দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ লন্ডনের দুর্গাপুজোর ইতিহাসে সবথেকে প্রাচীন দুর্গোৎসব সম্ভবত ‘ক্যামডেন দুর্গোৎসব’। ‘সুইস স্কটিস লাইব্রেরির’ অলিন্দে এবছর ষাটতম দুর্গোৎসবের মাতৃপ্রতিমা সেজে উঠছে আটপৌরে সাবেকিয়ানায়।
ছোট-বড়ো মিলিয়ে এদেশের চৌষট্টি পুজোর অধিকাংশই হল উইকেন্ড দুর্গাপুজো, তবুও সময়ের সঙ্গে পা মিলিয়ে বাঙালি রীতি, পঞ্জিকা মেনে মিত্তলদের পুজো আজও নিজস্ব বৈচিত্র্যে অমলিন। প্রতিবারের মতো খুঁটি পুজো দিয়ে শুরু করে ষষ্ঠী থেকে দশমী – এখানকার পুজোর পাঁচদিন হবে বেশ জমজমাট। এখানে এলে মায়ের বোধন, অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ, সিঁদুরখেলা – সবই মনের অলিন্দে নতুন করে এঁকে দেয় ফেলে আসা দেশজ সেই সব স্মৃতি।
এখানকার পুজো স্পেশাল হল খাওয়াদাওয়া! মেনুতে ঝালমুড়ি থেকে শুরু হয়ে পুঁটিরাম, দিলখোশ, বসন্ত কেবিন, কফি হাউসের আড্ডার সঙ্গে বাঙালি-অবাঙালি মিলিয়ে মিশিয়ে সারা ভারতের একাধিক খাবারের পসড়া থাকছে প্রত্যেক ফুড স্টল গুলোতে।এবছর ক্যামেডেনের দুর্গোৎসবের বিশেষ আকর্ষণ হলো ‘দুগ্গা দুগ্গা’। অর্থাৎ দুর্গাপুজোর সামগ্রী দিয়ে সাজানো থাকবে সমস্ত পুজো মণ্ডপ; দুর্গা কখনও কিশোরী, কখনও রমণী। আবার বিদায়বেলায় তাঁর নাম নিয়ে যাত্রা করলে আসন্ন বিপদ যায় কেটে। আজও অনেক বাঙালির ঘরে এমন পৌরাণিক বিশ্বাসগুলোই শিল্পেরচিহ্নরূপে ছত্রে ছত্রে স্থান পেয়েছে মণ্ডপের আনাচে-কানাচে। শুধু তাই নয়, ক্যামডেন পুজো উদ্যোক্তারা পাবলিশ করেছে তাদের ‘থিম সং’, যা সত্যিই অনন্য উদ্যোগ ।
ক্যামেডেন দুর্গাপুজো বিশ্বের একাধিক মিডিয়ার নজর টানে প্রতিবার, মিত্তল পরিবারের সদস্যরা সপরিবারে হাজির থাকেন মায়ের আগমনে। এছাড়া প্রত্যেক দিনের সন্ধ্যার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে নৃত্য-গীতি আলেখ্য, বর্ষা আসে বসন্ত, আর সপ্তকের সুরের শেষে ঘোষিত হবে শারদ সুন্দরীর সম্মান।
এবারের ৬০ তম বর্ষপূর্তির কারনে ক্যামডেন দুর্গোৎসবের বিশেষ আকর্ষণ ট্রাম্পেল পিয়ার থেকে জাহাজে করে প্রতিমা নিয়ে টেমসের উপরে রিভার কার্নিভাল সঙ্গে থাকছে মায়ের বিদায় বেলায় বরণ ও সিঁদুরখেলা। বলাই বাহুল্য,রিভার কার্নিভাল বাঙালির মনে রেড রোডের কার্নিভালের সেই আবেগঘন অনুভূতি দিতে চলেছে এ বছর। সব মিলিয়ে জমজমাট হতে চলেছে এ বছরের ক্যামডেন দুর্গোৎসব।