লন্ডন : জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের বদলা নিতে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে ‘খুন’ করার পরিকল্পনা করেছিল। সেই অপরাধেই এক শিখ ব্যক্তিকে ৯ বছরের জন্য কারাদণ্ড দিল ব্রিটেনের আদালত। তবে এখনই জেলে থাকার মতো মানসিক সুস্থতা নেই তার। সেই জন্য আপাতত কড়া নিরপত্তার মধ্যেই মানসিক হাসপাতালে বন্দি রাখা হবে তাকে। প্রসঙ্গত, রাজদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়েছিল এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত শিখ ব্যক্তির নাম যশবন্ত সিং চেইল। ২০২১ সালের ২৫ ডিসেম্বর ব্রিটিশ রাজপ্রাসাদের প্রাচীর টপকে ঢুকে পড়েছিল সে। তির ধনুক নিয়ে রানিকে খুন করার ছক ছিল তার। ঘটনার সময়ে প্রাসাদেই ছিলেন ব্রিটেনের তৎকালীন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তবে নিরাপত্তারক্ষীদের তৎপরতায় ধরা পড়ে যশবন্ত। সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পরে জেরার মুখে সে জানায়, ২০১৮ সালে ভারতে এসে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানতে পারে। তার পর থেকেই এই হত্যাকাণ্ডের বদলা নেওয়াকেই জীবনে মূল লক্ষ্য হিসাবে ধরে নেয় ২১ বছর বয়সি যশবন্ত। একটি ভিডিও বানিয়ে পরিচিতদের পাঠায় সে। কীভাবে রানিকে খুন করে জালিয়ানওয়ালাবাগ কাণ্ডের বদলা নেবে, সেই নিয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা ছিল ওই ভিডিওতে। তার পরেই রানিকে খুন করতে উইন্ডসর কাসলে পৌঁছে যায় সে।
ধরা পড়ার পর রাজদ্রোহিতার অভিযোগ দায়ের হয় যশবন্তের বিরুদ্ধে। ৪০ বছরে প্রথমবার এই অভিযোগ আনা হয় ব্রিটেনের কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের আদালতে দোষী প্রমাণিত হন যশবন্ত। তবে আদালতের তরফে বলা হয়, ঘটনার সময়ে মানসিকভাবে সুস্থ ছিলেন অভিযুক্ত। কিন্তু পরবর্তীকালে মানসিক সমস্যা শুরু হয় তার। ফলে এখনই জেলে পাঠানো হবে না যশবন্তকে। সুস্থ হলে কারাগারে রাখা হবে তাঁকে।
প্রসঙ্গত, ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল অমৃতসরের কাছে জালিয়ানওয়ালাবাগে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছিল। রাওলাট আইনেরপ্রতিবাদে এবং সইফুদ্দিন কিচলু ও সত্যপালের গ্রেফতারি প্রতিবাদ জানিয়ে সেদিন জমায়েত হয়েছিল। আর সেখানেই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজিনাল্ড ডায়ার গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। মোট ১৬৫০ রাউন্ড গুলি চলেছিল ওইদিন। নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছিল জনতাকে। প্রায় দেড় হাজারেও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। আহত হন আরও ১২০০ জন।