দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ লোকসভা ভোটের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে মন্ত্রীদের এখন থেকেই ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, মন্ত্রীদের আরও বেশি করে জনসংযোগ করতে হবে। পৌঁছতে হবে মানুষের কাছে। কোনও কাজ ফেলে রাখলে চলবে না। যে সব কাজ এখনও বাকি রয়েছে, সেগুলি যাতে সময়ের মধ্যে শেষ হয়, তা ভালো করে দেখতে হবে।
এবারের লোকসভা ভোটে তৃণমূলের আসন সংখ্যা ২০১৯-এর তুলনায় অনেকটা বাড়লেও বহু জায়গায় ভোটের নিরিখে বিজেপি প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছেন। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে অনেক জায়গায় তৃণমূলের ফল অপেক্ষাকৃত খারাপ হয়েছে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও তৃণমূলের ফল আশানুরূপ হয়নি। তৃণমূলের দলীয় বৈঠকে তা নিয়ে আগেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
তা থেকে আরও একধাপ এগিয়ে বুধবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে লোকসভা ভোটের ক্ষত মেরামতের জন্য মন্ত্রীদের স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। সূত্রের খবর, এদিন রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'যেখানে আমাদের ফল ভালো হয়েছে, সেই সাফল্য যাতে ধরে রাখা যায়, তার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আর যে সব জায়গায় ফল খারাপ হয়েছে, সেখানে আরও বেশি করে জনসংযোগে মন দিতে হবে। কেন এরকমটা হলো, কোথায় আমাদের দুর্বলতা, সেটা খতিয়ে দেখতে হবে।'
সামনেই রয়েছে মহরম এবং রথযাত্রা। এই সব ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে রাজ্যে যাতে কোনওরকম অশান্তি না হয়, তার জন্যও মন্ত্রীদের এদিন কার্যত সাবধান করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার জন্য মন্ত্রীদের এলাকায় থাকায় পরামর্শ দিয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, লোকসভা ভোটে বড় জয়ের পর দলের নেতা-মন্ত্রীরা যাতে আত্মসন্তুষ্টিতে না ভোগেন, তার জন্যই এদিন ঘুরিয়ে তাঁদেরকে সতর্ক করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তার কারণ, ২০২৬-এ বিধানসভা ভোট। তার আগে দলের কোথায় কোথায় দুর্বলতা রয়েছে, তা চিহ্নিত করে মেরামত করে নিতে চাইছেন তিনি। তার জন্য দলীয় সংগঠনকে ঢেলে সাজার পাশাপাশি প্রশাসনিক ক্ষেত্রেও বড়সড় রদবল ঘটানো হতে পারে।
ইতিমধ্যে এক ডজনেরও বেশি অফিসারকে বিভিন্ন পদে বদলি করা হয়েছে। খুব শিগগিরই মন্ত্রিসভায় রদবদল ঘটতে পারে। রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর বিধায়ক পদ ছেড়ে দিয়েছেন। ফলে সেচমন্ত্রীর পদটি খালি পড়ে রয়েছে। রাজ্যের আর এক প্রাক্তন মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে মারা যাওয়ার পরে তাঁর জায়গায় আর নতুন করে কাউকে মন্ত্রী করা হয়নি। সেই জায়গায় কোনও নতুন মুখকে আনা হবে কি না, সে দিকেও নজর রয়েছে সব পক্ষের।