Festival and celebrations

11 months ago

Durga Puja 2023: দু’কামরার ছোট্ট ফ্ল্যাটে রুপান্তরকামীরা চালাচ্ছেন মাতৃবন্দনা

Durga Idol (File Picture)
Durga Idol (File Picture)

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ কেন্দ্র ফান্ড বন্ধ করে দিলে তাঁদের ছাড়তে হয় পুনর্বাসন কেন্দ্র। কালিকাপুরের পুরনো ঠিকানায় কোনোরকমে থেকে এর মধ্যে দিয়েই নিজেদের লড়াই করছেন রুপান্তরকামীরা। এই ছোট্ট ঘরের মধ্যেই চলছে তাঁদের পুজো প্রস্তুতি। কালিকাপুরে বহুতল বাড়িতে রূপান্তরকামীদের জন‌্য যে পুনর্বাসন কেন্দ্র চালু করা হয়েছিল, সেখানে একসঙ্গে থাকতেন ৪০ জন রূপান্তরকামী। সেখানে তাঁদের স্বর্নিভর করে তোলার প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। এবং সেখানেই গত তিন বছর ধরে মাতৃ আরাধনা করতেন তাঁরা। আগে অবশ‌্য গোখেল রোডে তাঁদের পুজো হত। কিন্তু কেন্দ্র অর্থ বন্ধ করে দেওয়ার পর এই পুনর্বাসন কেন্দ্র ছাড়তে হয়। তবে হাল ছাড়েননি গরিমা গৃহের সদস‌্যরা। পাশেই একটি ছোট ফ্ল‌্যাট ভাড়া নিয়ে নিজেরাই স্বনির্ভর হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এবছর ছয় বছরে পা দেবে তাঁদের পুজো। এখানে পুজোর বিশেষত্ব হল, এখানে কোনো দুর্গাপ্রতিমা থাকে না। এখানে পুজো করা হয় অর্ধনারীশ্বর হরগৌরীকে। পুজোর ন'দিন নিরামিষ খেয়ে নবরাত্রি পালন করেন রুপান্তরকামীরা। ওই কদিন তাঁরা মেঝেতে ঘুমোন। এখানে প্রতিমাও নিয়ে আসা হয় না, গত পুজোয় গরিমা গৃহের জন‌্য রূপান্তরকামী এক শিল্পী নিজের হাতে হরগৌরীর প্রতিমা তৈরি করে দিয়েছেন। সেই প্রতিমায় পুজো হচ্ছে এবারও। বৈষ্ণব মতে চলা এই পুজোতে বাইরে থেকে আনা হয় না কোনো পুরোহিত। নিজেদের সম্প্রদায়ের সদস‌্যরাই পুরোহিতের দায়িত্ব নিয়ে থাকেন। ভোগ রান্না ও পরিবেশন সব নিজেরাই করে থাকেন। এমনকি নিয়ম মেনে কুমারী পুজোর কুমারী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন ফুটপাত ও যৌনকর্মীদের সন্তানরা। 

পুজোর দিনগুলিতে খেতে আসেন এলাকার গরিব, ফুটপাতের বাসিন্দারা। রুপান্তরকামী মানুষজন ছাড়াও এই পুজোতে অংশগ্রহণ করেন যৌনকর্মী, সমকামী, অ‌্যাসিড আক্রান্তরাও। এছাড়াও পুজো দেখতে আসেন বিশিষ্ট লোকজন ও বিদেশের প্রতিনিধিরা। এই পুজোমণ্ডপে এসে গত বছর বিবাহ করেছিলেন বিদেশি যুগল। 

গরিমা গৃহের ডিরেক্টর রূপান্তরকামী রঞ্জিতা সিনহার কথায়, ‘‘গরিমা গৃহে পুরনো বাড়িটি অনেক বড় ছিল। সেখানে ৩০ থেকে ৪০ জনের মতো আবাসিক থাকত। কিন্তু কেন্দ্র অর্থ বন্ধ করে দেওয়ায় সেই বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। এখন দু’কামরার ছোট্ট ফ্ল‌্যাটে ন’জন সদস‌্য ঠাসাঠাসি করে থাকছেন। পুজোর ক’দিন বাইরে থেকেও আমাদের অনেক ভাইবোন আসেন। তাঁদের কোথায় থাকার জায়গা দেব সেটাই এখন চিন্তার। আসলে এখনও পুজোতে আমাদের মতো মানুষদের গুরুত্ব দেওয়া হয় না। আমরা মণ্ডপে গিয়ে আনন্দ করতে পারি না। আগে আমার নিজের বাড়ি গোখেল রোডে পুজো হত। সকলকে নিয়ে আনন্দ করতে গরিমা গৃহে পুজোর আয়োজন করা হয়। আমাদের পুজোয় রাস্তায় নেমে চাঁদা তোলা হয় না। আত্মীয়-স্বজন শুভাকাঙ্ক্ষীরা সহায়তা করেন।

You might also like!