দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: অতিরিক্ত ওজন অনেকের কাছেই দুশ্চিন্তাসম। অনেকেই বুঝতে পারেননা, কীভাবে ওজন কমাবেন। অনেকেই ভাবেন,নানান ওষুধে খেলে দ্রুত ওজন কমবে কিন্তু এইভাবে ওজন কমালে নানান পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভবনা থাকে। আর এই উপকার কখনও দীর্ঘস্থায়ী হয়না, বরংচ সাময়িক এই উপকারে শারীরিক নানান ক্ষতি হয়। নিজের অজান্তেই শরীরে বাসা বাঁধে জটিল রোগ। তাই চটজলদি মেদ কমাতে খুব ভারী শরীরচর্চা বা কঠিন ডায়েট করারও প্রয়োজন নেই। মেনে চলুন কয়েকটি নিয়ম,
১) ভোরে ঘুম থেকে ওঠাঃ কম ঘুম যেমন শরীরে ক্লান্তি বাড়াবে, তেমনই অতিরিক্ত ঘুমও কিন্তু নানা সমস্যা ডেকে আনবে। রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমই জরুরি। তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়া ও সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করতে পারলে, ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবেই। ব্রিটেনের ‘ন্যাশনাল স্লিপিং ফাউন্ডেশন’-এর একটি গবেষণা জানাচ্ছে, বেশি ঘুমোলে বিপাকহার কমে যায়, রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই ওজন বাড়তে শুরু করে।
২) ঘুম থেকে উঠেই জল বা ডিটক্স পানীয়ঃ ঘুম থেকে ওঠার পরেই উষ্ণ জল খাওয়ার অভ্যাস করতে পারলে, বিপাকপ্রক্রিয়া যেমন উন্নত হবে, তেমনই গ্যাস-অম্বলের সমস্যাও কমবে। অনেক পুষ্টিবিদ মনে করেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে সবচেয়ে আগে জরুরি ডিটক্স পানীয়। ছোট ছোট করে ফল কেটে তা সারা রাত জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে খাওয়া যেতে পারে। অথবা মৌরি-মেথি ভেজানো জল, ত্রিফলা চূর্ণের জল বা উষ্ণ জলে লেবুর রস মিশিয়েও খেতে পারেন। সবই ডিটক্স পানীয়।
৩) প্রোটিন-সমৃদ্ধ প্রাতরাশঃ প্রাতরাশে এমন খাবার খেতে হবে যাতে কার্বোহাইড্রেটের মাত্রা কম, প্রোটিন বেশি। ডিমের সাদা অংশ, সব্জি দিয়ে অমলেট, মশলা ওট্স, নারকেলের দুধ দিয়ে চিয়া পুডিং, অঙ্কুরিত ছোলার স্যালাড খেলে প্রোটিনের মাত্রা বজায় থাকবে। সকাল সকাল সাদা পাউরুটি বা লুচি-পরোটা না খেয়ে বরং এই সব খাবার খেলে ওজন তাড়াতাড়ি কমবে।
৪) হাঁটাহাঁটি বা যোগাসনঃ সকালে উঠে উষ্ণ জল বা ডিটক্স পানীয় খেয়ে শরীরচর্চা সেরে নিতে পারলে খুবই ভাল হয়। হাঁটাহাঁটি, দৌড়নো, স্পট জগিং বা যোগাসন করতে পারলে খুবই ভাল হয়। সেই সঙ্গেই জরুরি শ্বাসের ব্যায়াম। ফিটনেস প্রশিক্ষক অনুপ আচার্যের পরামর্শ, সকালে প্রাণায়াম, কপালভাতি করলে সারা দিন শরীর তরতাজা থাকবে।
৫) দুপুরের খাওয়ার আগে স্ন্যাক্সঃ মিড-মর্নিং মিলই খুবই জরুরি। পুষ্টিবিদেরাই বলেন, প্রাতরাশ ও দুপুরের খাওয়ার মাঝে হালকা কিছু খেতেই হবে। এই সময়টায় ভাজাভুজি খেয়ে ফেললেই মুশকিল। খেতে হবে মরসুমি কোনও ফল, অথবা স্মুদি বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে। কলা ও কাঠবাদাম মিক্সিতে পিষে নিয়ে অল্প নুন ও মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
৬) মিষ্টি একদম বাদঃ চা বা কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে দুধ এবং চিনি একদম বন্ধ করে দিতে হবে। চা খেলে লিকার বা গ্রিন টি, কফির নেশা থাকলে দুধ-চিনি ছাড়া কালো কফি খেতে হবে। ময়দার বিস্কুট খাওয়া একদমই চলবে না। চা বা কফির সঙ্গে বিস্কুট খেতে হলে ক্রিমক্র্যাকার বিস্কুট অথবা থিন অ্যারারুট বিস্কুট খাওয়া যেতে পারে। শুকনো খোলায় ভাজা ছোলাও চলবে।
৭) স্ক্রিন টাইম কমানঃ সকাল সকাল মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি কম করলেই ভাল। এতে মনের চাপ বাড়ে, পাশাপাশি ‘বিঞ্জ ইটিং’-এর প্রবণতা তৈরি হয়। অফিসে গিয়ে ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে কাজ করতেই হয়, তাই সে ক্ষেত্রেও বিরতি নিয়ে কাজ করা জরুরি।