দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ পুরুলিয়া মানেই লাল মাটির রাঙা পথ,ছোট ছোট টিলা,ঝর্না আর সুদূর প্রসারিত শাল,শিমুল,মহুয়া। সেই পুরুলিয়ার ঝালদা শহর অনন্য প্রকৃতি নিয়ে আপনাকে আহ্বান করছে। আপনার হাতে সময় নেই কিন্তু মন চাইছে সবুজ প্রকৃতির কোলে আদরে দু'দিন কাটাবেন। হাওড়া থেকে যেকোনো ট্রেনে ঝালদা স্টেশনে আগে পৌঁছে যান। হোটেল ঠিক করে দু'দিন বিশ্রামের মাঝে ঘুরে নেবেন -
১) কুকি ড্যাম - ঝালদা থেকে জারগো মোড় ১১ কিমি। জারগো মোড়ের আধ কিলোমিটার আগে বাঁ-দিকের কাঁচারাস্তা ধরে এগিয়ে গেলেই কুকি ড্যাম পাওয়া যাবে। রুপাই নদীর জলের ধারাকে প্রাকৃতিকভাবে সঞ্চিত করে অনেকগুলি ওয়াটার গেটের সাহায্যে সেচখালের ব্যবস্থা হয়েছে। রুপাই নদী উত্তর দিকে অবস্থিত মরগুমা বাঁধের কাছ থেকে প্রবাহিত হয়ে আসছে। এই বাঁধটির পাড়ে-পাড়ে একঘণ্টায় ঘুরে আসা যায়। পশ্চিম দিক দিয়ে ওয়াটার গেটের সাহায্যে জল প্রবাহিত হচ্ছে। সে দিকের বড় গ্রামটির নাম কুকি। তার নামেই বাঁধের নাম কুকি ড্যাম। নদীর পাড়ে পাহাড়ের নিচের গ্রামটির নাম পাহাড়ডিহ। আর রুপাই নদী পার হয়ে পূর্ব দিকের গ্রাম অরাহরা। বাঁধে বক সহ অজস্র পাখির মালা বসে। মন ভরে উঠবে ওদের সাথে এক বেলা কাটালে। কিন্তু পরের দিনটা পুরো রাখবেন জারগো গ্রামের জন্য। অনন্ত অনুপম জারগো গ্রাম আসলে একটুকরো ভারতীয় গ্রামীন সভ্যতা।
২) জারগো - এমন প্রত্যন্ত স্থানে ভারতীয়রা পৌঁছতে পারেননি, সেখানে অবলীলাক্রমে পৌঁছে গিয়েছেন ইউরোপীয়রা। পুরুলিয়া জেলার সবুজ বন-পাহাড়ঘেরা লালমাটির দেশ জারগো সম্বন্ধে এ রকম উক্তিই প্রযোজ্য। রাঁচি থেকে খ্রিস্টান মিশনারিরা এসে এই জারগো গ্রামে প্রথম খ্রিস্টধর্ম প্রচার করেছিলেন। পরে তারা এখানে একটি চার্চ নির্মাণ করেন। জারগো চার্চ হল জেলার প্রথম চার্চ। পুরুলিয়া শহরের প্রাচীন জি ই এল চার্চ ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে তৈরি হওয়ার অনেক আগেই এটি তৈরি হয়েছিল। জারগো গ্রামটি খুব সুন্দর। মাটি লাল হলেও চারিদিকে চাষবাসের কারণে সবুজ। চারিদিকে চাষবাসের কারণে সবুজ। জারগো স্কুলের সামনেই রয়েছে জারগো পাহাড়। জঙ্গলঘেরা পাকদণ্ডী পথ বেয়ে এই পাহাড়ের মাথায় ওঠা যায়। ভালুক, শিয়াল, সাপ, বেজি, হনুমানের আস্তানা এই জঙ্গল। উপরে উঠলে দেখা যায়, অনেক ছোট-বড় টিলা জারগোকে ঘিরে রেখেছে। দূরে দেখা যায়, অযোধ্যা পাহাড়ের রেঞ্জ ও রাঁচি হিলস। পাহাড়ের পাদদেশে মন্দির। জারগো থেকে হাঁটা পথে ঘুরে আসুন সুবর্নরেখা নদী। সুবর্ণরেখা নদীর ধারটি বেশ সুন্দর। নদীর পাড়ে সুন্দর মন্দির রয়েছে। কথিত আছে, মন্দিরটি শ্রীচৈতন্যের স্মৃতিবিজড়িত। এখানে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বিশ্রাম নিয়েছিলেন। ১৩৯৯ সনের ২৪ কার্তিক, মঙ্গলবার তিনি ঝাড়খণ্ড যাওয়ার সময় এই ঘাটে তর্পণ করেছিলেন। মন্দিরের পিছনে কালীমন্দির ও শ্মশান আছে। এ ছাড়াও রেলব্রিজের পশ্চিম পাড়ে পাথরের উপর চৈতন্য দেবের পায়ের ছাপ। সুবর্ণরেখা নদীর ধারটি বেশ সুন্দর। নদীর পাড়ে সুন্দর মন্দির রয়েছে। v
যাওয়া ও থাকা - পুরুলিয়া বা ঝালদা স্টেশন থেকে সহজেই পৌঁছে যাবেন আপনার হোটেলে। কয়েকটা ভালো হোটেল হলো -
আমন্ত্রণ লজ, স্টেশন রোড, দূরভাষ: ০৩২৫৪ ২৫৫৬৬৬, চলভাষ: ৮০০১৫৫৭২৫১। শ্রীমতী লজ, স্টেশন রোড, চলভাষ: ৯৭৩২০১৭০৭১।
এবার সবুজের দেশে বেরিয়ে পড়ুন বিশ্রামের জন্য।