দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ ভূগোল পড়া সেই অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ আপনার ঘরের পাশেই আছে। বাড়ির ছেলে-মেয়েদের নিয়ে সকালে গিয়ে বিকেলে ফিরে আসতে পারেন। শিক্ষার্থীরা মুহূর্তে ফিরে যাবে ভূগোলের দেশে।
অশ্বক্ষুরাকৃতি মানে ঘোড়ার খুরের মত আকার যে হ্রদের। ভুগোল বই ঘাঁটলে যার হদিশ মেলে। এমনই এক হ্রদ রয়েছে কলকাতার একেবারে কাছে। কিন্তু অনেকেই জানেন না সেকথা। খুব বেশি দূরেও নয় সেই জায়গাটি। ট্রেনে করেই কয়েক ঘণ্টার সফরে সেখানে পৌঁছে যাওয়া যায়। সপ্তাহান্তে বাড়ির ছোটদের নিয়ে বেড়িয়ে আসতে পারেন সেখান থেকে। তাদেরও একটা নতুন অভিজ্ঞতা হবে। বইয়ের পাতার বাইরে চাক্ষুস করতে পারবে কেমন হয় অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গোবরডাঙার কাছে পাঁচপোতা থেকে যেতে হয় সেখানে। গোবরডাঙার স্টেশন থেকে অটো পাওয়া যায়। তাতে করেই পাঁচপোতা যাওয়া যায়। পাঁচপোতার বাওরে রয়েছে সেই অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ। ভারতের বৃহত্তম অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ। আগে ইছামতি নদীর অংশ ছিল এই হ্রদ। এই হ্রদে নৌকা ভ্রমণের সুযোগও রয়েছে। অনায়াসে নৌকায় বিহার করা যায় এখানে। ভাড়াও খুব বেশি নেন না মাঝি ভাইরা।
শুধু হ্রদ নয়,এখানে আছে আরও ঘোরার জায়গা। এই পাঁচপোতায় আবার রয়েছে রামকৃষ্ণ আশ্রম। বেড়ি রামকৃষ্ণ মিশন রয়েছে এখানে। রামকৃষ্ণ মিশনে একটা সুন্দর পার্কও রয়েছে। সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। শিশুদের খেলার জায়গাও রয়েছে। সুপুরি আর নারকেল গাছে ভিড় রয়েছে। এখানে একটি শিশুদের স্কুলও রয়েছে। এখানে রয়েছে জমিদারবাড়িও। সেখানে ভেতরে ঢুকে দেখা যায়। এই জমিদার বাড়ি ঘুরে দেখলে সেই পুরনো আমলে চলে যাবে মন। সাবেকিয়ানার ছোঁয়া নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে এই জমিদারবাড়িটি। বেশ আনন্দে কাটবে একটা দিন।
জানাযায়, এখানকার মন্দির দেখেই নাকি রানী রাসমণি উৎফুল্ল হয়েছিলেন। তাই তিনি এই মন্দিরের আদলেই তৈরি করেন দক্ষিণেশ্বরের মন্দির। জমিদারবাড়ির পাশেই রয়েছে একটি কালী মন্দির। জমিদার নিজেই এই মন্দির তৈরি করেছিলেন। এই মন্দিরের আদলেই নাকি দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে তৈরি হয়েছিল। এমনই মনে করেন এখানকার মানুষ। শোনা যায় রানি রাসমনি এখান দিয়ে যাওয়ার সময় এই মন্দিরটি দেখে খুব প্রসন্ন হয়েছিলেন। এবং এই মন্দির তৈরির ৩১ বছর পর দক্ষিণেশ্বরের কালী মন্দিরটি তৈরি হয়েছিল। তাতে এই মন্দিরের চাপ রয়েছে। সেই থেকেই এই কথা মনে করা হয়ে থাকে। আগে ফোনে জানিয়ে দিল এই মন্দিরে মধ্যাহ্নে প্রসাদ পেতে পারেন। তাই সকালে গোবরডাঙ্গা স্টেশন থেকে অটো নিয়ে চলে যান পাঁচপোতা হ্রদ দেখতে। সারাদিন ঘুরে দুপুরে মন্দিরে প্রসাদ নিয়ে বিকেলে ফিরে আসুন বাড়িতে। একদিনের এই ভ্রমণ অনেকদিন মনে থাকবে।