দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: চুলের বাঁধন খুললেই যেন সিল্কের মতো পিঠে নেমে আসত সোজা, ঝকঝকে চুল। স্ট্রেটনারের ছোঁয়াও লাগেনি কখনও—স্বাভাবিক ভাবেই স্ট্রেট চুলের গর্ব ছিল আপনার। বহুদিন ধরে যে চুল নিয়ে নিজের সৌন্দর্যকে আলাদা করে তুলে ধরতেন, আজ হঠাৎই তার রূপ বদলে যেতে শুরু করেছে। কারও কারও ক্ষেত্রে চুল কুঁকড়ে যাচ্ছে, তো কারও চুলে দেখা দিচ্ছে হালকা ঢেউ। এমন পরিবর্তন কি লক্ষ্য করছেন আপনিও? হঠাৎ করে চুলের গঠনে এই ভিন্নতা কেন আসছে? কী কী কারণ এর পেছনে দায়ী হতে পারে?
হরমোনের বদল- হরমোনের ওঠানামার সঙ্গে চুলের গঠন পরিবর্তনের সম্পর্ক রয়েছে। চুলের ফলিকলগুলি আপনার শরীরের রাসায়নিক গঠনের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বদলায়। বয়ঃসন্ধি, গর্ভাবস্থা, মেনোপজ়, এমনকি গর্ভনিরোধক পিল খেলেও চুলের ধরন বদলে যেতে পারে। গর্ভাবস্থায় অনেকের চুল ঘন, ঢেউ খেলানো হয়ে যায়। মূলত ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরনের বৃদ্ধির কারণে এটি হয়। সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর গঠন আবার পরিবর্তিত হতে পারে। একই ভাবে মেনোপজ়ের সময় ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমে যায় এবং টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বেড়ে যায়। তখন আবার চুল পাতলা হয়ে যেতে পারে। ধরন বদলে যেতে পারে।
বয়স বৃদ্ধি- হঠাৎ করে চুলের ধরন পাল্টায় না। শারীরিক এবং মানসিক একাধিক কারণ থাকে নেপথ্যে। তার মধ্যে অতি সাধারণ ঘটনা, বয়স বৃদ্ধিও একটি কারণ। অনেকের বয়স বাড়তে থাকলে স্ট্রেট চুল কুঁকড়ে যেতে থাকে। বিশেষ করে ২০ কিংবা ৩০ বছর বয়সের কোঠার শেষের দিকে পৌঁছে এই ঘটনা দেখা যায়। মসৃণ চুলগুলিতে ঢেউ খেলে যেতে পারে।
তাপ এবং যন্ত্র- ফ্ল্যাট আয়রনিং করার জন্য অনেকেই স্ট্রেটনার ব্যবহার করেন। সাময়িক ভাবে স্ট্রেট হয়ে যায় বটে, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চুলের ফলিকলের আকৃতি বদলে যেতে পারে। অতিরিক্ত ব্লিচিংয়ের মতো রাসায়নিক ট্রিটমেন্টও চুলের ধরন পালটে দেয়।
আবহাওয়া পরিবর্তন- হাওয়া বদল করলেও চুলের কাঠামোগত পরিবর্তন হতে পারে। কম আর্দ্র জায়গা থেকে বেশি আর্দ্র জায়গায় গেলে চুলের গঠন পালটে যায়। এমনকি জলের মানও গুরুত্বপূর্ণ। খনিজ পদার্থে ভরা শক্ত জল চুলের কিউটিকলকে রুক্ষ করে তুলতে পারে। নরম জলেও পালটে যেতে পারে চুল।
মানসিক চাপ- অতিরিক্ত মানসিক চাপে চুল যেমন ঝরে পড়ে যায়, তেমনই চুলের পরিবর্তন হতে পারে। তা সে পড়ে যাওয়া, পাতলা হয়ে যাওয়া, অথবা নতুন আকৃতি পাওয়া— সবই হতে পারে।
শারীরিক রোগ- অটোইমিউন রোগ, থাইরয়েড, অ্যালোপেশিয়া এরিয়াটার মতো রোগ চুলের গঠনের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। যাঁরা কেমোথেরাপি করেছেন, তাঁদের চুল আগের চেয়ে বেশি কোঁকড়া বা ঘন হয়ে যায়।