দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ হিন্দু ধর্মে গঙ্গা দশেরার দিনটি কে ত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে এই দিনে গঙ্গা স্নান করলে না না পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।এবছর ৩০মে ২০২৩ এ গঙ্গা দশেরা পালন করা হচ্ছে। পুরান মতে, রাজা ভগীরথ পূর্বপুরুষদের সন্তুষ্টির জন্য তার কঠোর তপস্যা দিয়ে মা গঙ্গাকে পৃথিবীতে আসতে বাধ্য করেছিলেন, যেদিন মা গঙ্গা পৃথিবীতে অবতরণ করেছিলেন সেই দিনটি গঙ্গা দশেরা নামে পরিচিত হয়। এই কারণেই গঙ্গা দশেরার দিনে গঙ্গা স্নানের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে, এটি কেবল নিজের পাপ ধুয়েই দেয় না, গঙ্গার ঘাটে শ্রাদ্ধ করলে সাত প্রজন্মের পূর্বপুরুষদের আত্মাকে শান্তি দেয়। আসুন জেনে নিই গঙ্গা দশেরার গল্প।
জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষের গঙ্গা দশমী তিথি ২৯ মে সকাল ১১ ৪৯ টা থেকে শুরু হবে এবং ৩০ মে ২০২৩ রাত ০১ ০৭ টা পর্যন্ত চলবে। স্নানের সময় - সকাল ৪.০৩ মিনিট - সকাল ৪.৪৩ মিনিট
চর (সাধারণ) - সকাল ৮.৫১।মিঃ - ১০.৩৫।মিঃ
লাভ (উন্নতি) - সকাল ১০.৩৫মিঃ - ১২.১৯ মিঃ
অমৃত (সেরা) - ১২.১৯ মিঃ - ২.০২ মিঃ
অভিজিৎ মুহুর্তা - ১১.৫১ মিঃ - ১২.৪৬ মিঃ
গঙ্গা দশেরার গল্প
পুরান অনুসারে, একবার মহারাজা সাগর একটি ব্যাপক অশ্বমেধ যজ্ঞ করেছিলেন। সেই সময় ইন্দ্র রাজা সাগরের বলি ঘোড়া অপহরণ করেন। এই ঘটনার পর রাজার ৬০ হাজার ছেলে ঘোড়ার খোঁজ শুরু করে। সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও ঘোড়াটি পাওয়া গেল না, তারপর সবাই পটল লোকে খুঁজতে লাগল। পৃথিবী খননের সময় কপিল মুনি তপস্যা করছিলেন। ইন্দ্র অশ্বমেধ যজ্ঞের ঘোড়া চুরি করে কপিল মুনির আশ্রমে বেঁধে রেখেছিলেন। কপিল মুনির কাছে রাজা সাগরের ঘোড়া চরছে দেখে লোকেরা 'চোর-চোর' বলে চিৎকার করতে থাকে, এতে মহর্ষি কপিলের ধ্যান ভেঙে যায়। মহর্ষি তার জ্বলন্ত চোখ খুললেই মহারাজা সাগরের ৬০ হাজার পুত্র সহ সমস্ত প্রজাও পুড়ে ছাই হয়ে যায়। মহারাজা সাগরের অশ্বমেধ যজ্ঞও অসম্পূর্ণ থেকে যায়। কথিত আছে, সেই সময় ঋষি অগস্ত্য পৃথিবীর সমস্ত জল পান করেছিলেন। যার কারণে পৃথিবীতে এক ফোঁটা জলও অবশিষ্ট ছিল না, এমনিভাবে তাঁর পুত্রদের আত্মার শান্তির জন্য মহারাজা সাগর মা গঙ্গাকে পৃথিবীতে আনার চেষ্টা করেছিলেন, যা সফল হতে পারেনি। এরপর নিজের বংশের রাজা ভগীরথ ব্রহ্মাকে খুশি করার জন্য তপস্যা করেন। ব্রহ্মা দেব রাজা ভগীরথকে বর চাইতে বললে , তিনি পৃথিবীতে মা গঙ্গাকে অবতারণা করার জন্য বর চান।ব্রহ্মা দেব বললেন, এই পৃথিবী গঙ্গার ওজন সামলাতে পারবে না। গঙ্গার গতি নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা একমাত্র ভগবান শঙ্করেরই আছে, এরপর শিবের কাছ থেকে এই সমস্যা সমাধানের জন্য রাজা ভগীরথ তাঁর জন্য কঠোর তপস্যা করেছিলেন। ভগবান ভোলেনাথ মা গঙ্গাকে তাঁর জটায় স্থান দিয়েছিলেন এবং তারপর মা গঙ্গাকে পৃথিবীতে প্রবাহিত করেছিলেন। এই কারণে মহারাজা সাগরের ষাট হাজার পুত্র বলিদানের ফলে তারা মোক্ষ লাভ করেন।