসরি কেন্দ্রীয় বিজেপির কাছেই রিপোর্ট দিচ্ছে। ফলে লোকসভা ভোটে যে জেলা সংগঠনকে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না এতেও ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে নেতৃত্বের অন্দরে।
পাশাপাশি জেলা নেতৃত্বের একটি অংশ বারাসতে বহিরাগত প্রার্থী দেওয়ার আশঙ্কা করছেন। তাই এই গোষ্ঠী রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে বহিরাগত বা সেলিব্রিটি প্রার্থী না করানোর বার্তা দিতে পরিকল্পনা করেই প্রার্থী হতে চেয়ে আবেদন জমা করিয়েছে বলেই সূত্রের খবর। ফলে বারাসত লোকসভায় বিজেপির প্রার্থী ঠিক হওয়ার পর প্রকাশ্যে ক্ষোভ বিক্ষোভের আশঙ্কা করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। যদিও এ বিষয়ে বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তথা বারাসত সাংগঠনিক জেলা বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তাপস মিত্র জানান, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে আমাদের দল চলে। তাই সবাই প্রার্থী হতে চেয়ে আবেদন করতে পারেন। দল যাঁকে প্রার্থী ঠিক করবেন, তাঁকে জেতানোর জন্য সকলেই ঝাঁপিয়ে পড়বে।